গোপালগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী চড়ক ঘুল্লী অনুষ্ঠিত
Published: 17th, April 2025 GMT
নববর্ষ ও চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বড় ডোমরাশুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী চড়ক ঘুল্লী। চড়ক ঘুল্লীর মূল আকর্ষণ ছিল অষ্টক ঘুল্লী। যা দেখতে ভিড় করে হাজার হাজার মানুষ। আর এ চড়ক ঘুল্লীকে কেন্দ্র করে বসে গ্রামীণ মেলা।
পঞ্জিকা মতে বাংলা বছরের চৈত্র মাসের শেষে চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়ক ঘুল্লীর আয়োজন করা হয়ে থাকে। তবে এবার বাংলা নববর্ষে আনন্দ দিতে বৈশাখের তৃতীয় দিন বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বড় ডোমরাশুর গ্রামের পঞ্চপল্লী বড় ডোমরাশুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয় চড়ক ঘুল্লীর।
এসময় ঢাকের বাদ্যের তালে মুখোরিত হয়ে ওঠে মাঠ। তবে এ মেলার মূল আকর্ষণ ছিল অষ্টক ঘুল্লী। এ ঘুল্লীতে অংশ নেওয়া আট যুবকের পিঠে লোহা দিয়ে তৈরি দুটি করে বড় বড়শি ফোটানো হয়। পরে মাঠের মাঝখানে গাছের লম্বা খুঁটির আট মাথায় রশি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় আট যুবককে। রশি দিয়ে বেঁধে ঘুরানো হয় কয়েক দফা। বিকাল থেকে গোধূলী পর্যন্ত চলে এ চড়ক ঘুল্লী। পূন্য লাভের আশায় এ চড়ক ঘুল্লীতে অংশ নেন তারা।
এ চড়ক মেলা দেখতে গোপালগঞ্জসহ মাদারীপুর, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন এলাকার শিশু-নারীসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমায়। অনুষ্ঠান স্থল পরিণত হয় মিলন মেলায়। এ চড়ক ঘুল্লীকে কেন্দ্র করে বসে গ্রামীন মেলা। খাবার, গহনা, মিষ্টির দোকান ও মাটির খেলনাসহ বসে বিভিন্ন দোকান।
চড়ক ঘুল্লীতে অংশ নেওয়া যুবক অর্ঘ্য রায় বলেন, “পূণ্য লাভ, দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় এ চড়ক ঘুল্লীতে অংশ নেন তারা। তবে এভাবে ঘোরানোতে ব্যাথা বা শারীরিক সমস্যা হয় না।”
চড়ক ঘুল্লীতে অংশ নেওয়া যুবক সজল রায় বলেন, “এতে অংশ নিলে আমাদের কোনো ব্যাথা লাগে না। ঈশ্বরের আশির্বাদ লাভের আশায় আমরা অংশ নিয়ে থাকি। এতে আমরা যেমন আনন্দ পাই, তেমনি দর্শনার্থীদেরকেও আনন্দ দিয়ে থাকি।”
চড়ক ঘুল্লী দেখতে আসা বাপ্পী দাস বলেন, “আমি বিভিন্ন জায়গায় দুই বা চরে জনের চড়ক ঘুল্লী দেখেছি। তবে এবারই প্রথম এখানে আট জনের ঘুল্লী দেখলাম। দেখে খুব ভালো লাগলো। আগামীতেও এমন আয়োজনের দাবি জানাই।”
চড়ক ঘুল্লী দেখতে আসা স্কুল শিক্ষার্থী সাথী বিশ্বাস বলেন, “এবারই প্রথম আমি চড়ক ঘুল্লী দেখতে আসলাম। দেখে খুব ভালো লাগছে। তবে এখানে মূল আকর্ষণ ছিল আট জনের চড়ক ঘুল্লী। প্রথমবার দেখে কতটা আনন্দ পেলাম তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।”
চড়ক ঘুল্লী দেখতে আসা বয়োবৃদ্ধ সুশীল বৈরাগী বলেন, “আমরা যখন চড়ক ঘুল্লী দেখতাম তখন দুই বা চার জনের ঘুল্লী হতো। আজ এখানে আট জনের ঘুল্লী দেখে খুব ভালো লাগলো। এছাড়া চড়ক ঘুল্লীকে কেন্দ্র করে মিলন মেলায় পরিণত হয় প্ররো এলাকা। পরিবারের সবাই একসাথে এসে এ চড়ক ঘুল্লী উপভোগ করে।”
চড়ক ঘুল্লী ও মেলার আয়োজক উজ্জ্বল ভক্ত জানান, দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দীর্ঘ বছর ধরে আমরা চড়ক পূজা ও চড়ক ঘুল্লীর আয়োজন করে আসছি। এটা আমাদের গ্রামের একটি ঐতিহ্য। শুধু হিন্দু ধর্মাম্বালম্বীরাই নয়, অনান্য ধর্মের লোকজন চড়ক ঘুল্লী দেখতে আসেন। সৃষ্টি হয় ধর্মীয় সম্প্রিতীর বন্ধন।
ঢাকা/বাদল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চড়ক ঘ ল ল র চড়ক ঘ ল ল ত এ চড়ক ঘ ল ল গ প লগঞ জ আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা মেডিকেল থেকে ভুয়া চিকিৎসক আটক
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মহিলা ওয়ার্ড থেকে সজীব দাস পার্থ (২১) নামের এক ভুয়া চিকিৎসককে আটক করেছে হাসপাতালের দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাত দেড়টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, রাতে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি কুলসুম বেগম (৫৪) নামের এক নারী রোগীকে হুইলচেয়ার থেকে জোর করে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। এতে রোগী পড়ে যান। তা দেখে ওয়ার্ডের লোকজন ও আনসার সদস্যরা সন্দেহভাজন ব্যক্তিটিকে পালানোর চেষ্টাকালে ধরে ফেলেন। পরে তাকে ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, “রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ড থেকে রোগীর স্বজন ও আনসার সদস্যরা ভুয়া চিকিৎসক সজীব দাস পার্থ এবং তার এক সহযোগী মানিক মিয়াকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন।”
তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সজীব দাস নিজেকে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর থানার বিলবাড়ি পেড়কুড়ি গ্রামের বাসিন্দা এবং রানেশ চন্দ্র দাসের ছেলে বলে পরিচয় দেয়। দাবি করে, পাবনা মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সে।
পরিদর্শক ফারুক আরো বলেন, “তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ছেলেটির মানসিক সমস্যা রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় আসছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বুলবুল/ইভা