শমিত সোম। বাংলাদেশের পাসপোর্টের পর লাল-সবুজের হয়ে খেলতে ফিফার অনুমতিও পেয়ে গেলেন। ২৭ বছর বয়সী শমিত কানাডার অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে ৭টি ও অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলেছেন ৪টি ম্যাচ। কানাডা জাতীয় দলের জার্সিতে খেলা এই তরুণের লাল-সবুজের হয়ে ওঠা নিয়ে লিখেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ
কানাডা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলা শমিত সোম বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য ফিফার অনুমতি পেয়েছেন। ফলে ১০ জুন ঢাকায় এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে বাধা নেই তাঁর। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেলা হামজা চৌধুরীর পর শমিতকে নিয়ে বেশ আগ্রহী ছিলেন দেশের ফুটবল ভক্তরা। বাংলাদেশের ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি স্মরণ করেছেন ভক্তদের। তিনি ২০১৬ সালে কানাডার অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে ৭টি ও ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলেছেন ৪টি ম্যাচ। ২০২০ সালে কানাডার জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেন দুটি ম্যাচ।
বাবা-মায়ের সঙ্গে শ্রীমঙ্গলে
২০২০ সালে শমিত সোম পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে ঘুরে গিয়েছিলেন। তখনও জানতেন না লাল-সবুজের হয়ে ওঠার কথা। ২৭ বছর বয়সী শমিতের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। বাবা মানস সোম ও মা নন্দিতা সোম নব্বইয়ের দশকে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন। সেখানে বেড়ে ওঠা শমিত এখন পেশাদার ফুটবলার, খেলছেন স্থানীয়
ক্যাভালরি ফুটবল ক্লাবে।
ক্যাভালরি কানাডার শীর্ষ পেশাদার ফুটবল লিগের ক্লাব। আলবার্টা
রাজ্যের ক্যালগ্যারিতে অবস্থিত এ
ক্লাবটির নিয়মিত ফুটবলার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শমিত সোম।
একটু পেছনে ফিরে.
প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হিসেবে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হয় ডেনমার্কে জন্ম নেওয়া জামালের। এরপর জাতীয় দলে আসেন ফিনল্যান্ডে জন্ম নেওয়া তারিক কাজী। সর্বশেষ গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরী, যা অতীতের সব উচ্ছ্বাসই ছাপিয়ে গেছে।
লাল-সবুজে যেভাবে আগ্রহ
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ডিজিটাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য অমিত হাসান ২০২৪ সাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শমিতের সঙ্গে বাফুফের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করেন। মূলত কানাডার বাংলাদেশি পাড়ার মানুষদের মাধ্যমে পরিচয় হয়ে অমিত হাসান ও শমিত সোমের। এর আগেও কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। হামজা চৌধুরীর দেশে ফেরায় প্রেক্ষাপট বদলে যায়। শমিত বাফুফেকে সম্মতি জানান। এরপর বাফুফে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
হামজা-শমিতকে নিয়ে লাইনআপ
হামজা চৌধুরীর পর শমিতকে পেয়ে বাড়ল হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার রসদ। ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে কানাডায় বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ ফুটবলারকে পাওয়া যাবে। এতে বাংলাদেশের মাঝমাঠ শক্তিশালী হচ্ছে। আক্রমণভাগে ফাহমিদুল ইসলামের অন্তর্ভুক্তি লাল-সবুজদের আরও সমৃদ্ধ করবে। হামজা চৌধুরীর মতো শমিত সোমও মাঝমাঠের খেলোয়াড়। হামজা চৌধুরী এবং শমিত সোমের পাশে মোহাম্মদ হৃদয়কে হয়তো দেখা যাবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে। তাদের সঙ্গী হতে পারেন দুই সোহেল রানার একজন। তবে একাধিক পজিশনে খেলার দক্ষতাসম্পন্ন হামজা চৌধুরীকে মাঝমাঠের কোন পজিশনে খেলাবেন হাভিয়ের ক্যাবরেরা?
ভিডিও বার্তায় যা বললেন...
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক ভিডিওবার্তায় শমিত বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ ফুটবলের প্রতিনিধিত্ব করতে মুখিয়ে আছি। সবাইকে তাদের অসাধারণ সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। ধন্যবাদ তাদের, যারা প্রক্রিয়া দ্রুত করতে সাহায্য করেছেন আর বাংলাদেশের হয়ে খেলা সম্ভব করে তুলেছেন। ধন্যবাদ।’ আগামী ১০ জুন এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে শমিতের। একইদিনে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো খেলতে নামবেন হামজা চৌধুরী। লাল-সবুজের গর্জন এবার শোনা যাবে ফুটবল মাঠ থেকে!
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল ল ল সব জ র অন র ধ ব জ ত য় দল র ফ টবল ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রত্যন্ত গ্রামের তরুণের কাছে কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সের ফোন, এরপর যা ঘটল
স্কুল বা কলেজে পড়া কোনো কিশোর যদি বন্ধুদের কাছে গিয়ে দাবি করেন, তাঁকে বিরাট কোহলি–এবি ডি ভিলিয়ার্সরা ফোন দিচ্ছেন, তবে সেই বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া কী হবে!
কোথায় ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা কোহলি ও সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা ডি ভিলিয়ার্স আর কোথায় ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্কহীন এক প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে! অজানা–অচেনা এক ছেলের কাছে কোহলি, ডি ভিলিয়ার্সের ফোনের খবর তাই অবিশ্বাসই করার কথা বন্ধুদের। হাস্যকর দাবি আর বাচাল বলে উড়িয়ে দেওয়াটাই বরং স্বাভাবিক। কিন্তু সত্যিকার অর্থেই যদি এমন কিছু ঘটে!
আসলেই ঘটেছে। ঘটেছে মনীশ বিসি নামের একজনের সঙ্গে। মনীশ ছত্তিশগড়ের গারিয়াবান্দ জেলার মাদাগাঁওয়ের বাসিন্দা। তাঁর বয়স এখন বিশের কোঠায়। মনীশ দাবি করেছেন, একটি নতুন সিম কার্ড কিনে চালু করার পর থেকেই তাঁর কাছে কোহলি এবং ডি ভিলিয়ার্সের মতো ক্রিকেট কিংবদন্তিরা ফোন করতে শুরু করেছেন। শুধু এ দুজনই নন, আইপিএলের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আরও কিছু খেলোয়াড়ও ফোন করেছেন তাঁকে।
আরও পড়ুনকোহলি, রোনালদো, মেসি—প্রতিটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে কে কত টাকা পান২৮ জুন ২০২৫একের পর এক তারকার ফোন পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই মনীশ ধরে নেন, কেউ তাঁর সঙ্গে মজা করছেন। তাই ফোনটি তিনি দিয়ে দেন তাঁর এক বন্ধু খেমরাজ বিসিকে। পরে অবশ্য কোহলি–ডি ভিলিয়ার্সদের ফোনকলের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। মূলত ঘটনাচক্রে মনীশের হাতে চলে এসেছিল ভারতীয় ক্রিকেটার ও বেঙ্গালুরু অধিনায়ক রজত পাতিদারের পুরোনো একটি সিম কার্ড। আর সিম কার্ড থেকেই শুরু যাবতীয় বিভ্রান্তির।
রজত পাতিদারের সঙ্গে সেলফি তুলছেন বিরাট কোহলি