কুঠিবাড়ীতে শেষ হলো রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী
Published: 10th, May 2025 GMT
কুঠিবাড়ীতে প্রাণ ফিরেছে। কুঠিবাড়ী প্রাঙ্গণে ভক্ত ও অনুরাগীর ভিড়। গ্রামীণ মেলা বসেছে। খোলা মাঠটি সংকুচিত হওয়ায় দোকান বসেছে কম। তার পরও পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন আশপাশের বাসিন্দারা।
এই চিত্র কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ কুঠিবাড়ীর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের গতকাল শনিবার ছিল শেষ দিন। এদিন সকালে মূল মঞ্চে শুরু হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশনা। চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
তিন দশক আগে থেকে কবির জন্মদিনে কুঠিবাড়ীর সামনের খোলা মাঠে বসত গ্রামীণ মেলা। মেলা ঘিরে কুঠিবাড়ীর আশপাশের গ্রামগুলোতে থাকত আনন্দ-উৎসব। কয়েক দিন আগে থেকে আত্মীয়স্বজনের আনোগোনা বাড়ত। কিন্তু মেলার মাঠের স্থানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ায় স্থান সংকুলান হয়ে গেছে।
গতকাল দুপুরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ী প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, কবির নানা বাণী ও লেখনীর ফেস্টুন, চিত্রাঙ্কনসহ কুঠিবাড়ী প্রাঙ্গণ সাজানো হয়েছে নানান রঙে। দূরদূরান্ত থেকে শতাধিক ভক্ত-অনুরাগী এসেছেন। কুঠিবাড়ীর সামনে উন্মুক্ত মঞ্চে পরিবেশিত হচ্ছে রবীন্দ্রসংগীত, নৃত্য ও নাটক।
কুঠিবাড়ীর সামনের স্থানে কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। নবনির্মিত বিশাল প্রধান ফটকের পাশে আমবাগানে বসেছে ছোট্ট পরিসরে গ্রামীণ মেলা। রাজবাড়ী থেকে আসা ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগের মতো মেলা হয় না। তবে বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে।
মেলায় ঘুরছিলেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর হোসেন। তিনি কুঠিবাড়ীতে এসেছেন তিন-চার বছর পর। বললেন, ‘এসে খুব ভালো লাগছে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী তাজমুল হোসেন বলেন, কুঠিবাড়ীতে কবির অনেক শৈশবের স্মৃতি ও সৃষ্টিকর্ম রয়েছে। সেগুলো সরাসির দেখতে পেয়েছেন। ভালো লেগেছে।
সমাপনী দিনে বিকেল ৫টায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড.
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন সরকার এবং যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সাদী, জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক তৌকির আহম্মেদ প্রমুখ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ভেজাল বিদেশি প্রসাধনী বিক্রি, গ্রেপ্তার ১
বিদেশি প্রসাধনীর নামে পুরান ঢাকার লালবাগ ও চকবাজারে নকল এবং ভেজাল প্রসাধনী অনলাইনে পাইকারি-খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকার উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জের পুরাতন ভাড়ালিয়ায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৯ ধরনের নকল ও ভেজাল প্রসাধনী জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিআইডির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন খবরের ভিত্তিতে সিআইডির একটি বিশেষ দল ভেজাল প্রসাধনী সামগ্রী কারখানায় পণ্য উৎপাদন ও মোড়কজাত করার সময় মো. হৃদয় হোসেন (২৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোট ৯ ধরনের ১ হাজার ৭০ প্যাকেট বিভিন্ন রকমের নকল ও ভেজাল প্রসাধনী এবং ২০০টি খালি মোড়ক জব্দ করা হয়। তাঁর বাড়ি কেরানীগঞ্জের আঁটিবাজার এলাকার পুরাতন ভাড়ালিয়ায়। হৃদয়ের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি ভেজাল প্রসাধনী ও মোড়ক উদ্ধার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে।
সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয়ভাবে এসব বিদেশি প্রসাধনী উৎপাদিত হতো, এ বিষয়ে গ্রেপ্তার হৃদয়ের কাছে কোনো কাগজপত্র নেই। উৎপাদিত ভেজাল প্রসাধনী ঢাকার লালবাগ ও চকবাজারের বিভিন্ন অসাধু পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে সরবরাহ করত প্রতারক চক্রটি। এমনকি অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সেই ভেজাল পণ্য সস্তায় কিনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখধাঁধানো বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করতেন।
উদ্ধার ভেজাল পণ্যের মধ্যে রয়েছে ১৪০টি কেম কট থাই, ১৪০টি এল অ্যাভিনিউ হোয়াইটনিং বডি ক্রিম, ১৭০টি অর্গানিক হেয়ারফর অয়েল, ১৪০টি বডি হোয়াইটনিং ক্রিম, ১৪০টি কেম বো হোয়াইটনিং বডি ক্রিম, ১৪০টি অজুফি হোয়াইটনিং বডি ক্রিম, ৬০টি হোয়াইটনিং বডি লোশন, ৫০টি হোয়াইটনিং বডি লোশন, ৯০টি কোরিয়ান ফেয়ার লুক পারমান্যান্ট হোয়াইটনিং বডি লোশন। এ ছাড়া ২০০টি নিউ ফ্রেশ অ্যান্ড হোয়াইট, স্কিন বডি লোশনের মোড়ক।
সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় হোসেন জানান, এসব প্রসাধনী বাংলাদেশে উৎপাদন বা আমদানি হয় না। চক্রের অন্য সদস্যরা বিদেশের লাগেজ পার্টির মাধ্যমে স্যাম্পল এনে তা কপি করেন এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করেন। তাঁদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এসব প্রসাধনী তৈরি করে তিনি লালবাগ ও চকবাজারের অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করতেন। পরে তাঁরা বিদেশি প্রসাধনী বলে স্থানীয় পাইকারি ও খুচরা ক্রেতাদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করেন। এ ছাড়া অনেক গ্রাহক তাঁর কাছ থেকে পণ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করেন।
প্রতারক চক্রের সহযোগীদের শনাক্ত করে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।