পা‌কিস্তা‌নে ভার‌তের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ ক‌রে‌ছে জাতীয় নাগরিক পা‌র্টি (এন‌সি‌পি)। দল‌টি ব‌লছে, হামলা দুই দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে, যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করেছে। যা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় সরাসরি আঘাত করেছে। উভয়পক্ষকে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতির স্বার্থে ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানি‌য়ে‌ছে এন‌সি‌পি।
 
আজ বুধবার দল‌টির বিবৃ‌তি‌তে এ আহ্বান জানা‌নো হয়। এ‌তে বলা হ‌য়ে‌ছে, ভারতে অবস্থান করা পলাতক ফ্যাসিবাদী ও গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের হাজারও নেতাকর্মীরা বাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এই দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী বিদ্যমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে অস্থিরতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টিতে চক্রান্তে লিপ্ত। তারা সীমান্তে অনুপ্রবেশ এবং নাশকতার মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকদের জান-মালের ক্ষতি সাধনে সক্রিয় রয়েছে।

সরকার এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি এন‌সি‌পি সীমান্তে নজরদারি ও সক্ষমতা বৃদ্ধির আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছে। বিবৃ‌তি‌তে ব‌লে‌ছে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা জরুরি। জনগণের সংগঠিত শক্তি এবং সর্বাত্মক সতর্কতাই বাংলাদেশকে ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্র ও বৈদেশিক আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে সক্ষম।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

একাত্তর না চব্বিশ—এই বিতর্ক অনাহূত

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে চব্বিশের জুলাইয়ের আন্দোলনের বিরোধ নেই। তবে অনেক মূল্য দিয়ে অর্জিত চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পর মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের যেসব বিষয়ে সংস্কার করা প্রয়োজন ছিল, তা করতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘লাল জুলাইয়ের কবিতা’ শিরোনামে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য উঠে আসে। সাধারণ সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পীসমাজের সদস্যরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘চব্বিশ একাত্তর বাহান্ন, হারতে দেব না কখনো’।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শহীদ ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দীন। তিনি বলেন, এ দেশের মুক্তিকামী জনগণ যে আশা নিয়ে আন্দোলন করেছিল, এক বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়েছে কি? এই সরকার বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নিরাপত্তা, শিক্ষাব্যবস্থার কোনো সংস্কারই আনতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা বেকার সৃষ্টির কারখানা।

এ সময় তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে জুলাই ঘোষণাপত্র কার্যকর নিয়ে সংশয়ের কথা। জুলাই আন্দোলনে মুখের অবয়ব হারানো খোকন চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে গঠিত এই সরকার। আহতদের সুচিকিৎসার ও পুনর্বাসন ছিল তাদের দায়িত্ব; কিন্তু তা হচ্ছে না। এখনই যদি আমাদের অবস্থা এমন হয়, তাহলে পরবর্তী সরকারের কাছে আমরা কী প্রত্যাশা করব।’

অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, একশ্রেণির মানুষ একাত্তর আর চব্বিশের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করছে। এটি সম্পূর্ণ অনাহূত ও অশ্রদ্ধার প্রদর্শন। তিনি বলেন, এই সংগ্রামকে ধারণ করতে গিয়ে বিগত সংগ্রামকে ভুলে গেলে ভবিষ্যতের সংগ্রাম ২৪–এর সংগ্রামকে ভুলে যাবে। অ্যাটর্নি জেনারেল এ সময় আগের বক্তাদের ক্ষোভের সূত্র ধরে বলেন, ‘এক বছর পর এমন হতাশার কথা শুনতে হবে, তা ভাবিনি।’ গত এক বছরে পুলিশ কোনো গায়েবি মামলা করেনি বা গুমের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি।

জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান বলেন, শেখ হাসিনার আমলের ১৬ বছরে দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও পরিণত হয়েছিল ক্যাডারদের সংগঠনে। তাঁরা দখলের রাজনীতি করেছেন। দেশের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছেন। সেই সব সংস্কৃতিকর্মীই জুলাই আন্দোলনের সময় হতাহত মানুষের পক্ষ না নিয়ে সরকারকে সমর্থন করে গেছেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল সমবেত আবৃত্তি। শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন ‘লাল জুলাইয়ের কবিতা’র তিন উদ্যোক্তা আঞ্জুমান লায়না নওশিন, ফাহমিদা সূচনা ও অনন্যা মাহমুদ। গত বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো লাল জুলাইয়ের কবিতা মঞ্চস্থ করার সময়ের বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন তাঁরা।

জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার এই আয়োজন শুরু হয়। এরপর মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থান স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ