গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ক্রিয়েটিভ নেটওয়ার্ক ‘বাই দ্যা নেটওয়ার্ক’-এর সাথে যুক্ত হলো পপ ফাইভ
Published: 9th, May 2025 GMT
মাত্র আট মাস হলো যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশি ক্রিয়েটিভ অ্যাডভারটাইজিং এজেন্সি ‘পপ ফাইভ’। ব্যতিক্রমী চিন্তা ও পারপাজ ড্রিভেন কাজের মাধ্যমে তারা চেষ্টা করছে নতুন কিছু করতে। তরুণ এই বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবার যুক্ত হলো গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ক্রিয়েটিভ এজেন্সি নেটওয়ার্ক ‘বাই দ্যা নেটওয়ার্ক’ (bTN)-এর সঙ্গে।
‘বাই দ্যা নেটওয়ার্ক’ এমন একটি গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৭টি স্বাধীন বিজ্ঞাপন সংস্থা একসাথে কাজ করে। এই নেটওয়ার্কে এখন রয়েছে ৭৫০ জনেরও বেশি অভিজ্ঞ ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট, যারা লোকাল কাজকে গ্লোবাল মানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
এই নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পপ ফাইভ-কে বেছে নেওয়ার মূল কারণ ছিল তাদের ভিন্ন ভাবনা ও অর্থবহ কাজ, আর সাহসী আইডিয়া নিয়ে কাজ করার মানসিকতা। তারা মনে করে, পপ ফাইভ এমন একটি দল, যারা লোকাল ইনসাইট থেকে আন্তর্জাতিক মানের কাজ করতে পারে।
বাই দ্যা নেটওয়ার্ক-এর গ্লোবাল ক্রিয়েটিভ চেয়ার জন মেসক্যাল বলেন, “পপ ফাইভ-এর টিম, নেতৃত্ব আর ক্রিয়েটিভ চিন্তা আমাদের মুগ্ধ করেছে। আকরুমের সঙ্গে আমাদের আগের সম্পর্কটা এবার আরো গভীর হলো। তাদের কাছ থেকে আমরা দারুণ সব কাজের অপেক্ষায় আছি।”
এই গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার ফলে পপ ফাইভ এখন আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবে। কোনো গ্লোবাল পিচ বা বড় ক্যাম্পেইন হলে বাই দ্যা নেটওয়ার্ক-এর অন্য ২৭টি এজেন্সি তাদের সঙ্গে মিলে কাজ করতে পারবে। এতে করে পপ ফাইভ শুধু নিজে বড় হবে না, বরং দেশের তরুণ ক্রিয়েটিভদের জন্যও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজের সুযোগ তৈরি করবে।
পপ ফাইভ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ বলেন, “আমরা এমন একটা জায়গা তৈরি করতে চেয়েছি, যেখানে নতুন আইডিয়া সবসময় গুরুত্ব পাবে। শুরু থেকেই আমরা বিশ্বাস করি—বাংলাদেশ থেকে গ্লোবাল মানের কাজ সম্ভব। বাই দ্যা নেটওয়ার্ক-এর সঙ্গে যুক্ত হওয়াটা আমাদের সেই বিশ্বাসকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার বড় সুযোগ।”
প্রতিষ্ঠানটির চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার আকরুম হোসেন, যিনি অনেক দিন ধরেই বাই দ্যা নেটওয়ার্ক-এর সঙ্গে কাজ করছেন। তিনি বলেন, “আমার স্বপ্ন ছিল এমন একটা এজেন্সি তৈরি করা, যেখান থেকে আমরা আন্তর্জাতিক মানের কাজ করতে পারবো। পপ ফাইভ সেই স্বপ্নের রূপ। বাই দ্যা নেটওয়ার্ক-এর অংশ হওয়াটা শুধু আমাদের জন্য নয়, পুরো দেশের বিজ্ঞাপন ইন্ডাস্ট্রির জন্য বড় একটা সম্ভাবনা তৈরি করবে।”
বাংলাদেশে তুলনামূলক নতুন হলেও, পপ ফাইভ দেখিয়ে দিয়েছে যে সাহসী ভাবনা আর লক্ষ্য ঠিক থাকলে, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও জায়গা করে নেওয়া সম্ভব। আর এখন, সেই যাত্রার সঙ্গী হলো বাই দ্যা নেটওয়ার্ক। দেশীয় ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রির এই গ্লোবাল কোলাবোরেশন নিঃসন্দেহে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করলো। এখন দেখার অপেক্ষা, পপ ফাইভ-এর হাত ধরে বিশ্ববাজারে কতটা আলো ছড়াতে পারে বাংলাদেশের সৃজনশীলতা।
ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এমন একট ক জ কর আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম
সালাতুল হাজত একটি নফল নামাজ, যা বিশেষ প্রয়োজনকে সামনে রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে আদায় করা হয়। এই নামাজের মাধ্যমে মুমিন ব্যক্তি জীবনের বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতিতে আল্লাহর নৈকট্য ও সাহায্য কামনা করে।
হাদিসে সালাতুল হাজতের ফজিলত ও নিয়ম বর্ণিত আছে, যা মুমিনের আল্লাহর ওপর ভরসাকে দৃঢ় করে।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়মসালাতুল হাজত একটি নফল নামাজ, যা সাধারণত দুই রাকাত আদায় করা হয়। তবে ইচ্ছা হলে চার বা ততোধিক রাকাতও পড়া যায়। নামাজের নিয়ম বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো:
১. অজু করা
সালাতুল হাজত নামাজের জন্য পূর্ণ পবিত্রতা প্রয়োজন। তাই প্রথমে অজু করতে হবে। অজুর ফরজ চারটি: মুখমণ্ডল ধোয়া, দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধোয়া, মাথায় মসেহ করা এবং দুই পা টাখনু পর্যন্ত ধোয়া। এ ছাড়া সুন্নত অনুযায়ী অজু করা উত্তম, যেমন বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা, কুলি করা, নাকের ভেতরে পানি দেওয়া ইত্যাদি। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৫)
সালাতুল হাজত একটি নফল নামাজ, যা বিশেষ প্রয়োজনকে সামনে রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে আদায় করা হয়। সাধারণ ফরজ বা নফল নামাজের মতোই পড়তে হয়।২. নিয়ত করা
নামাজ শুরু করার আগে মনে মনে সালাতুল হাজতের নিয়ত করতে হবে। নিয়তের উদাহরণ: ‘আমি দুই রাকাত সালাতুল হাজত নফল নামাজ আল্লাহর জন্য আদায় করছি, আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে।’
নিয়ত মনে মনে করা যথেষ্ট, মুখে বলা জরুরি নয়। (সাইয়্যিদ সাবিক, ফিকহুস সুন্নাহ, পৃষ্ঠা: ১৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০১৮)
আরও পড়ুনইশরাকের নামাজ: সকালের আলোয় আল্লাহর নৈকট্য ০৪ জুলাই ২০২৫৩. দুই রাকাত নামাজ আদায়
প্রথম রাকাত: তাকবিরে তাহরিমা (আল্লাহু আকবার) বলে নামাজ শুরু করা। সুরা ফাতিহার পর যেকোনো সুরা পড়া, যেমন সুরা ইখলাস। তারপর রুকু, সিজদা ও অন্যান্য নিয়ম অনুসরণ করে প্রথম রাকাত সম্পন্ন করা।
দ্বিতীয় রাকাত: একইভাবে সুরা ফাতিহার পর একটি সুরা পড়া, রুকু, সিজদা ও তাশাহহুদ পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা।
এই নামাজ সাধারণ ফরজ বা নফল নামাজের মতোই পড়তে হবে, তবে খুশুখুজু (মনোযোগ) বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৪৭৮)
৪. নামাজের পর দোয়া
নামাজ শেষে আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ পড়ে নিজের প্রয়োজনের জন্য দোয়া করতে হবে। আব্দুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির আল্লাহর কাছে কোনো প্রয়োজন বা মানুষের কাছে কোনো দরকার থাকে, সে যেন অজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে, তারপর আল্লাহর প্রশংসা করে, নবীর ওপর দরুদ পড়ে এবং এই দোয়া পড়ে:
উচ্চারণ: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম, সুবহানাল্লাহি রাব্বিল আরশিল আজিম, আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন, আসআলুকা মুজিবাতি রাহমাতিক, ওয়া আজাইমা মাগফিরাতিক, ওয়াল গানিমাতা মিন কুল্লি বিরর, ওয়াস সালামাতা মিন কুল্লি ইসম। লা তাদা লি জাম্বান ইল্লা গাফারতাহু, ওয়া লা হাম্মান ইল্লা ফাররাজতাহু।’
অর্থ: ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি সহনশীল ও দয়ালু। পবিত্র মহান আরশের প্রভু আল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহর জন্য। আমি তোমার কাছে তোমার রহমতের কারণ, ক্ষমার দৃঢ়তা, প্রতিটি পুণ্যের লাভ এবং সব পাপ থেকে মুক্তি প্রার্থনা করি। আমার কোনো গুনাহ রেখো না, যা তুমি ক্ষমা করোনি এবং কোনো দুশ্চিন্তা রেখো না, যা তুমি দূর করোনি।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস:: ৪৭৮)
৫. অতিরিক্ত দোয়া
ওপরের দোয়ার পর নিজের প্রয়োজন বা দরকারের জন্য নিজের ভাষায় আল্লাহর কাছে দোয়া করা। দোয়া করার সময় আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখা এবং ধৈর্যের সঙ্গে ফলাফলের অপেক্ষা করা।
আরও পড়ুননামাজ আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির একটি ধাপ১৭ জুলাই ২০২৫সালাতুল হাজতের সময়সালাতুল হাজত নির্দিষ্ট কোনো সময়ের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। এটি যেকোনো সময় আদায় করা যায়, তবে নিষিদ্ধ সময় (যেমন সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত বা ঠিক মধ্যাহ্নে) এড়িয়ে চলতে হবে। সর্বোত্তম সময় হলো:
রাতের শেষ প্রহর (তাহাজ্জুদের সময়)।
ফজর বা মাগরিব নামাজের পর।
জুমার দিনে, বিশেষ করে আসর ও মাগরিবের মাঝে। (মুহাম্মদ ইবনে সালিহ, আল-ফিকহুল মুয়াসসার, পৃষ্ঠা: ১৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০১৫)
সালাতুল হাজতের ফজিলতসালাতুল হাজত নামাজের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখ আছে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সালাতুল হাজত পড়ে এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করেন।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৪৭৮)
এই নামাজ মুমিনের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনার একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যা মানসিক শান্তি ও ইমানের দৃঢ়তা বাড়ায়।
সতর্কতানিষিদ্ধ সময় এড়ানো: সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও মধ্যাহ্নে নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকা।
খুশুখুজু: নামাজ ও দোয়ায় মনোযোগ বজায় রাখা, যাতে ইবাদত পূর্ণতা পায়।
হারাম প্রয়োজনে না: সালাতুল হাজত শুধু জায়েজ ও হালাল প্রয়োজনের জন্য পড়তে হবে।
ধৈর্য: দোয়ার ফলাফলের জন্য ধৈর্য ধরা, কারণ আল্লাহ সর্বোত্তম সময়ে প্রয়োজন পূরণ করেন। (ইবনে হাজার আসকালানি, ফাতহুল বারি, ২/৪৮০, দারুল মা’রিফা: ১৯৮৯)
সালাতুল হাজত নামাজ মুমিনের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনার একটি অসাধারণ মাধ্যম। এটি দুই রাকাত নফল নামাজ, যার পর নির্দিষ্ট দোয়া ও নিজের প্রয়োজনের জন্য দোয়া করা হয়। জীবনে ব্যস্ততার মাঝেও এই নামাজ সহজেই আদায় করা যায়।
আরও পড়ুনজীবনকে ছন্দে ফেরাবে ‘ধীর নামাজ’২৪ মে ২০২৫