এশিয়ান টাইগার ফান্ডকে বেমেয়াদীতে রূপান্তরের আবেদন বাতিল
Published: 12th, February 2025 GMT
পুঁজিবাজারে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে তালিকাভুক্ত মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ড এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ডকে বেমেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডে রূপান্তর করার আবেদন নামঞ্জুর করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিএসইসির ৯৪১তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে, বিধি মোতাবেক পর্যাপ্ত ইউনিটহোল্ডারের অনুমোদন না থাকা ও মেয়াদপূর্তির ১৫০ দিন আগে ফান্ডের ট্রাস্টির সিদ্ধান্ত গৃহীত না হওয়া এবং সময়ের মধ্যে কমিশন ও এক্সচেঞ্জকে অবহিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ ফান্ডকে বেমেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডে রূপান্তরের আবেদন নামঞ্জুরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ডটি ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর আকার ৬১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এ ফান্ডের মেয়াদ ১০ বছর, যা শেষের দিকে। সাধারণত মেয়াদ শেষে প্রতিটি মিউচুয়াল ফান্ডের অবসায়ন ঘটে থাকে। তবে, দেশে বিদ্যমান আইন অনুসারে, শর্তসাপেক্ষে অবসায়নের পরিবর্তে মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডকে বেমেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডে রূপান্তরের সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে ফান্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময় আগে এর ইউনিটহোল্ডারদের নিয়ে সভা করতে হয়। দুই-তৃতীয়াংশ ইউনিটহোল্ডার ফান্ডটিকে বেমেয়াদী ফান্ডে রূপান্তরের সম্মতি দিলে এবং ফান্ডের ট্রাস্টির সায় থাকলে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বিএসইসির কাছে আবেদন করতে হয়। কিন্তু, এ ফান্ডকে বেমেয়াদী ফান্ডে রূপান্তরের আবেদনের ক্ষেত্রে সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানটি শর্ত পূরণ করতে পারেনি।
এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ডকে বেমেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডে রূপান্তর করার আবেদন করে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
ঢাকা/এনটি/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি
শেয়ার সূচকের নিয়মিত পতনের মূল কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই সঙ্গে যেসব শেয়ারের অস্বাভাবিক বিক্রির চাপ দেখা যাচ্ছে, বাজার তদারকির মাধ্যমে সেসব শেয়ার চিহ্নিত করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।
দেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক নিম্নমুখী প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। গতকাল মঙ্গলবার এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে তাৎক্ষণিক কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এ ছাড়া সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব দেলোয়ার হোসেন, পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের প্রতিনিধি ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার সিদ্ধান্ত হয়, বিনিয়োগকারীদের জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় টক শো ও বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বিআইসিএম ও বিএএসএম পুঁজিবাজার-বিষয়ক শিক্ষণীয় ভিডিও তৈরি করবে। ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজার সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা প্রচার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা হবে।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানির শেয়ার অফলোড করা, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করা এবং টেক্সটাইল ও ওষুধ খাতের দেশী লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হবে।
যেসব কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করার জন্য আকর্ষণীয় করছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ সীমিত করা এবং পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে দেশের আর্থিক খাতের অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হবে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য করছাড়ের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। এর মধ্যে লভ্যাংশ আয়ের ওপর করছাড় এবং পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের ওপর বিশেষ করছাড়ের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।