আমার ব্রেনে এই শহরে কোনো কাজ হয়নি: কেসিসির পরিকল্পনা কর্মকর্তা
Published: 22nd, April 2025 GMT
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পরিকল্পনা কর্মকর্তার (প্ল্যানিং অফিসার) কোনো কাজ নেই বলে মন্তব্য করেন কেসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির-উল-জব্বার। তিনি বলেন, যে প্রকল্প আসে, তা বাস্তবায়ন হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। এর ৩১ ওয়ার্ডের কোনোটিতেই কোনো পরিকল্পনা নেই।
আজ মঙ্গলবার নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন আবির-উল-জব্বার। এতে একটি প্রকল্পের পরিচিতি সভার আয়োজন করে ‘সিরাক-বাংলাদেশ’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা।
অনুষ্ঠানটির মুক্ত আলোচনাপর্বে আবির-উল-জব্বার বলেন, ‘যা এত দিন বলতে পারিনি, তা আজ বলছি। আমার ব্রেনে এই শহরে কোনো কাজ হয়নি। আমি যখন একটা প্রস্তাব দিই, তখন আমার ওপরের অথরিটি সেটি মাথায় নেয় না। এ কারণে আমার এক পার্সেন্টও প্ল্যান বাস্তবায়ন হয় না। সারা বাংলাদেশে একই সিস্টেম। প্ল্যানাররা সব সময়ই অবহেলিত।’
আক্ষেপের সুরে কেসিসির প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদেশে আগে প্ল্যানাররা প্ল্যান করেন, পরে আর্কিটেক্টরা ডিজাইন করেন। এরপরই কাজ করেন ইঞ্জিনিয়াররা। দিস ইজ দ্য সিস্টেম, সারা ওয়ার্ল্ডে। কিন্তু আমাদের দেশে হয় উল্টো। আগে ইঞ্জিনিয়াররা প্রোজেক্ট পাস করায় দেবেন, এরপর আমাকে বলবে, “এই টাকা এসেছে, এখন ডিজাইন করো।” এরপর আর্কিটেক্ট একটা ডিজাইন করেন, সেখানে আমার একটা মতামত দিতে হয়। ব্যস, উল্টোভাবে চলছে সারা বাংলাদেশ।’
যে প্রকল্পে রাজনৈতিক তদবির ভালো, সেটি দ্রুত পাস হয় জানিয়ে আবির-উল-জব্বার বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় একই শহরে একই রাস্তা বারবার খোঁড়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লস্কর তাজুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিতান কুমার মণ্ডল, কেসিসির সচিব শরীফ আসিফ রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিরাক-বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকত।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীতে সৎমা ও দাদিকে গলা কেটে হত্যা
পটুয়াখালীতে কুলসুম বেগম ও মোসা. সাহিদা বেগম নামের দুই নারীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণের বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের চারাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আল আমিন (২৭) সম্পর্কে নিহত সাহিদা বেগমের সৎছেলে এবং বৃদ্ধা কুলসুম বেগমের নাতি। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত দুই নারীর স্বজন মো. আশ্রাফ খাঁ জানান, আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। এরপর তাঁর পরিবার তাঁকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে আল আমিনের বাবা রাজ্জাক খাঁ পাশের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গেলে আল আমিন দা দিয়ে গলা কেটে তাঁর সৎমা সাহিদা বেগম ও বৃদ্ধ দাদি কুলসুম বেগমকে হত্যা করেন।
বাহাদুর আলম খাঁ (৫০) নামের এক আত্মীয় বলেন, নিহত সাহিদা সম্পর্কে তাঁর চাচিশাশুড়ি এবং কুলসুম বেগম দাদিশাশুড়ি। দুপুরে বাড়ির সবাই জুমার নামাজ পড়তে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছোট ছেলে আল আমিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত ধারালো দা দিয়ে প্রথমে সৎমা এবং পরে দাদিকে গলা কেটে হত্যা করেন। তিনি বলেন, আল আমিন মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে পটুয়াখালী সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তিন বছর আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে যান। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসক দেখালেও সুস্থ হননি।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই নারীকে হত্যার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। হত্যাকাণ্ড ঘটানো ব্যক্তি ওই পরিবারের সদস্য। ঘটনার পর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। জড়িত তরুণ এখন পলাতক। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তদন্ত করে দেখা হবে।