যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী জেন্ট্রি বিচ বৃহস্পতিবার ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

হাইগ্রাউন্ড হোল্ডিংসের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বিচ জানান, তার কোম্পানি ইতোমধ্যে বাংলাদেশে একাধিক খাতে বিনিয়োগে করেছে এবং জ্বালানি, অর্থনীতি ও অন্যান্য খাতে আরো বিনিয়োগ করতে চায়।

বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে উল্লেখ করে বিচ প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা দুর্দান্ত কাজ করেছেন।’’

আরো পড়ুন:

কোটা নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ৩ সিদ্ধান্ত

নারী অধিকার লঙ্ঘনে যুক্ত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা 

তিনি আরো বলেন, ‘‘এই দেশে আরো বিনিয়োগ আসার এখনই সময়। আমরা এখানে থাকতে পেরে উচ্ছ্বসিত।’’ 

জেন্ট্রি বিচ প্যারামাউন্ট ইউএসএ-এর চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, তার কোম্পানি কম খরচের সামাজিক আবাসন, অ্যারোস্পেস ও প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।

প্রধান উপদেষ্টা এ সময় বিচকে বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ এ সময়ে’ আপনাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য স্বাগত জানাচ্ছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে আরো বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।’’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘‘বাংলাদেশ এখন ব্যবসার জন্য প্রস্তুত। বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আমরা আমাদের ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছি।’’

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের গভীর ও অগভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানসহ বিভিন্ন খাতে আরো মার্কিন বিনিয়োগের প্রয়োজন।

আফ্রিকায় বিনিয়োগকারী এবং পাকিস্তানে বিনিয়োগের পরিকল্পনাকারী বিচ বলেন, ‘‘মার্কিন বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে শ্রমিকদের মজুরি বাড়বে। আমরা বাংলাদেশকে আবারো মহান করে তুলবো।’’

বৈঠকে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন। বাসস

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

যখন টাকা খাওয়া যাবে, তখন শিক্ষক নিয়োগ দেবেন?: ইবি শিবির সভাপতি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন, “ইবিতে উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার পরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাদের সার্কুলারে যারা প্রভাষক হয়েছিলেন, তারা এখন অধ্যাপক হচ্ছেন। কিন্তু ইবি প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে শুধু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ছাড়া কোনো পদক্ষেপ গ্রহণনি।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বিভাগও আছে, যেখানে শিক্ষক মাত্র দুইজন। শিক্ষক নিয়োগে কেনো এত দেরি হচ্ছে আপনাদের? সুবিধাজনক সময়ে যখন টাকা খাওয়া যাবে, তখন শিক্ষক নিয়োগ দেবেন? এই সমস্ত তালবাহানা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলবে না।”

রবিবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টায় নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

মাহমুদুল হাসান বলেন, “ছাত্র সংসদ গঠনে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বলার পরেও আইনের দোহাই দিয়ে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কিন্তু ইবির পরে প্রতিষ্ঠিত অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আপনারা কেনো পারছেন না? এই ভয়ে যে, চেয়ার চলে যাবে? শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করলে তারাই আপনাদের চেয়ারে রাখবে। আর না হয় হাসিনাকে যেভাবে সরিয়েছে, আপনাদেরও সেভাবে সরাবে।”

তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের ১ বছরে পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কার চেখে পড়েনি। আমরা ভেবেছিলাম জুলাইয়ের পরে আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে না, আমরা কথা বলার অধিকার পাব, সনদপত্র তুলতে ভোগান্তি হবে না, চিকিৎসা কেন্দ্র সংস্কার হবে, ক্যাম্পাস ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হবে, গুম হওয়া ওয়ালীউল্লাহ-মুকাদ্দাস ভাইকে ফেরত পাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে পারেনি।”

তিনি আরো বলেন, “এর মধ্য দিয়ে প্রশাসন জুলাই বিপ্লবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। ক্যাম্পাস কতটা অনিরাপদ হলে আমাদের ভাইয়ের লাশ পুকুরে পাওয়া যায়। কিন্তু এর নির্ভরযোগ্য কোনো ফুটেজ বা তথ্য প্রশাসন দিতে পারেনি।”

নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। অন্যথায় তারা প্রশাসনকে আসসালামু আলাইকুম বলতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সংগঠনটি। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

এ সময় তারা ‘যদি না হয় সংস্কার, এই প্রশাসন কি দরকার’, ‘পুকুরে লাশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘সাজিদ হত্যার তদন্ত, করতে হবে করতে হবে’, ‘অনলাইন পেমেন্ট চালু কর, ভোগান্তি দূর কর’, ‘কর্মকর্তা জমিদার, লাঞ্চ করতে দিন পার’, ‘ইবিতে ছাত্র সংসদ, চালু কর করতে হবে’, ‘ইকসু নিয়ে টালবাহানা, আর না আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের হাতে হল ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়ার পানি ও খাবারের মান নিশ্চিত করতে হবে, স্বৈরশাসনের সময় বর্ধিত ও অযৌক্তিক ফি কমাতে হবে, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে, ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান চাই ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ