আমু ইনু মেনন আনিসসহ সাত জন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার
Published: 14th, May 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থানার পৃথক সাত মামলায় সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননসহ সাত জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়াও শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ (মোস্তাকীন) হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলমের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৪ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো.
গ্রেপ্তার দেখানো অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু।
এদের মধ্যে আনিসুল হককে ৩ মামলায়, আমির হোসেন আমু, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলককে ২ মামলায়, মনিরুল ইসলাম মনুকে তিন মামলায়, শাজাহান খানকে ১ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সব মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক। এর মধ্যে হত্যা এবং হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির দিন ১৪ মে ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এদিকে গত ১২ এপ্রিল জাহাঙ্গীর আলমের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই'র পরিদর্শক তাপসচন্দ্র পন্ডিত। আদালত রিমান্ডের বিষয়ে শুনানির জন্য ১৪ মে ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ফারজানা ইয়াসমিন রাখী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। অসুস্থ বিবেচনা করে প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাদের প্রার্থনা করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত জাহাঙ্গীর আলমের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ (মোস্তাকীন) মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। ওইদিন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট এলাকায় ছাত্রজনতার ওপর আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। আসামিদের ছোড়া বুলেটে ঘটনাস্থলে ভিকটিম শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ৫ সেপ্টেম্বর বংশাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
ঢাকা/এম/
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ হ ঙ গ র আলম র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান আবারো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারে: আইএইএ প্রধান
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সতর্ক করে বলেছেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর মার্কিন ও ইসরায়েলি হামলার পরেও ইরান সম্ভবত কয়েক মাসের মধ্যে আবার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে সক্ষম হবে।
গ্রোসি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন।রবিবার (২৯ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা থেকে বিরত রাখতে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে তেল আবিব। যদিও ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করে আসছে।
আরো পড়ুন:
খামেনির বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বিষোদগার, আবারো হামলার হুমকি
ইরানের ওপর হামলাকে ঐতিহাসিক সফলতা বললেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ইরানের সঙ্গে ইসরায়েল পুরোদমে সংঘাত শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্রও তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বোমা হামলার ফলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাকে ‘গুরুতর’ বলে বর্ণনা করেছেন, যদিও বিস্তারিত তথ্য এখনও জানা যায়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কয়েক দশকের জন্য পিছিয়ে পড়েছে।
কিন্তু আইএইএ মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, হামলার পরও ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি এবং এখনও বেশ কিছু পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, “কয়েক মাসের মধ্যে ইরান পুনরায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে পারে, এমনকি হয়তো তার চেয়ে কম সময়ের মধ্যেও।”
তিনি আরো জানান, হামলার আগে ইরানের কাছে উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের ৪০৮.৬ কিলোগ্রাম মজুত ছিল, যা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ। এই মাত্রা বেসামরিক ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি, যদিও অস্ত্র গ্রেডের চেয়ে কম। তবে যদি এটিকে আরও পরিশোধন করা হয় (৯০ শতাংশ মাত্রায়), তবে তাত্ত্বিকভাবে নয়টিরও বেশি পরমাণু বোমা তৈরি করা সম্ভব।
সিবিএস নিউজকে গ্রোসি বলেন, “আমরা জানি না এই উপাদান এখন কোথায় রয়েছে। সুতরাং, এটি ধ্বংস হয়েছে বা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা যাচাই করা জরুরি।”
এদিকে, গতকাল শনিবার আইএইএ মহাপরিচালক গ্রোসির ওপর ইরানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সংস্থাটির নজরদারি ক্যামেরা স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আরাঘচি বলেছেন, “আমরা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে (আইএইএ) আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ক্যামেরা স্থাপনের অনুমতি দেব না এবং সংস্থার প্রধানকে ইরানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।”
এর আগে গত বুধবার ভোটাভুটির মাধ্যমে আইএইএর সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিত করার প্রস্তাব পাস করে ইরানি পার্লামেন্ট। পর দিন বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাবের অনুমোদন দেয় দেশটির সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা গার্ডিয়ান কাউন্সিল।
শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গ্রোসির ওপর ইরানে নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছেন এবং এটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন।
রুবিও এক্স-এ লিখেছেন, “আমরা ইরানে আইএইএর তদন্ত ও পর্যবেক্ষণ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি এবং মহাপরিচালক ও আইএইএ-র তাদের নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের জন্য তাদের প্রশংসা করি।”
তিনি বলেন, “আমেরিকা ইরানকে আইএইএ কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা প্রদানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।”
ঢাকা/ফিরোজ