চাকরি পুনর্বহাল চেয়ে সংবাদ সম্মেলন অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইদের
Published: 6th, May 2025 GMT
চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ চলাকালে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শকেরা (এসআই)। আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে অব্যাহতির ঘটনায় হতাশা ও ক্ষোভ জানান তাঁরা।
রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ শেষে থানায় পদায়নের কয়েক দিন আগে ৪০তম ব্যাচের ৩২১ জন এসআইকে বিভিন্ন ধাপে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা বলেন, শৃঙ্খলাভঙ্গের যেসব অভিযোগ এনে তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, সেগুলো মিথ্যা ও সাজানো। একাডেমির ১১৩ বছরের ইতিহাসে এমন নজিরবিহীন ও অমানবিক সিদ্ধান্ত আগে দেখা যায়নি বলেও দাবি করেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআই দীপিকা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, নিয়োগপ্রক্রিয়ার সব ধাপ শেষ করে ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর পুলিশ একাডেমিতে এক বছরের প্রশিক্ষণে যোগ দেন ৪০তম ব্যাচের শিক্ষানবিশ এসআইরা। নিয়োগপ্রক্রিয়া ছিল নকআউট পদ্ধতির অর্থাৎ একটি ধাপে বাদ পড়লে পরবর্তী ধাপে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ ছিল না। স্বচ্ছ ও কঠিন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাঁরা চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রশিক্ষণ শেষে থানায় পদায়নের সময় আসতেই শুরু হয় শোকজ ও অব্যাহতির প্রহসন। চার ধাপে ৩২১ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতিপ্রাপ্তদের অনেকেই চাকরি পাওয়ার আশায় আগের সরকারি বা বেসরকারি চাকরি ছেড়েছিলেন। এখন তাঁরা পরিবারের বোঝা হয়ে গেছেন। সমাজে মুখ দেখাতে পারছেন না। তাঁদের একটাই আকুতি—চাকরিতে পুনর্বহাল।
চাকরি ফিরে পেতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চান অব্যাহতি পাওয়া এসআইরা। বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তাঁদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানান তাঁরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এক ড ম
এছাড়াও পড়ুন:
কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই প্রত্যাহার
সন্ত্রাসীদের নিয়ে গভীর রাতে চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগে কলাবাগান থানার ওসিসহ এক এসআইকে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল রোববার তাদের প্রত্যাহার করা হয়। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- ওসি মোক্তারুজ্জামান ও এসআই বেলাল হোসেন।
আজ সোমবার ডিএমপির মুখপাত্র উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের সাময়িক প্রত্যাহার করা হলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশাসনিক কারণে কলাবাগান থানার ওসিসহ এক এসআইকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট ড. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, সন্ত্রাসীদের নিয়ে গভীর রাতে কলাবাগান থানার ওসির চাঁদাবাজি, অর্থ আদায়, ভাঙচুর, লুটপাট ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগের সঠিক তদন্ত ও যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ২৯ এপ্রিল রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে কলাবাগান থানার এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ও ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে। আমার ম্যানেজার ৯৯৯ এ ফোন করলে এক গাড়ি পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিমের দুটি গাড়ি এসে বাড়ির সংলগ্ন মেইন রাস্তায় থামে। ম্যানেজার দেখতে পান কলাবাগান থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান নিউমার্কেট ও শাহবাগের টহল টিমকে চলে যেতে বলেন। শাহবাগ ও নিউ মার্কেটের টহল টিমকে সংবাদ দেওয়ার জন্য আমার এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটিয়া লাল মিয়া ও নাইট গার্ড লুৎফরকে কলাবাগান থানার ওসি পুলিশের গাড়িতে তুলতে নির্দেশ দেন। যা আমার বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে।
তিনি বলেন, বাসার ভেতর ঢুকে মান্নান নামের একজন পুলিশ সদস্য আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিতে পারলে আমার থানায় যেতে হবে না। বাড়িতে রেখে যাবে। কী মামলা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায় কোনো মামলা হয়নি, তারা টাকার জন্য এসেছে।
যদি টাকা না দেই আমার বিরুদ্ধে ১০টা মামলা হবে। অনেক দেন দরবার করার পর আমি দুই লাখ টাকা পুলিশ সদস্য বেলাল ও মান্নানের হাতে তুলে দেই। ব্যাংকিং আওয়ারের মধ্যে বাকি টাকা দেওয়ার শর্তে তিনজন সিভিল ড্রেস পরা ব্যক্তিকে আমার পাহারায় রেখে যায়। তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দেয়।
ভুক্তভোগী ড. আব্দুল ওয়াদুদ আরও বলেন, এ ঘটনায় ২ মে ডিএমপি কমিশনার বরার একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।