Samakal:
2025-08-01@18:23:57 GMT

বসনে একুশ

Published: 18th, February 2025 GMT

বসনে একুশ

‘আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরেথরে শহরের পথে কেমন নিবিড় হয়ে। কখনো মিছিলে কখনো-বা একা হেঁটে যেতে যেতে মনে হয়– ফুল নয়, ওরা শহীদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ, স্মৃতিগন্ধে ভরপুর।
একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রঙ।’-শামসুর রাহমান  
একুশ মানেই আমাদের ভাষার অধিকার, আত্মত্যাগ আর গৌরবের ইতিহাস। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতি মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য বুকের তাজা রক্ত রাজপথে ঢেলে দিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ আরও অনেক অকুতোভয় বীরের জীবনের বিনিময়ে আমরা বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছি। এ আত্মত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি এখন শুধু বাংলাদেশের নয়, সারাবিশ্বের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি আমাদের জন্য গর্বের। কারণ ভাষার জন্য এমন লড়াই পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। 
একুশ কেবল একটি দিন নয়, এটি আমাদের অস্তিত্ব, সংস্কৃতি, পরিচয় আর অহংকারের প্রতীক। শোক, শ্রদ্ধা ও গৌরবের এ দিনটি পালনে নানা আয়োজন চলে প্রতি বছর। এর পাশাপাশি পোশাকেও একুশের চেতনার স্পর্শ লেগেছে অনেকদিন ধরেই। একসময় সাদা শাড়ি-পোশাকের সঙ্গে কালো ব্যাজ ধারণ করে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার রীতি প্রচলন ছিল। ধীরে ধীরে কালো শাড়ি-পোশাক যুক্ত হয়েছে এ রীতিতে। 
মানুষের একুশের চেতনা ধারণের মূল্যবোধকে সম্মান জানিয়ে প্রতিবছরই বিভিন্ন নকশার পোশাক নিয়ে আসে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো। অমর একুশের এ দিনটিতে পোশাকের ক্ষেত্রে মূলত সাদা রং প্রাধান্য পায়। তাই পোশাকের রং নির্বাচন করার ক্ষেত্রেও ফ্যাশন হাউসগুলো সাদা-কালো এ দুটি রং বেছে নেয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা ভিন্নতা আনতে সাদা-কালোর পাশাপাশি একুশের পোশাকে এখন লাল, সবুজ, ছাই রঙের ব্যবহারও দেখা যায়। ডিজাইনাররা একুশের পোশাকে গান-কবিতা যেমন তুলে ধরেন, তেমনি কখনও বর্ণমালা, কখনও শহীদ মিনার, কখনও বা মনের মাধুরী মিশিয়ে আল্পনাও আঁকেন। 
ফ্যাশন ডিজাইনাররা জানান, দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো সবসময় চেষ্টা করে হ্যান্ডপেইন্ট ডিজাইনের মাধ্যমে একুশের পোশাকে কিছুটা ভিন্নতা আনতে। একুশের পোশাকে নারীকে সাদা শাড়ির সঙ্গে কালো পাড় কিংবা সাদা সালোয়ার, ওড়না আর কালো রঙের কামিজ চোখে পড়ে। অন্যদিকে ছেলেদের টি-শার্ট থেকে শুরু করে শার্ট, পাঞ্জাবি আর পায়জামাতেও দেখা যায় এ সাদা আর কালো রঙের খেলা। পাঞ্জাবিতে কখনও সম্পূর্ণ কালো আবার কখনও সম্পূর্ণ সাদা রঙের কাজ দেখা যায়। টি-শার্টে থাকে বাংলা বিভিন্ন অক্ষরের ছাপ। প্রতিবছরের মতো এ বছরও দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো মহান ভাষার মাসকে উৎসবের রূপ দিতে সচেতনভাবে কাজ করছে। যেখানে পোশাকের আবরণে জড়িয়ে আছে মায়ের ভাষার আবেগ। 
দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘সাদাকালো’ বরাবরই বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে একুশের নকশা নিয়ে কাজ করে। এবারের ডিজাইনে ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে একুশের গান– ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’-এর চরণগুলো ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের মানচিত্রের অভ্যন্তরে। শাড়ি, পাঞ্জাবি, কামিজ এবং অন্যান্য ফিউশন পোশাক, যা আধুনিকতার ছোঁয়ায় ঐতিহ্যকে নতুনভাবে উপস্থাপন করছে। সাদাকালোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজহারুল হক আজাদ বলেন, ভাষা আমাদের পরিচয়ের অংশ। একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু শোকের দিন নয়, আমাদের গর্বের প্রতীক। তাই আমরা চেয়েছি আমাদের পোশাকের মাধ্যমে সেই চেতনাকে উদযাপন করতে। 
ফ্যাশন হাউস ‘রঙ বাংলাদেশ’ তাদের একুশের পোশাকের ডিজাইনে নিয়ে এসেছে ভাষার মাসের চেতনার আবহকে। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস জানান, তাদের এবারের একুশের থিম  ‘বাংলা ভাষা ও বাংলা বর্ণমালা’।
তিনি বলেন, ‘হাফসিল্ক, বিভিন্ন  ধরনের কটন, ভয়েল কাপড়, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, কাটিং-সুইং ও এমব্রয়ডারির কাজে তৈরি হয়েছে পোশাকের অলংকরণ। প্রতিটি পোশাকের ডিজাইনকে নান্দনিক মাত্রা দেওয়ার চেষ্টায় পোশাকে রয়েছে একুশের চেতনার নানা অনুষঙ্গের সন্নিবেশ। উৎসবের  পরিপূর্ণতার জন্য রয়েছে যুগল আর পরিবারের সবার জন্য একই থিমের পোশাক।’
‘বিশ্বরঙ’-এর ডিজাইনার এবং স্বত্বাধিকারী বিপ্লব সাহা জানান, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, যা আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই দিনের চেতনাকে গভীরভাবে ফুটিয়ে তুলতে আমরা ৩০ বছর ধরে একুশের পোশাকে মাতৃভাষা ও বর্ণমালার মোটিফ ধরে রেখেছি; যা ভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।’
তিনি বলেন, ‘পোশাকের রং নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমরা সাদা-কালো তো রাখছিই, তার পাশাপাশি ২০২৪-এর আন্দোলনে শহীদ হওয়া অকুতোভয় তরুণদের সম্মানার্থে তাদের রক্তের প্রতীক লাল রংটাকেও প্রাধান্য দিয়েছি।’ v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এক শ এক শ র প শ ক ড জ ইন র র এক শ র র ড জ ইন র জন য আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

রাজধানীর বাংলা মোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শিশুসাহিত্যিক অমিত কুমার কুণ্ডুর শিশুতোষ ছড়ার বই ‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব হয়েছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল বইটির প্রকাশনা সংস্থা পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড।

শিক্ষাবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন সাহিত্যিক রফিকুর রশীদ। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দন্ত্যস রওশন, লোকসংস্কৃতিবিদ তপন বাগচী, শিশুসাহিত্যিক সঙ্গীতা ইমাম, কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার। অনুষ্ঠানে বক্তারা বইটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন:

নদী স্মৃতিনির্ভর সংকলন গ্রন্থ ‘আমার নদী’ প্রকাশিত 

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

প্রধান অতিথির আলোচনায় রফিকুর রশীদ বলেন, “১২৪টি ফলের ওপর লেখা এই বইয়ের ছড়াগুলো কেবল পাঠকের রসাস্বাদনই করাবে না, শিশু শিক্ষামূলক এই ছড়াগুলো রসোত্তীর্ণও বটে।”

তিনি দেশের প্রকাশকদের অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়ে বলেন,“প্রকাশকদের বেশি বেশি এরকম প্রকাশনা উৎসব আয়োজন করা উচিত।”

বইটির ব্যতিক্রমী আকৃতির দিকে ইঙ্গিত করে দন্ত্যস রওশন বলেন, “পাঠক তৈরির প্রয়াসেই পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এমন ক্ষুদ্রাকৃতির ও নতুন নতুন সাইজের বইয়ের ধারণা বাজারে আনছে। এটা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।”

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বলেন, “শিক্ষার দুটো দিক রয়েছ।একটি হলো ট্রাডিশনাল, যা আমরা পড়েছি, আপনারাও পড়েন। আরেকটি  হলো জাঁ জ্যাক রুশোর পদ্ধতি। তিনি বলেছে, প্রকৃতির সঙ্গে শেখা।রবীন্দ্রনাথ যা বিশ্বভারতীর মাধ্যমে করিয়ে দেখিয়েছেন।অমিত কুমার কুণ্ডুর ছড়ার বইটি সে রকমই।এর মাধ্যমে প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করবে শিশুরা ও ওরা শিখবে। এরকম বই প্রকাশ করার জন্য প্রকাশকে ধন্যবাদ। আমাদের প্রকাশকদের এ ধরনের বই বেশি বেশি করতে হবে।”

কাঁচামিঠে ফলের ছড়া বইটির পাতায় পাতায় দেশি-বিদেশি বিচিত্র ফলের পরিচয়, পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা নান্দনিক অলংকরণে ছন্দে-ছড়ায় তুলে ধরা হয়েছে। বইটি থেকে ছড়া আবৃত্তি করে বাচিক শিল্পী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা।

অনুষ্ঠান শেষে ছিল মৌসুমী ফল দিয়ে অতিথিদের অ্যাপায়নের ব্যবস্থা।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চুয়েটে দিনভর তারুণ্যের ‘তর্ক-যুদ্ধ’
  • ‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
  • কর্মীদের মতের মূল্য নাই, জিএম কা‌দের দল চালান স্ত্রীর কথায় 
  • ব্রেন হ্যাক: স্বাভাবিক হওয়ার পাঁচ উপায় জেনে নিন
  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন