সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, ‘‘জুলাই অভ্যুত্থানে স্কাউটদের মধ্য থেকে ৮ জন শহীদ হয়েছে, যা ভাষা আন্দোলনে শহীদ সংখ্যার দ্বিগুণ। অথচ তাদের কথা ইতিহাসে স্থান পাচ্ছে না।’’

বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ স্কাউটস-এর জাতীয় সদর দপ্তরে গার্লস-ইন-স্কাউটিং দিবস, আন্তর্জাতিক নারী দিবস এবং আন্তর্জাতিক মা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন  প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশ স্কাউটস একটি অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। স্কাউটিং শিশু-কিশোরদের শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক বিকাশ ঘটিয়ে চরিত্রবান, আত্মনির্ভরশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।’’

নারীর প্রতি অসম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গি সমাজ থেকে দূর করতে আন্তর্জাতিক দিবসগুলোর তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন যদি আমরা নারীদের সম্মান দিতে পারি, তবে আলাদা করে নারী দিবসের প্রয়োজন থাকবে না। কিন্তু এখনও সমাজে নারীর চলার পথে নানা বাধা রয়েছে, যা প্রতিক্রম করতেই এসব দিবসের আয়োজন।”

গণআন্দোলনে তরুণদের ভূমিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনে তরুণদের, বিশেষ করে স্কাউটদের ভূমিকা ছিল। আন্দোলনে স্কাউটদের মধ্য থেকে ৮ জন শহীদ হয়েছে, যা ভাষা আন্দোলনের শহীদ সংখ্যার দ্বিগুণ। অথচ তাদের কথা ইতিহাসে স্থান পাচ্ছে না। এটি আমাদের আত্মজিজ্ঞাসার কারণ হওয়া উচিত।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘ছাত্ররা মেধাভিত্তিক সমাজ ও সমান সুযোগ চেয়েছে। তাদের সেই যুক্তিসঙ্গত আন্দোলনে মেয়েরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে, রক্ত দিয়েছে, সাহসিকতা দেখিয়েছে। অথচ তারা হারিয়ে যাচ্ছে। যেমন হারিয়ে গিয়েছিল ৭১-এর নারী মুক্তিযোদ্ধারাও।’’

অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ বিষয়ক স্কাউটদের আঁকা বিভিন্ন চিত্রকর্ম পরিদর্শন করেন এবং নারীর প্রতি সহিংসতা ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধে একটি সোশ্যাল ফোর্স গঠনের ঘোষণা দেন ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গার্লস-ইন-স্কাউটিং জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক মাহেনুর জাহান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ স্কাউটস-এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ শামসুল হক এবং গার্লস-ইন-স্কাউটিং জাতীয় উপকমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুন্নাহার রুপা।


 

ঢাকা/এএএম//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

দুই যুগে ৪ লক্ষাধিক থ্যালাসেমিয়া রোগীর পাশে ছিল কোয়ান্টাম

২০০০ সালে শুরুর পর থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত রক্ত ও রক্ত উপাদান সরবরাহের মাধ্যমে ১৭ লক্ষাধিক মুমূর্ষু রোগীর পাশে দাঁড়াতে পেরেছে কোয়ান্টাম ল্যাব। এর মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত দুই যুগে সংগৃহীত মোট রক্তের চার ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ৪ লক্ষাধিক ইউনিট রক্ত বা রক্ত উপাদান সরবরাহ করে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পাশে থাকতে পেরেছে কোয়ান্টাম।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবী সংঘ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত স্বেচ্ছা রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান আলোচকরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ৩ বার রক্তদান করে লাইফ লং, ১০ বারের দানে সিলভার, ২৫ বারে গোল্ডেন এবং ৫০ বার রক্তদান করে প্লাটিনাম ক্লাবের সদস্য হয়েছেন- এমন তিন শতাধিক স্বেচ্ছা রক্তদাতাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রধান অতিথি এ সময় তাদের হাতে সম্মাননা সনদ, ক্রেস্ট ও মেডেল তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, রক্তদানের মতো মহৎ এ সেবার প্রতিদান কোনো মানুষের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। এটি একটি সদকায়ে জারিয়া। এর উত্তম প্রতিদান কেবল স্রষ্টাই দিতে পারেন।
   
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের পরিচালক মোটিভেশন এম রেজাউল হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের কো-অর্ডিনেটর ডা. মনিরুজ্জামান। এ সময় কোয়ান্টাম মেথডের প্রবর্তক শহীদ আল বোখারী মহাজাতকের পক্ষ থেকে সব স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের পক্ষে রক্তদানের অনুভূতি বর্ণনা করেন ২৫ বারের গোল্ডেন রক্তদাতা শফিউর রহমান সাইফ ও লাইফ লং স্বেচ্ছা রক্তদাতা সামিয়া হক তৃষা। এ সময় স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের দেওয়া রক্তপ্রাপ্তির অনুভূতির কথা তুলে ধরেন নিয়মিত রক্তগ্রহীতা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত আসিফা আহসান। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি দেশে রক্ত চাহিদা পুরোপুরি মেটাতে তরুণ স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের মানবিক এ সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান আলোচকরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ