অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলো। কিন্তু লড়াই এখনও বাকি। সোমবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
মাহফুজ আলম লিখেছেন, মুজিববাদের সাংস্কৃতিক রাজনীতি ও রাজনৈতিক অর্থনীতিকে পরাস্ত করতে হবে। ফ্যাসিবাদের ফলে সৃষ্ট সামাজিক ফ্যাসিবাদ দূরীভূত করতে হবে। মজলুম জনগোষ্ঠীকে জালিম হয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। বরং সবার অধিকার ও ন্যায়বিচারের পক্ষে থাকতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, রাষ্ট্রকে নতুন করে গড়ে তুলতে অভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তিকে দূরদর্শী ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। আদর্শিক বিরোধ, নির্বাচনি প্রতিযোগিতা এবং নানাবিধ টানাপোড়েন থাকবে, স্বাভাবিক। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, যুগপৎভাবে কিংবা আলাদা হয়ে হলেও সর্বাত্মক গণমুখী লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
তথ্য উপদেষ্টা লিখেছেন, একাত্তর পরবর্তী আওয়ামী লীগ মুজিববাদের মাধ্যমে রাষ্ট্রগঠনকে বাধাগ্রস্ত করেছিল এবং রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া করে তুলেছিল। লীগমুক্ত বাংলাদেশে রাষ্ট্রগঠন এবং শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা না করতে পারলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এখনও গায়েবি মামলা ও মৃত ব্যক্তিকে আসামি করা হচ্ছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, বিএনপি সরকারের সময় কিছু কিছু এনজিও গণগ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। বিএনপির দাবি অনুসারে বিগত সরকারের আমলে ৬০ লাখ গায়েবি মামলা হয়েছে। এর ৯৯ শতাংশই বাদী পুলিশ। এখনও গায়েবি মামলা হচ্ছে, মৃত ব্যক্তি ও বিদেশে অবস্থানরতদেরও আসামি করা হচ্ছে। কিছু কিছু বিএনপির নাম দিয়ে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে এ মামলাগুলো হচ্ছে। এখন এনজিওগুলো কথা বলছে না কেন– প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আজ রোববার কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত পিআইএল পর্যালোচনা কর্মশালায় এসব কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, গত ৯ মাসে পুলিশ একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করেনি। কয়েক বছর ধরে যে গুমের সংস্কৃতি ছিল, বর্তমান সরকার আসার পর একটিও গুমের ঘটনা ঘটেনি।
দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েক বছরে সাড়ে ৪ হাজার মানুষ বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। অনেক এনজিও এবং এনজিও ব্যক্তিত্ব আছেন, তারা কথা বলেন; কিন্তু সোচ্চার হন না। সুতরাং এ সমাজ পরিবর্তনের জন্য যে দায়বদ্ধতা প্রয়োজন, তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
শুক্রবার শুরু হওয়া এ কর্মশালায় আজ সমাপনী দিনে সভাপতিত্ব করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া। অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিচারপতি আয়নুন নাহার সিদ্দিকা, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও বেলার প্রধান নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) তাসলিমা ইসলাম। এ কর্মশালার আয়োজন করে বেলা ও এএলআরডি।
১০৬৮টি সংখ্যালঘুর ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা
গত ৫ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত হামলার শিকার হয়েছে এক হাজার ৬৮টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসবের মধ্যে ৫০৬টি স্থাপনার মালিক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৯টি জেলায় আক্রমণ হয়েছে এবং ৩ জেলায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হয়েছে। নিহত হয়েছেন দু’জন সংখ্যালঘু।
কর্মশালায় এএলআরডির প্রোগ্রাম ম্যানেজার অ্যাডভোকেট রফিক আহমেদ সিরাজীর উপস্থাপন করা প্রবন্ধে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কর্মশালায় সরকারি আইন কর্মকর্তা, আইনজীবী এবং এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।