বিলাসপুরে কারা–কীভাবে–কোথায় ককটেল বানান, কত টাকা পান
Published: 11th, April 2025 GMT
বালতিতে করে ককটেল নিয়ে ‘খইয়ের মতো’ ফুটিয়ে সংঘাতে জড়ানো শরীয়তপুরের জাজিরার বিলাসপুর ইউনিয়নে নতুন ঘটনা নয়। এ চিত্র অন্তত ২০ বছরের। প্রতিবছর ছয় থেকে আটবার এমন ‘ককটেল সংঘাত’ হয়। ককটেলগুলো বানানো হয় বিলাসপুরের বিভিন্ন গ্রামে। ককটেল বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে গত ১৫ বছরে একজনের প্রাণহানি এবং ৩০ জনের অঙ্গহানি হয়েছে, এমন তথ্য স্থানীয় ব্যক্তি ও পুলিশের।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ককটেল তৈরি করা, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে লুটপাট করা, সংঘর্ষে জড়ানো ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা কুদ্দুস ব্যাপারী ও জলিল মাতবর। ওই দুই পক্ষের আছে ককটেল তৈরির প্রশিক্ষিত লোক। বিলাসপুরে তৈরি করা ককটেল শুধু যে বিলাসপুরেই ব্যবহৃত হয়, এমন নয়। এসব ককটেল বিক্রি করা হয় জেলার বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীদের কাছে। জেলার যেখানেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, সেখানেই বিলাসপুরের ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
বিলাসপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম পদ্মা নদীর তীরবর্তী। ওই এলাকায় জেগে ওঠা চরের জমি দখলে নেওয়া, পদ্মা নদীর নৌপথ নিয়ন্ত্রণ, বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ, মাছ শিকার নিয়ন্ত্রণ, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সহিংসতা হয়। বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কুদ্দুস ব্যাপারী এবং পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাতবর দুটি বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তাঁদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ আছে সাবেক সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হক ও ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে।
ককটেল বানান পাচু খাঁরকান্দি এলাকার এমন একজনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তিনি তাঁর নাম প্রকাশ করতে চাননি। তিনি বলেন, টাকার বিনিময়ে তিনি কুদ্দুস ব্যাপারীর লোকজনকে ককটেল তৈরি করে দেন। ওই পক্ষের লোকজন গোলাবারুদ (বিস্ফোরক) এনে দেন। সেটা দিয়ে তিনি ককটেল তৈরি করেন। গোলাবারুদের সঙ্গে বাসমতী চাল, কাচ ভাঙা ও লোহার টুকরা ব্যবহার করেন। পরে এসব উপকরণ টিনের একটি কৌটায় ভরে তা স্কচটেপ দিয়ে মুড়িয়ে ককটেল বোমা তৈরি করেন। একেকটি অর্ডারে কমপক্ষে ৫০টি করে ককটেল তৈরি করা হয়। এর জন্য পারিশ্রমিক পান ২০ হাজার টাকা। গ্রামের নির্জন স্থানে, বাগানে, পদ্মা নদীর চরে বা নৌকায় বসে এ কাজ করেন।
শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ। শনিবার সকালে বিলাসপুর ইউনিয়নের দূর্বাডাঙ্গা এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রতারক পুরুষ বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে, তবে আল্লাহ সব দেখেন’
ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা—দু’জায়গাতেই অভিনয় গুণে জায়গা করে নিয়েছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। পর্দার চরিত্রে যেমন সাহসী, বাস্তব জীবনেও তেমনি সরব ও স্পষ্টভাষী।
বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাবনার উপস্থিতি সবসময়ই আলোচনায় থাকে। নিয়মিত ছবি ও ভাবনার টুকরো অংশ প্রকাশ করায় অনেক সময় কটাক্ষের মুখেও পড়েছেন এই অভিনেত্রী। গতকাল রাতে ভাবনা তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে নারীর সঙ্গে পুরুষের বিশ্বাসঘাতকতার একটি চিত্রায়ণ করেছেন এই অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
‘খুকুমণির’ বিয়ে
রাজবাড়িতে বসবে মধুমিতার বিয়ের আসর!
এ বিষয়ে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “একজন প্রতারক পুরুষ তার বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে। কিন্তু যে নারীকে সে আঘাত করেছে, তাকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ তা প্রকাশ করেন। প্রতিটি মিথ্যা, যা সে পেছনে বলেছে, নীরবে ভাঙা প্রতিটি প্রতিশ্রুতি, কান্নার প্রতিটি মুহূর্ত, অথচ পুরুষটি ভান করেছে সব ঠিক আছে। তবে আল্লাহ সব দেখেন, যা সে দেখতে পায় না।”
কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। এমন তথ্য স্মরণ করে ভাবনা বলেন, “একজন পুরুষ ভাবেন, তার কর্ম ঢাকতে সে যথেষ্ট চতুর। কিন্তু কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। তাকে ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ সত্য প্রকাশ করেন না। বরং সেই নারীকে জীবনভর কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য এটি করেন।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “বিশ্বাসঘাতকতা হয়তো গোপনে করা হয়। কিন্তু তার প্রকাশ হলো ঐশ্বরিক সুরক্ষা। আল্লাহ যখন পর্দা সরিয়ে দেন, তা শাস্তি নয় বরং এটা উদ্ধার। আমি এখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আলহামদুলিল্লাহ।”
তবে ভাবনা কেন এ ধরনের একটি পোস্ট নিজের ফেসবুকে দিয়েছেন, তার পেছনের কারণ জানা যায়নি। কিন্তু তার ভাবনার সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন নেটিজেনরা।
ঢাকা/শান্ত