কুঠিবাড়ীতে প্রাণ ফিরেছে। কুঠিবাড়ী প্রাঙ্গণে ভক্ত ও অনুরাগীর ভিড়। গ্রামীণ মেলা বসেছে। খোলা মাঠটি সংকুচিত হওয়ায় দোকান বসেছে কম। তার পরও পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন আশপাশের বাসিন্দারা।
এই চিত্র কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ কুঠিবাড়ীর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের গতকাল শনিবার ছিল শেষ দিন। এদিন সকালে মূল মঞ্চে শুরু হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশনা। চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
তিন দশক আগে থেকে কবির জন্মদিনে কুঠিবাড়ীর সামনের খোলা মাঠে বসত গ্রামীণ মেলা। মেলা ঘিরে কুঠিবাড়ীর আশপাশের গ্রামগুলোতে থাকত আনন্দ-উৎসব। কয়েক দিন আগে থেকে আত্মীয়স্বজনের আনোগোনা বাড়ত। কিন্তু মেলার মাঠের স্থানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ায় স্থান সংকুলান হয়ে গেছে।
গতকাল দুপুরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ী প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, কবির নানা বাণী ও লেখনীর ফেস্টুন, চিত্রাঙ্কনসহ কুঠিবাড়ী প্রাঙ্গণ সাজানো হয়েছে নানান রঙে। দূরদূরান্ত থেকে শতাধিক ভক্ত-অনুরাগী এসেছেন। কুঠিবাড়ীর সামনে উন্মুক্ত মঞ্চে পরিবেশিত হচ্ছে রবীন্দ্রসংগীত, নৃত্য ও নাটক।
কুঠিবাড়ীর সামনের স্থানে কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। নবনির্মিত বিশাল প্রধান ফটকের পাশে আমবাগানে বসেছে ছোট্ট পরিসরে গ্রামীণ মেলা। রাজবাড়ী থেকে আসা ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগের মতো মেলা হয় না। তবে বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে।
মেলায় ঘুরছিলেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর হোসেন। তিনি কুঠিবাড়ীতে এসেছেন তিন-চার বছর পর। বললেন, ‘এসে খুব ভালো লাগছে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী তাজমুল হোসেন বলেন, কুঠিবাড়ীতে কবির অনেক শৈশবের স্মৃতি ও সৃষ্টিকর্ম রয়েছে। সেগুলো সরাসির দেখতে পেয়েছেন। ভালো লেগেছে।
সমাপনী দিনে বিকেল ৫টায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড.

খ ম কবিরুল ইসলাম। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন সরকার এবং যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সাদী, জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক তৌকির আহম্মেদ প্রমুখ।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প

যৌন নিপীড়ন ও নারী পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত কুখ্যাত জেফরি এপস্টেইনের নথিগুলো প্রকাশের পক্ষে ভোট দিতে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে আগের অবস্থান থেকে সরে এসে সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী অবস্থান নিয়েছেন তিনি।

গতকাল রোববার রাতে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে ভোট দেওয়া উচিত। কারণ, আমাদের লুকানোর কিছু নেই।’

কয়েক দিন ধরে ট্রাম্প প্রয়াত এপস্টেইনের নথি প্রকাশ–সংক্রান্ত প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়ে আসছিলেন। এখন সেখান থেকে তিনি সরে এসেছেন।

ট্রাম্প এমন সময়ে তাঁর অবস্থান বদল করলেন, যখন কিনা প্রতিনিধি পরিষদে এপস্টেইনের নথি প্রকাশ–সংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়নের ওপর ভোটাভুটির প্রস্তুতি চলছে। ওই আইনের আওতায় মার্কিন বিচার বিভাগ নথিগুলো জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করতে বাধ্য হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে যথেষ্ট সমর্থন পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে উচ্চকক্ষ সিনেটে এটি পাস হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে যথেষ্ট সমর্থন পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে উচ্চকক্ষ সিনেটে এটি পাস হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।

ডেমোক্র্যাট ও কিছু রিপাবলিকান সদস্য এমন একটি পদক্ষেপের জন্য চাপ দিচ্ছেন, যা জেফরি এপস্টেইনের মামলা–সংক্রান্ত আরও নথি প্রকাশ করতে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগকে বাধ্য করবে।

এপস্টেইন ফাইল ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট নামের এই বিলের উদ্দেশ্য হলো, জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত সব অগোপনীয় নথি, রেকর্ড, চিঠিপত্র এবং তদন্তের তথ্য প্রকাশ করতে বিচার বিভাগকে বাধ্য করা।

শোনা যাচ্ছিল, বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্য দলের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেবেন। আর এর মধ্যেই নিজের অবস্থান বদল করে রিপাবলিকান সদস্যদের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানালেন ট্রাম্প।

রিপাবলিকান প্রতিনিধি টমাস ম্যাসি গতকাল এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রায় ১০০ জন রিপাবলিকান প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিতে পারেন। ম্যাসি এ প্রস্তাবের উদ্য্যোক্তাদের একজন।

আরও পড়ুনজেফরি এপস্টেইনের ব্যক্তিগত ইমেইলে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম১২ নভেম্বর ২০২৫

এপস্টেইন ফাইল ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট নামের এই বিলের উদ্দেশ্য হলো, জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্কিত সব নথি, রেকর্ড, চিঠিপত্র ও তদন্তের তথ্য প্রকাশ করতে বিচার বিভাগকে বাধ্য করা।

ট্রাম্প ফ্লোরিডা থেকে ম্যারিল্যান্ডের জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ বিমানঘাঁটিতে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরে ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট দেন।

ট্রাম্প লিখেছেন, ‘বিচার বিভাগ এরই মধ্যে এপস্টেইন–সংক্রান্ত হাজার হাজার পৃষ্ঠাভর্তি তথ্য জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করেছে। তারা বিভিন্ন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতার (যেমন বিল ক্লিনটন, রিড হফম্যান, ল্যারি সামার্স) সঙ্গে এপস্টেইনের সম্পর্ক খতিয়ে দেখছে। হাউস ওভারসাইট কমিটি আইনগতভাবে যে তথ্য চাইবে, তাই পেতে পারবে—আমার কোনো আপত্তি নেই!’

এপস্টেইনকে ২০০৮ সালে ফ্লোরিডায় ১৮ বছরের কম বয়সী একজন মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যৌনবিষয়ক পণ্য পাচারের অন্য এক মামলায় বিচারের অপেক্ষায় থাকাকালে ২০১৯ সালে কারাগারে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনএপস্টেইন–কাণ্ডে নিজেকে বাঁচাতেই কি বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করলেন ট্রাম্প১৫ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ