গাজীপুরের শ্রীপুরে এক স্কুলছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর হামলাকারীর বাড়িতে আগুন দিয়েছে জনতা। শুক্রবার রাতে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লোহাগাছ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাত ১০টার দিকে হামলার শিকার হয় স্কুলছাত্র জিহাদ হাসান জয়। ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আগুন দেওয়া হয় একই এলাকার মোজাম্মেল 
হকের বাড়িতে।
নিহত জিহাদ হাসান জয় (১৫) ওই এলাকার বোরহান উদ্দিনের ছেলে। সে শ্রীপুর টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এলাকাবাসী জানায়, শুক্রবার বিকেলে জিহাদ হাসান জয় ও তার বন্ধুরা স্থানীয় সরকারবাড়ী মাঠে ফুটবল খেলছিল। খেলা শেষ করে তারা মাঠে বসে বিশ্রাম নেওয়ার সময় একই এলাকার মোজাম্মেল হক (৩৩) সেখানে যান। সে জয়ের বন্ধু একই এলাকার মুদি দোকানি হাবিবুর রহমানের ছেলে জুনায়েদকে হত্যার হুমকি দেন। এর প্রতিবাদ করে জয়। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি হলে মোজাম্মেল চলে যান। জয়ও চলে যায় বাসায়।
কয়েক ঘণ্টা পরই মোবাইল ফোনে কল করে সরকার মার্কেটে যেতে বলে। বন্ধুরা জানায়, রাত ১০টার দিকে পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে সেখানে যায় জয়। এর আনুমানিক ১৫ মিনিট পর মোজাম্মেল সেখানে এসেই জয়কে গালাগালি শুরু করে। এক পর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে জয়ের পেটে আঘাত করে পালিয়ে যান। 
এলাকাবাসীর জয়কে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত ১২টার দিকে মারা যায় জয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মোজাম্মেলের বাড়িতে হামলা চালায় এলাকার লোকজন। এক পর্যায়ে তারা আগুন ধরিয়ে দিলে বাড়ির আসবাব পুড়ে যায়।
মোজাম্মেল এলাকায় সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত। নিহত জয়ের বাবা বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘মোজাম্মেল এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। সে সহযোগীদের নিয়ে আমার নিষ্পাপ ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে। পেটে ছুরিকাঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে অণ্ডকোষেও আঘাত করেছিল তারা।’
এ ঘটনায় বোরহান উদ্দিন বাদী হয়ে শনিবার সকালে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১২ জনকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। আসামি তালিকায় মোজাম্মেল (৩৩), সাগর (৩০) ও আবু বকর সিদ্দিকের (৫৫) নাম আছে। 
শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, এরই মধ্যে ৩ নম্বর আসামি আবু বকর সিদ্দিককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রধান আসামি মোজাম্মেলসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিটিভিতে আবার শোনা যাবে, ‘আমরা নতুন, আমরা কুঁড়ি...’

প্রায় দুই দশকের দীর্ঘ বিরতির পর আবারও ফিরছে নতুন কুঁড়ি। গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজস্ব পেজে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এই খবর শুনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়েছেন—কারও মনে পড়েছে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার স্মৃতি, কারও মনে ভেসে উঠেছে শৈশবের প্রিয় অনুষ্ঠানটির দৃশ্য। ফেসবুকে অনেকে ছবিও শেয়ার করেছেন।
১৯৬৬ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনে প্রথম প্রচারিত হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। অনুষ্ঠানের নাম রাখা হয়েছিল কবি গোলাম মোস্তফার ‘কিশোর’ কবিতা থেকে। যার প্রথম ১৫ লাইন অনুষ্ঠানের সূচনাসংগীত হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে মোস্তফা মনোয়ারের প্রযোজনায় আবার শুরু হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। সে সময় বিটিভির অন্যতম আলোচিত এই অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে শিশু-কিশোরদের স্বপ্নের মঞ্চ। নানা প্রান্ত থেকে উঠে আসা তরুণেরা গান, নাচ, অভিনয়, আবৃত্তি, গল্পবলা, কৌতুকসহ বিভিন্ন শাখায় নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ পান। ২০০৫ সাল পর্যন্ত চলে এ অনুষ্ঠান। পরে নানা কারণে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয় বিটিভি। ২০২০ সালে অনুষ্ঠানটি আবার শুরু করার খবর শোনা গিয়েছিল। কিন্তু পরে বলা হয়, কোভিড মহামারির কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি।
তিন দশকে নতুন অনেক তারকার জন্ম দিয়েছে নতুন কুঁড়ি। অনেকে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, নাট্যাঙ্গন ও সংগীতজগতে নিজস্ব অবস্থান গড়ে তুলেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন তারানা হালিম, রুমানা রশিদ ঈশিতা, তারিন জাহান, মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ইমরোজ তিশাসহ আরও অনেকে। এ তালিকায় আছেন সামিনা চৌধুরীসহ অনেক জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীও।

নতুন কুঁড়ির এ ছবিটি অভিনেত্রী শাওন ফেসবুকে শেয়ার করেছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ