আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধার ঘটনায় মামলা, ‘ফুড ভ্লগার’ মিথুনসহ গ্রেপ্তার ৩
Published: 13th, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আলোচিত ফুড ভ্লগার মিথুনসহ (৩৬) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাতে নগরীর শহীদ নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন- মিথুনের চাচাতো ভাই জান্নাতুল ফেরদৌস জিসান (২১) ও জিসানের বাবা মোহাম্মদ হানিফ (৫০)।
এদিকে আইভীকে গ্রেপ্তারের পর নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২৫২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার শওকত মিথুন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে জনমত গঠনে তার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল বলেন, শওকত মিথুন গণঅভ্যুত্থানের সময়ে আন্দোলনের সপক্ষে ভিডিও তৈরি করেন। যেগুলো এখনও ফেসবুকে রয়েছে। সেই মিথুনকে গ্রেপ্তার দুঃখজনক। মামলায় মিথুনের স্ত্রী মাহমুদা আক্তারকেও আসামি করা হয়েছে।
মিথুনের বড়ভাই শাহাদাত হোসেন মামুন বলেন, ‘ঘটনার রাতে কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জ ফিরছিল মিথুন। অনেক রাতে সে বাড়িতে ফেরে। ঘটনার সময় সে ছিলই না।’
এদিকে সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারের পর নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হওয়া মামলায় স্থানীয় অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক-আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীসহ ২৫২ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন মৃধা বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি হিসেবে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সহসভাপতি কামরুল হুদা, আইভীর মামাতো ভাই গোলাম সারোয়ার, চঞ্চলসহ ৫২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০০ জনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার সমর্থকরা বাধা প্রদান করেন এবং সড়কে ট্রাক দিয়ে বালি ফেলে ও বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে রাতভর পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের দিকে নেওয়ার পথে বঙ্গবন্ধু সড়কের কালিরবাজার মোড়ে আইভীর সমর্থক, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাধা সৃষ্টি করেন। পরে তারা আইভীকে বহনকারী পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়েন। এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) তাসমিন আক্তার বলেন, ‘সাবেক মেয়র আইভীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশ বাধার সম্মুখীন হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণ, ইন্টেলিজেন্স তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই-বাছাই করে আসামিদের শনাক্ত করে মামলায় এজাহারভুক্ত করা হয়েছে।’
উল্লেখ, গত ৮ মে রাতে আইভীকে গ্রেপ্তার করতে নগরীর দেওভোগে তার পৈতৃক বাড়ি ‘চুনকা কুটিরে’ গেলে তার সমর্থক ও স্থানীয় এলাকাবাসী বাধা দেন। আইভীও ‘রাতের আঁধারে’ কোথাও যাবেন না বলে জানান। পরে সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ড স ল ন হ য় ৎ আইভ গ র প ত র কর ন র য়ণগঞ জ আইভ ক ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আমীর হোসেন (৫০) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক হুমায়রা তাসমিন এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আমীর হোসেন জামালপুর জেলার ইসলামপুরের মহলগিরী এলাকার শাহ জামালের ছেলে। রায় ঘোষণার সময়ে তিনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. কাইউম খান জানান, রূপগঞ্জের পশ্চিমগাঁও এলাকার মো. আবু তালেবের মেয়ে বিলকিছ বেগমের সঙ্গে আমীর হোসেনের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত।
২০০৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে আমীর হোসেন বিলকিছ বেগমকে তাদের বাড়ির পাশে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনায় বিলকিছের বাবা আবু তালেব রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত এই রায় দেন।