ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত
Published: 12th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাইলেন শাখা ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা অবস্থান নিয়ে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।
এর আগে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল থেকে বের হয়ে রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হতে থাকেন। এসময় তারা ‘একাত্তরের শহীদরা, লও লও সালাম’, ‘চব্বিশের শহীদরা, লও লও সালাম’, ‘একাত্তরের বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে আমি কে, বাংলাদেশি বাংলাদেশি’, ‘পাকিস্তানের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’—স্লোগান দেন।
কর্মসূচির আয়োজক বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সাকিব বিশ্বাস বলেন, শাহবাগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রোগ্রামে বাংলাদেশবিরোধীরা বাংলাদেশের অবমাননা, বাংলাদেশি জাতিসত্তার প্রশ্নে নিজেদের দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। তারই প্রেক্ষিতে আমরা এখানে একত্র হয়েছি। জাতীয় সংগীতের অবমাননা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র যদি ব্যবস্থা নেয় আমরা তাদের পক্ষে থাকবো।
ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বলেন, বাংলাদেশে যদি এখনও মুক্তিযুদ্ধকে আঘাত করা হয় তাহলে রাজনৈতিক মত নির্বিশেষে মানুষ এখনও প্রতিরোধ করতে জানে, স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে এটা জানিয়ে দিতে হবে। একটা জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ করতে করতে কৃষক দেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে। জাতীয় সংগীতে কী সমস্যা আছে সেটা তারা বলুক। আসলে বিষয়টা শুধু জাতীয় সংগীত না, বিষয়টা জাতীয় পতাকা-মুক্তিযুদ্ধও। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি ৫৫ বছরেও পরাজয় মানতে নারাজ এবং তারা মনে করে চব্বিশ তারা ঘটিয়েছে। এটা বিপদজ্জনক। কাজে চব্বিশের পক্ষে-অভ্যুত্থানের পক্ষে যারা ছিল তারা স্বাধীনতাবিরোধীদের আস্ফালন দেখে শঙ্কিত। তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় হয়েছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, একাত্তর সালে যারা পাকিস্তানপন্থি ছিল, বাংলাদেশবিরোধী ছিল তারা বিভিন্ন উৎ পেতে আছে, সুযোগ পেলে আবারো একাত্তরের সবচেয়ে বেশি বিরোধী ছিল সেই বিরোধিতা এখনও করতে চায়। আমরা বার্তা দিতে চাই, এখন আর সেই সুযোগ নাই।
এ সময় ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সহসভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন শাওন, বিএম কাউছার, সাংগঠনিক সম্পাদক নুর আলম ভূইয়া ইমন, ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি আরমানুল হক, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও মুখপাত্র আশরেফা খাতুন, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদেরসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১০ মে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দাবিতে শাহবাগে অবরোধ চলাকালে জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়ার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ স কর য
এছাড়াও পড়ুন:
‘তাণ্ডব’ মুক্তির পর দর্শকের ভালোবাসা দশ গুণ বেড়েছে
সাবিলা নূর। অভিনেত্রী ও মডেল। গেল ঈদে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তাণ্ডব’। চলচ্চিত্রে অভিষেক, অভিনয় নিয়ে ভাবনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে এ অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এমদাদুল হক মিলটন
চলচ্চিত্রে অভিষেক হলো, কেমন লাগছে?
‘তাণ্ডব’ সিনেমার মুক্তির পর থেকে এখনও ঘোরের মধ্যে আছি। যে সিনেমা নিয়ে এতদিন কাজ করেছি, সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভালো কিছু করার চেষ্টায় ছিলাম– সেটি এখন দর্শক দেখছেন। এসব ভেবে অন্যরকম এক অনূভূতি হচ্ছে, যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। ‘লিচুর বাগান’, ‘তোমাকে ভেবে’ গানটি যখন বড় পর্দায় দেখেছি, তখন আসলে অন্যরকম ভালোলাগা ছুঁয়ে গিয়েছিল আমায়। দর্শক সিনেমাটি খুব সুন্দরভাবে গ্রহণ করেছেন।
দর্শকের সঙ্গে নিজের প্রথম সিনেমা দেখার অনুভূতি কেমন ছিল?
সিনেমা মুক্তির প্রথম দিনই দর্শকের সঙ্গে হলে বসে সিনেমাটি দেখেছি। এটি আমার জন্য স্মরণীয় একটি দিন ছিল। দর্শকের সঙ্গে সিনেমা দেখার অনুভূতিই অন্যরকম। সরাসরি তাদের প্রতিক্রিয়া পেয়েছি।
শাকিবের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে যদি একটু বলতেন?
শাকিব খানের সঙ্গে প্রথমে কাজ করতে গিয়ে একটু নার্ভাস ছিলাম। প্রথম দিন, প্রথম দৃশ্যেই তাঁর সঙ্গে অভিনয়! একটু ভয়ও কাজ করছিল। তিনি সেটে আমার জন্য পরিবেশ সহজ করে দিলেন। শুটিংয়ের সময় কখনও বুঝতে দেননি, আমার সঙ্গে এটি তাঁর প্রথম কাজ। বরং যে আন্তরিকতা, সহযোগিতা আর সম্মান পেয়েছি, তা আজীবন স্মৃতিতে থাকার মতো। এত বড় মেগাস্টার অথচ সহযোগিতাপরায়ণ– এটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর কাছে আমাদের অনেক কিছুই শেখার আছে। শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করা আমার অভিনয়জীবনের অন্যতম সেরাপ্রাপ্তি।
সাবিলা নূর থেকে ‘নিশাত’ হয়ে ওঠার সফরটি কেমন ছিল?
খুবই রোমাঞ্চকর। নির্মাতা রায়হান রাফিসহ আমার টিমের বেশ সহযোগিতা পেয়েছি। নাটকে আমি অনেক ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছি। বিভিন্ন ধরনের চেহারায় আমাকে দেখা গেছে। দর্শক যখন আমাকে হলে গিয়ে দেখবেন, তখন যেন একটা নতুন লুকে তারা আবিষ্কার করেন– এমন ভাবনা ছিল মাথায়। লুকের ব্যাপারে অনেকবার টিমের সঙ্গে মিটিং করেছি।
শাকিব খানের পাশাপাশি সঙ্গে জয়া আহসান, আফজাল হোসেন, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, সালাউদ্দিন লাভলু, ফজলুর রহমান বাবু, রোজী সিদ্দিকীদের মতো এত গুণী অভিনয়শিল্পীরা ছিলেন সিনেমায়। তাদের সঙ্গে একই সিনেমায় অভিনয় করেছি। এর চাপ তো ছিল। এ কারণে নিশাত চরিত্রকে পর্দায় ফুটিতে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল।
অভিষেক হলো, এখন নিশ্চয়ই বড় পর্দায় নিয়মিত দেখা যাবে?
সিনেমায় অভিষেক ভালো হয়েছে। তাই সিনেমায় নিয়মিত অভিনয় করার ইচ্ছা আছে। বাকিটা নির্ভর করছে দর্শক ও নির্মাতাদের ওপর। এখন আমাদের দেশে মানসম্পন্ন সিনেমা হচ্ছে। নির্মাতারা বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে কাজ করছেন। আশা করছি, আগামীতে আরও ভালো সিনেমায় কাজ করার সুযোগ মিলবে।
ছোট পর্দায় অভিনয় নিয়ে কী ভাবছেন?
সত্যি কথা বলতে কী, আমি এখনও সেভাবে মাধ্যমের কথা চিন্তা করিনি। এখনও সিনেমাটি চলছে। আমার লক্ষ্য সব সময় ভালো কাজ করার। আমার সিনেমার ক্যারিয়ার সুন্দরভাবে শুরু হয়েছে– এটি ছোট পর্দার কাজের কারণেই হয়েছে। ছোটপর্দার দর্শকরা যে ভালোবাসা দিয়েছেন, তাদের কারণেই এ পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস পেয়েছি। সেখানে আমার কৃতজ্ঞতা অবশ্যই কাজ করবে। ছোটপর্দায় বাছাই করে, ভালো লাগার মতো কিছু চরিত্র থাকলে অবশ্যই অভিনয় করব।
ঈদে মুক্তি পাওয়া অন্য সিনেমা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
সব সিনেমাই বেশ ভালো করেছে। ভিন্ন ভিন্ন জনরার সিনেমা হয়েছে। তাসনিয়া ফারিণ ছোটপর্দার অনেক দিন কাজ করেছেন। এখন বড় পর্দায় কাজ করছেন। আমি তাঁকে শুভকামনা জানিয়েছি। ‘উৎসব’ সিনেমাটিও ভালো লেগেছে। এ সিনেমায় গুণী অভিনেতাদের দেখতে পেয়েছি। এতে সাদিয়া আয়মান, সৌম্যও খুব ভালো করেছেন। নারীকেন্দ্রিক সিনেমা ‘এশা মার্ডার’ দর্শক পছন্দ করেছেন। এখন যারা কাজ করছি কিংবা ভবিষ্যতে যারা ভালো কাজ করতে চাই, তাদের জন্য এটি ভালো সংবাদ। দুই ঈদের সিনেমারই সাফল্য এসেছে। এতে অভিষ্যতে আমরা ভালো কাজের মোটিভেশন পাব। এটি ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুবই ভালো একটি ব্যাপার।
শুটিংয়ে ফিরবেন কবে?
এখন বলতে পারছি না। কয়েকটা গল্প নিয়ে কথা চলছে। পাকাপাকি হলে অবশ্যই জানাতে পারব।
দেখতে দেখতে অভিনয়ে এক দশক পার করে ফেলেছেন। পেছনে ফিরে তাকালে কী দেখতে পান?
ছোটপর্দা কিংবা ওটিটিতে আমি যে কাজগুলো করেছি, এসব কাজের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের বেশ সাপোর্ট পেয়েছি বলেই এতদূর আসতে পেরেছি। দর্শকের কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়েছি। এ জন্য অনেক স্ট্রাগলও করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে আজকে আমি। আগামীতে দর্শকদের যেন হতাশ না করি, এটাই আমরা চাওয়া থাকবে।
দর্শকদের উদ্দেশে কিছু বলবেন...
তাদের তো অনেক বড় ধন্যবাদ জানাতে চাই। ‘লিচুর বাগান’-এ গানটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই তারা আমাকে অসম্ভব রকম ভালোবাসা দিয়েছেন। সিনেমাটি মুক্তির পর তাদের ভালোবাসা দশ গুণ বেড়েছে। দর্শকের এই ভালোবাসা আমাকে ভীষণ শক্তি দেয় ভবিষ্যতে ভালো কাজ করার জন্য। আশা করছি, আগামীতে তারা আমার সঙ্গে এভাবেই থাকবেন।