ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাইলেন শাখা ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা অবস্থান নিয়ে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।

এর আগে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল থেকে বের হয়ে রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হতে থাকেন। এসময় তারা ‘একাত্তরের শহীদরা, লও লও সালাম’, ‘চব্বিশের শহীদরা, লও লও সালাম’, ‘একাত্তরের বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে আমি কে, বাংলাদেশি বাংলাদেশি’, ‘পাকিস্তানের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’—স্লোগান দেন।

কর্মসূচির আয়োজক বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সাকিব বিশ্বাস বলেন, শাহবাগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রোগ্রামে বাংলাদেশবিরোধীরা বাংলাদেশের অবমাননা, বাংলাদেশি জাতিসত্তার প্রশ্নে নিজেদের দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। তারই প্রেক্ষিতে আমরা এখানে একত্র হয়েছি। জাতীয় সংগীতের অবমাননা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র যদি ব্যবস্থা নেয় আমরা তাদের পক্ষে থাকবো।

ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বলেন, বাংলাদেশে যদি এখনও মুক্তিযুদ্ধকে আঘাত করা হয় তাহলে রাজনৈতিক মত নির্বিশেষে মানুষ এখনও প্রতিরোধ করতে জানে, স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে এটা জানিয়ে দিতে হবে। একটা জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ করতে করতে কৃষক দেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে। জাতীয় সংগীতে কী সমস্যা আছে সেটা তারা বলুক। আসলে বিষয়টা শুধু জাতীয় সংগীত না, বিষয়টা জাতীয় পতাকা-মুক্তিযুদ্ধও। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি ৫৫ বছরেও পরাজয় মানতে নারাজ এবং তারা মনে করে চব্বিশ তারা ঘটিয়েছে। এটা বিপদজ্জনক। কাজে চব্বিশের পক্ষে-অভ্যুত্থানের পক্ষে যারা ছিল তারা স্বাধীনতাবিরোধীদের আস্ফালন দেখে শঙ্কিত। তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় হয়েছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, একাত্তর সালে যারা পাকিস্তানপন্থি ছিল, বাংলাদেশবিরোধী ছিল তারা বিভিন্ন উৎ পেতে আছে, সুযোগ পেলে আবারো একাত্তরের সবচেয়ে বেশি বিরোধী ছিল সেই বিরোধিতা এখনও করতে চায়। আমরা বার্তা দিতে চাই, এখন আর সেই সুযোগ নাই।

এ সময় ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সহসভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন শাওন, বিএম কাউছার, সাংগঠনিক সম্পাদক নুর আলম ভূইয়া ইমন, ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি আরমানুল হক, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও মুখপাত্র আশরেফা খাতুন, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদেরসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১০ মে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দাবিতে শাহবাগে অবরোধ চলাকালে জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়ার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ স কর য

এছাড়াও পড়ুন:

পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক

৭ বছরের বিরতির পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন নেতৃত্ব।

তবে পূজার ছুটি শেষ না হওয়ায় এখনও হয়নি অভিষেক ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ফলে দায়িত্বভার নিতে পারছেন না নবনির্বাচিতরা।

আরো পড়ুন:

গকসুর জিএস, এজিএসের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি, পুনর্নির্বাচন দাবি

চাকসু নির্বাচন: দুই নারী প্রার্থীকে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজার পর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের অভিষেক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। এতে নির্বাচনের পর যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা এখন রূপ নিয়েছে অপেক্ষার আবহে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ২৫ সেপ্টেম্বর দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ৭ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেন। ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, প্রার্থীদের প্রচারণা আর ভোটের দিন ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তোলে।

ভোট শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলেও আনুষ্ঠানিক অভিষেক না হওয়ায় এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি তারা।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা আক্তার বলেন, “গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলেও নির্বাচিত সদস্যরা এখনও শপথ গ্রহণ করেননি। এই বিলম্বের সুযোগে কিছু মহল নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে সফল করতে এবং অপপ্রচার রোধে নির্বাচিত সদস্যদের দ্রুত শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারেন।”

সদ্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান বলেন, “নির্বাচনের পরের দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল এবং দুর্গাপূজার ছুটির কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন পূজার ছুটির পর যতদ্রুত সম্ভব অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “ছুটি শেষে শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।”

২০১৩ সালে প্রথমবার গকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর চতুর্থ নির্বাচনে সম্পাদকীয় ও অনুষদ প্রতিনিধি মিলিয়ে মোট ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৫৮ জন প্রার্থী। ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৭৬১ জন।

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইন্দোনেশিয়ায় স্কুল ভবন ধস: ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও আটকা ৯১ জন
  • বাজেট বিল নিয়ে অচলাবস্থা, শাটডাউনের পথে যুক্তরাষ্ট্র
  • পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক