পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে বসন্তবরণ ১৪৩১। ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ, নাচ-গান ও রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একসঙ্গে বসন্তের আনন্দ ভাগাভাগি করেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় এই বর্ণাঢ্য আয়োজন।
প্রতিবছরের মতো এবারও সিএসই অনুষদের উদ্যোগে বসন্তবরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়। সকাল ১০টায় শুরু হয় বসন্ত শোভাযাত্রা, যেখানে শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে, ফুলের সাজে সজ্জিত হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। এরপর দিনব্যাপী ঘুড়ি ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের দেশীয় পিঠার স্বাদ নেওয়ার পাশাপাশি রঙিন ঘুড়ি উড়িয়ে উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এবারই প্রথম সিএসই অনুষদের আয়োজনে পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়; যা
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
বিকেলে বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। নাচ-গান ও আবৃত্তির চমৎকার পরিবেশনা ক্যাম্পাসে এক অনন্য উৎসবের আবহ সৃষ্টি করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। সার্বিক সহযোগিতায় ছিল সিএসই ক্লাব।
উৎসবে অংশ নেওয়া সিএসই অনুষদের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সাদিয়া ফারজানা মৌলি বলেন, ‘‘প্রতিবারই বসন্তবরণে লোকজ সংস্কৃতির উপস্থাপন থাকে। পুঁথিপাঠ তার অন্যতম। এবারের পুঁথিপাঠে ‘কমলা সুন্দরী’র আখ্যান তুলে ধরা হয়েছে, যা দারুণ লেগেছে!’’
মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী রিজভী বলেন, ‘পবিপ্রবি ক্যাম্পাস আবারও তার পুরোনো উৎসবের রঙে ফিরেছে!’
একই অনুষদের শিক্ষার্থী তায়েসুর বলেন, ‘এত সুন্দরভাবে সাজানো পবিপ্রবি আমি এবারই প্রথম দেখলাম!’
দিনব্যাপী চলা এ উৎসবে দেশীয় ঐতিহ্যের গান, নাচ, আবৃত্তি এবং নানা রঙের আয়োজন বসন্তকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
ষষ্ঠ সেমিস্টার, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দুমকি, পটুয়াখালী
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।
রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।
অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা।
বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো।
বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া।
আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না।
বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’
বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা।
উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।
ঢাকা/টিপু