জগদীশ বসুর নামে করা ভবনের নাম পাল্টানো কল্পনার বাইরে: শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 26th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ কয়েকটি হলের নাম পরিবর্তনের ঘটনায় তিনি মর্মাহত। তিনি বলেন, ‘জগদীশচন্দ্র বসুর নামে করা ভবনের নাম পাল্টানো হবে, এটা কল্পনার বাইরে। আমি আশা করব, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীরা মিলে এর প্রতিকার করবে।’
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা এ কথা বলেন। এবারের সমাবর্তনে ৪ হাজার ৮২৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দুজনকে ‘চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক’ এবং ২৮ জনকে ‘ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক’ প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুনসুইডেনের ফুল-ফান্ডেড ৭৫০ স্কলারশিপ, জীবনযাপন খরচ, ভ্রমণ ব্যয়ের সঙ্গে নানা সুযোগ১৩ ঘণ্টা আগেশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে জগদীশ বসুর গল্প শুনেছি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে জগদীশচন্দ্র বসু, তাঁর মতো বিজ্ঞানীর নামে করা ভবন-স্থাপনা ছিল, সেগুলোর নাম পরিবর্তন করেছে। আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্রের নামে স্থাপনা ছিল। তাঁর পাশাপাশি আরও কয়েকজনের নামে করা স্থাপনার নামও বদলানো হয়েছে। এটি আমাকে মর্মাহত করেছে।’
সমাবর্তন বক্তা অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাংবাদিক শারমিন ওবায়েদ চিনয় বলেন, ‘ব্যর্থতাই সাফল্যের পথ তৈরি করে দেয়। কারণ, একটা পথ বন্ধ হলে প্রকৃতির নিয়মেই আরেকটা পথ খুলে যায়।’
সমাবর্তনে ভেলিডিক্টোরিয়ান বক্তব্য দেন চ্যান্সেলর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী শিহাব মুহতাসিম। তিনি বলেন, সত্যিকারের সাফল্যের জন্য যেকোনো কাজে আনন্দ খুঁজে পাওয়া জরুরি।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বদলিতে আবেদন শুরু, মানতে হবে যেসব শর্ত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ বলেন, টেকসই পরিবর্তনের জন্য নৈতিক নেতৃত্ব, সংবেদনশীল মানুষ তৈরি এবং অন্যদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুনচীনের এআইআইবি গ্লোবাল ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম, দিনে ৯০ ডলারের সঙ্গে নানা সুযোগ৫ ঘণ্টা আগেসমাবর্তনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপচার্য ফারহাত আনোয়ার। এবারের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্পনসরদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পূবালী ব্যাংক। হট বেভারেজ পার্টনার হিসেবে ছিল এমএম ইস্পাহানি লিমিটেড।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
যখন টাকা খাওয়া যাবে, তখন শিক্ষক নিয়োগ দেবেন?: ইবি শিবির সভাপতি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেছেন, “ইবিতে উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার পরে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাদের সার্কুলারে যারা প্রভাষক হয়েছিলেন, তারা এখন অধ্যাপক হচ্ছেন। কিন্তু ইবি প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে শুধু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ছাড়া কোনো পদক্ষেপ গ্রহণনি।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বিভাগও আছে, যেখানে শিক্ষক মাত্র দুইজন। শিক্ষক নিয়োগে কেনো এত দেরি হচ্ছে আপনাদের? সুবিধাজনক সময়ে যখন টাকা খাওয়া যাবে, তখন শিক্ষক নিয়োগ দেবেন? এই সমস্ত তালবাহানা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলবে না।”
রবিবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টায় নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুল হাসান বলেন, “ছাত্র সংসদ গঠনে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বলার পরেও আইনের দোহাই দিয়ে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কিন্তু ইবির পরে প্রতিষ্ঠিত অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আপনারা কেনো পারছেন না? এই ভয়ে যে, চেয়ার চলে যাবে? শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করলে তারাই আপনাদের চেয়ারে রাখবে। আর না হয় হাসিনাকে যেভাবে সরিয়েছে, আপনাদেরও সেভাবে সরাবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের ১ বছরে পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য সংস্কার চেখে পড়েনি। আমরা ভেবেছিলাম জুলাইয়ের পরে আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে না, আমরা কথা বলার অধিকার পাব, সনদপত্র তুলতে ভোগান্তি হবে না, চিকিৎসা কেন্দ্র সংস্কার হবে, ক্যাম্পাস ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত হবে, গুম হওয়া ওয়ালীউল্লাহ-মুকাদ্দাস ভাইকে ফেরত পাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে পারেনি।”
তিনি আরো বলেন, “এর মধ্য দিয়ে প্রশাসন জুলাই বিপ্লবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। ক্যাম্পাস কতটা অনিরাপদ হলে আমাদের ভাইয়ের লাশ পুকুরে পাওয়া যায়। কিন্তু এর নির্ভরযোগ্য কোনো ফুটেজ বা তথ্য প্রশাসন দিতে পারেনি।”
নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কারে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। অন্যথায় তারা প্রশাসনকে আসসালামু আলাইকুম বলতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সংগঠনটি। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় তারা ‘যদি না হয় সংস্কার, এই প্রশাসন কি দরকার’, ‘পুকুরে লাশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘সাজিদ হত্যার তদন্ত, করতে হবে করতে হবে’, ‘অনলাইন পেমেন্ট চালু কর, ভোগান্তি দূর কর’, ‘কর্মকর্তা জমিদার, লাঞ্চ করতে দিন পার’, ‘ইবিতে ছাত্র সংসদ, চালু কর করতে হবে’, ‘ইকসু নিয়ে টালবাহানা, আর না আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের হাতে হল ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়ার পানি ও খাবারের মান নিশ্চিত করতে হবে, স্বৈরশাসনের সময় বর্ধিত ও অযৌক্তিক ফি কমাতে হবে, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে, ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান চাই ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী