নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আলোচিত ফুড ভ্লগার মিথুনসহ (৩৬) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাতে নগরীর শহীদ নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন- মিথুনের চাচাতো ভাই জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান (২১) ও জিসানের বাবা মোহাম্মদ হানিফ (৫০)।
এদিকে আইভীকে গ্রেপ্তারের পর নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২৫২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার শওকত মিথুন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে জনমত গঠনে তার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল বলেন, শওকত মিথুন গণঅভ্যুত্থানের সময়ে আন্দোলনের সপক্ষে ভিডিও তৈরি করেন। যেগুলো এখনও ফেসবুকে রয়েছে। সেই মিথুনকে গ্রেপ্তার দুঃখজনক। মামলায় মিথুনের স্ত্রী মাহমুদা আক্তারকেও আসামি করা হয়েছে।
মিথুনের বড়ভাই শাহাদাত হোসেন মামুন বলেন, ‘ঘটনার রাতে কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জ ফিরছিল মিথুন। অনেক রাতে সে বাড়িতে ফেরে। ঘটনার সময় সে ছিলই না।’
এদিকে সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারের পর নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হওয়া মামলায় স্থানীয় অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক-আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীসহ ২৫২ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন মৃধা বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি হিসেবে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সহসভাপতি কামরুল হুদা, আইভীর মামাতো ভাই গোলাম সারোয়ার, চঞ্চলসহ ৫২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০০ জনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার সমর্থকরা বাধা প্রদান করেন এবং সড়কে ট্রাক দিয়ে বালি ফেলে ও বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে রাতভর পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দিকে নেওয়ার পথে বঙ্গবন্ধু সড়কের কালিরবাজার মোড়ে আইভীর সমর্থক, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাধা সৃষ্টি করেন। পরে তারা আইভীকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়েন। এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) তাসমিন আক্তার বলেন, ‘সাবেক মেয়র আইভীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশ বাধার সম্মুখীন হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণ, ইন্টেলিজেন্স তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই-বাছাই করে আসামিদের শনাক্ত করে মামলায় এজাহারভুক্ত করা হয়েছে।’
উল্লেখ, গত ৮ মে রাতে আইভীকে গ্রেপ্তার করতে নগরীর দেওভোগে তার পৈতৃক বাড়ি ‘চুনকা কুটিরে’ গেলে তার সমর্থক ও স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দেন। আইভীও ‘রাতের আঁধারে’ কোথাও যাবেন না বলে জানান। পরে সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ড স ল ন হ য় ৎ আইভ গ র প ত র কর ন র য়ণগঞ জ আইভ ক
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে মুকুলের উপর হামলার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলকে মারধর ও লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছে নাসিক ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মী ও তার অনুসারীরা।
সোমবার (৩০ জুন) বিকেল ৪টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বন্দর উপজেলার মদনপুর অংশে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে নেতাকর্মীরা। এতে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীসহ বন্দর উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।
প্রায় একঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখলে মহাসড়কের উভয় লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করার আশ্বাস দিলে বিকেল ৫টায় নেতাকর্মীরা অবরোধ তুলে নেয়। অবরোধ কর্মসূচি থেকে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে আল্টিমেটাম দেন মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। অন্যথায় ফের মহাসড়ক অবরোধ করার হুশিয়ারি দেন।
এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোরশেদ বলেন, সাবেক চেয়ারম্যানের উপর হামলার প্রতিবাদে তার অনুসারীরা মহাসড়ক বন্ধ করেছিল। ফলে মহাসড়কের উভয় লেনে যানজট সৃষ্টি হয়। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে সড়ক থেকে সরিয়ে দেই। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এর আগে গত ২৯ জুন দুপুরে বন্দর উপজেলার হরিপুর এলাকায় ৪১২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংস্কারে শ্রমিক নিয়োগের টেন্ডার পেয়ে সেখানে কয়েকজন পুলিশসহ সাবেক চেয়ারম্যান মুকুল ও তার লোকজন যায়।
এসময় তারা গাড়ি থেকে নামার পরপরই সেখানে থাকা সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বজলুর রহমানসহ লোকজন তাকে গালমন্দ করে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা তাকে বিবস্ত্র করে।
এসময় সেখানে থাকা পুলিশ তাদের বাধা দিয়ে মুকুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করায়। এরপর তাকে শহরের সিলভার ক্রিসেন্টে নামের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।