কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সম্প্রতি বিষধর সাপের উপদ্রব বেড়েছে। মাঝে মধ্যে আবাসিক হলগুলোতেও ঢুকে পড়ছে এসব সাপ। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বেশ কয়েকদিন ধরে ইবির আবাসিক হলের আশপাশের এলাকা ও চলাচলের রাস্তায় নিয়মিত পাতি কাল কেউটে, কালাচসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপের দেখা মিলছে। সাপের উপদ্রবের কারণ হিসেবে নিয়মিত ঝোপঝাড় পরিষ্কার না করাকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীরা জানান, নিয়মিত পরিষ্কার না করায় হলগুলোর আশপাশ ও রাস্তার দুই পাশসহ বিভিন্ন জায়গা আগাছা ও ঝোপঝাড়ে পূর্ণ হয়ে থাকে। ফলে এগুলোতে সাপ সহজেই বাসা বাঁধছে। সম্প্রতি ভারী বর্ষণের ফলে শুকনো জায়গা ও খাবারের সন্ধানে আবাসস্থল ছেড়ে সাপগুলো লোকালয়ে ঢুকছে। 
গত কয়েক সপ্তাহে আবাসিক হল ও হলের আশপাশের এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি পাতি কাল কেউটে, কালাচ ও দেশি প্রজাতির বিষধর সাপ মেরেছেন শিক্ষার্থীরা। আবাসিক এলাকার আশপাশে বিষধর সাপ দেখে উদ্বিগ্ন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে সাপে কাটার চিকিৎসা না থাকায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের অনুমতি কেবল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর রয়েছে। ফলে ১০ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে সাপে কামড়ের চিকিৎসার জন্য ১২টি অ্যান্টিভেনম ক্রয় করা হলেও এগুলো কখনও ব্যবহার করা যায়নি। অ্যান্টিভেনমগুলোর একটি বাদে সবগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিকেল অফিসার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কার্ডিয়াক সাপোর্টসহ বিভিন্ন টেস্ট শেষে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করতে হয়। ইবি মেডিকেলে সেই সুযোগ নেই। এ ছাড়া সরকারি বিধিনিষেধও রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীকে সাপ কামড়ালে তারা শুধু সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
সাপের উপদ্রব ও তা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। ঝোপঝাড় পরিষ্কার, হলের চারপাশে ক্লোরোফরম প্রয়োগ, জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে অ্যান্টিভেনম ব্যবহারের অনুমতির জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
ল’ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইউসুফ সানি বলেন, সম্প্রতি হলের রুমের সামনেই সাপ মেরেছেন। প্রায়ই সাপ দেখা যায়। ক্যাম্পাসের ঝোপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার করা হলে হয়তো এই উপদ্রব কমবে।

আল-ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের মনির হোসেনের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে সাপে কাটার চিকিৎসা নেই। এটা খুবই উদ্বেগজনক। কাউকে বিষধর সাপে কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা পাওয়ার উপায় নেই– এটা নিয়েই আতঙ্কে থাকেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস প্রধান আলাউদ্দিন জানান, লোকবল সংকট থাকায় নিয়মিত ঝোপঝাড় পরিষ্কার সম্ভব হচ্ছে না। তবে নতুন কিছু মেশিন সংযোজনের মাধ্যমে পরিষ্কার কার্যক্রম জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক শেখ এ বি এম জাকির হোসেন বলেন, দ্রুত প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভা ডেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। 
উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে অ্যান্টিভেনম ব্যবহারের অনুমতিসহ সাপে কাটার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার বিষয়ে প্রধান মেডিকেল অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ষ ক র ব যবস থ র আশপ শ ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঝালকাঠিতে রাতের আঁধারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পোস্টার

ঝালকাঠিতে ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ঝালকাঠি জেলা শাখার সদস্যরা শহরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের পক্ষে বরিশাল-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়কের নলছিটি থানার বিসিক, প্রতাপ, বরইতলা, ভৈরবপাশা, ষাটপাকিয়া, শ্রীরামপুর, আমিরাবাদসহ সড়কের পাশে থাকা বিভিন্ন মাইলফলকে এসব পোস্টার লাগানো হয়।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে বিষয়টি সকলে নজরে আসে।

একাধিক সূত্র জানায়, রাতের আঁধারেই এসব পোস্টার লাগানো হয়। ঘটনার পরপরই ঝালকাঠি-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি পেট্রোল পাম্প মোড়সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়। পাশাপাশি টহলে রয়েছে জেলা পুলিশের বিভিন্ন টিম। পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদও চলছে।

জেলা বিএনপির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান মুবিন বলেন, ‘‘নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ রাতের আঁধারে পোস্টারিং করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। গণঅভ্যুত্থানের পর তাদের সাহস নেই প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি করার, তাই চোরের মতো রাতের আঁধারে পোস্টার লাগিয়েছে।’’

এদিকে, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ঝালকাঠি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ মধু তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্টারের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ঝালকাঠির বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগানো হয়েছে। যারা পোস্টার লাগিয়েছে, তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।’’

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুস ছালাম বলেন, “পোস্টারগুলো কারা লাগিয়েছে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি অনুসন্ধান করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘মহাসড়কে টহল পুলিশ কর্তব্য পালন করছে। হয়তো রাতের আঁধারে কেউ চোখ ফাঁকি দিয়ে পোস্টার লাগিয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে যারা এ কাজ করেছে, তাদের শনাক্তেরও চেষ্টা চলছে।”

ঢাকা/অলোক/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ