সিদ্ধিরগঞ্জে হিফজুল কোরআন ও কোরআন তেলওয়াত প্রতিযোগিতা
Published: 21st, March 2025 GMT
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিদ্ধিরগঞ্জে হিফজুল কোরআন ও কোরআন তেলওয়াত প্রতিযোগিতা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের নয়াআটি মুক্তিনগর এলাকাস্থ গ্রীন গার্ডেন রেষ্টুরেন্টে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সদ্য সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ফারহানের আয়োজনে এ প্রতিযোগিতার চুরান্ত পর্ব পুরস্কার বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সদ্য সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ফারহানের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহŸায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহŸায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, এই মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। তাই এই মাসটি অনেক সম্মানের। আর মানুষ আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হওয়ার কারণেই এই মানুষের কাছে এই কোরআন নাজিল হয়েছে।
আর আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর কাছে কোরআন নাজিল হয়েছেন বলেই তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ হয়েছেন। এই কোরআন যে পাঠ করবে, যে শুনবে আর যে তা পালন করবে সেও শ্রেষ্ঠ হবে। তাই আমরা কোরআনের সঙ্গে থাকব, কোরআন পাঠ করব। ছাত্রদলের এ আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয় এবং বিরল।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন মুক্তুল, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মারুফ, কুতুবপুর ১নং ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি জামান মোল্লা, জেলা জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মোরশেদ আলম, ৩নং ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি মো: সোহেল, ১নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়া উদ্দিন, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আজাদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো: লিটন, ১নং ওয়ার্ড যুবদলের সি: যুগ্ম সম্পাদক আল আমিন, মো: যুবদল নেতা ইউসুফ মোল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদল নেতা এনাম, মো: নয়ন, আবির, মো: মুসা, নাসিক ৩নং ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতা রনি, তোলারাম কলেজ ছাত্রদল নেতা কামরুল হাসান, আরিয়ান ও ৬নং ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতা রাব্বীসহ প্রমূখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ছ ত রদল ন ত স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ছ ত রদল র ব এনপ র অন ষ ঠ ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।