ডাকসু নির্বাচন কবে? যা বলছে ঢাবি প্রশাসন
Published: 26th, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর আলাপ-আলোচনার মধ্যে প্রশাসন বলছে, এ বিষয়ে গঠন করা তিন কমিটির চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।
সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার আগে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আগাম তারিখ ঘোষণার সুযোগ নেই বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তর।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জনসংযোগ দপ্তর বলেছে, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়ন বা সংশোধন এবং ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সংশোধন বা পরিমার্জনের বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া তিনটি কমিটি নিরলসভাবে কাজ করছে। এসব কমিটি প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিকসহ সব অংশীজনের মতামত নিচ্ছে। তারা কয়েক দফা বৈঠক করে লিখিত মতামতও নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
হল ছাড়ছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা
দেশে ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়া হওয়ার পর নিষিদ্ধ হয়েছে ছাত্রলীগ। এই সংগঠন বাদে অন্যান্য ছাত্র সংগঠন ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে, মাঝেমধ্যে শোরগোলও শোনা যাচ্ছে। কয়েকটি সংগঠন জাতীয় নির্বাচনের আগে ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবি তুলেছে। তবে নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ না দিয়ে আগে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য কমিটি করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্য বলেছিল, ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে তারা এখন কমিটির সুপারিশের দিকে তাকিয়ে আছে।
তিন কমিটির মধ্যে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন সফলভাবে আয়োজনে পরামর্শ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশাকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। তারা কাজ করছে।
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়ন বা সংশোধনের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিকে।
আর ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সংশোধন বা পরিমার্জনের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের দায়িত্ব পড়েছে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল হকের নেতৃত্বাধীন আহ্বায়ক কমিটির ওপর।
ডাকসুর যত নির্বাচন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পার করেছে। এই পুরো সময়ে সেখানে ৩৭ বার ছাত্র সংসদের ভোট হয়েছে। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ৫০ বছরে ২৯ বার আর স্বাধীন দেশে ৫৩ বছরে মাত্র আটবার নির্বাচন হয়েছে। সবশেষ ভোট আয়োজন করা হয় ২০১৯ সালে। তাতে ভিপি নির্বাচিত হন নুরুল হক নুর।
১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রতিবছর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত ছাত্র সংসদের মনোনয়নে পাঁচজন শিক্ষার্থী-প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকেন। তারা পুরো ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও সুযোগের বিষয়গুলো উত্থাপন করেন সিনেটে। এখন সংকট এখানেই। নির্বাচিত ছাত্র সংসদ না থাকায় সিনেটে থাকছেন না শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
ঢাকা/সৌরভ/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কম ট র স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) মনোনয়নপত্র নিতে এসে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তাঁর নাম সালমান রহমান। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্যপদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি।
নির্বাচনী আচরণবিধি–২ এর ক অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, সালমান রহমান ৮ থেকে ১০ জন সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে আসেন। মনোনয়নপত্র নেওয়ার পর চাকসু ভবনের ভেতরেই সালমানের নাম ধরে স্লোগান দেন সমর্থকেরা। স্লোগান দিতে দিতে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নামেন তাঁরা। এ সময় সালমান রহমান সবার মাঝখানেই ছিলেন। তাঁকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়।
আচরণবিধি ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করে সালমান রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়বেন। তাঁর সমর্থকেরা না বুঝে স্লোগান দিয়েছেন। এ ধরনের ভুল আর হবে না।
জানতে চাইলে চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এসব বিষয় দেখভালের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র বিতরণ। আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার শেষ দিন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র বুধবার পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।