জুলাই অভ্যুত্থানে ৮ জন স্কাউট শহীদ হয়েছে: শারমীন মুরশিদ
Published: 14th, May 2025 GMT
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, ‘‘জুলাই অভ্যুত্থানে স্কাউটদের মধ্য থেকে ৮ জন শহীদ হয়েছে, যা ভাষা আন্দোলনে শহীদ সংখ্যার দ্বিগুণ। অথচ তাদের কথা ইতিহাসে স্থান পাচ্ছে না।’’
বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ স্কাউটস-এর জাতীয় সদর দপ্তরে গার্লস-ইন-স্কাউটিং দিবস, আন্তর্জাতিক নারী দিবস এবং আন্তর্জাতিক মা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশ স্কাউটস একটি অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। স্কাউটিং শিশু-কিশোরদের শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক বিকাশ ঘটিয়ে চরিত্রবান, আত্মনির্ভরশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।’’
নারীর প্রতি অসম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গি সমাজ থেকে দূর করতে আন্তর্জাতিক দিবসগুলোর তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন যদি আমরা নারীদের সম্মান দিতে পারি, তবে আলাদা করে নারী দিবসের প্রয়োজন থাকবে না। কিন্তু এখনও সমাজে নারীর চলার পথে নানা বাধা রয়েছে, যা প্রতিক্রম করতেই এসব দিবসের আয়োজন।”
গণআন্দোলনে তরুণদের ভূমিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনে তরুণদের, বিশেষ করে স্কাউটদের ভূমিকা ছিল। আন্দোলনে স্কাউটদের মধ্য থেকে ৮ জন শহীদ হয়েছে, যা ভাষা আন্দোলনের শহীদ সংখ্যার দ্বিগুণ। অথচ তাদের কথা ইতিহাসে স্থান পাচ্ছে না। এটি আমাদের আত্মজিজ্ঞাসার কারণ হওয়া উচিত।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ছাত্ররা মেধাভিত্তিক সমাজ ও সমান সুযোগ চেয়েছে। তাদের সেই যুক্তিসঙ্গত আন্দোলনে মেয়েরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে, রক্ত দিয়েছে, সাহসিকতা দেখিয়েছে। অথচ তারা হারিয়ে যাচ্ছে। যেমন হারিয়ে গিয়েছিল ৭১-এর নারী মুক্তিযোদ্ধারাও।’’
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ বিষয়ক স্কাউটদের আঁকা বিভিন্ন চিত্রকর্ম পরিদর্শন করেন এবং নারীর প্রতি সহিংসতা ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধে একটি সোশ্যাল ফোর্স গঠনের ঘোষণা দেন ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গার্লস-ইন-স্কাউটিং জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক মাহেনুর জাহান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ স্কাউটস-এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ শামসুল হক এবং গার্লস-ইন-স্কাউটিং জাতীয় উপকমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুন্নাহার রুপা।
ঢাকা/এএএম//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রায় ঘোষণার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত সরকার: রিজওয়ানা হাসান
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ সোমবার সকালে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে ‘দ্য সোল অব জুট’ নামে এক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
দেশের নাশকতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বিদেশ থেকে কারা ইনফ্লুয়েন্স করেছে, দেশ থেকে কারা ওই বাসটাকে আগুন দেওয়ার জন্য ইনফ্লুয়েন্স করেছে, নামগুলো আপনারা জানেন। তদন্ত করে সরকার যে নামগুলো পাচ্ছে, সে নামগুলোই দিচ্ছে বলে আমার বিশ্বাস। এরপর কারও যদি মনে হয় তাঁর কাছে আরও তথ্য আছে, তাহলে সরকারকে জানান।’
সহিংসতা নিয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকার বিষয়ে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, সহিংসতা, ককটেল মারা এসব ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও আরও একটু দায়িত্বশীল হওয়ার সুযোগ আছে। গণমাধ্যম চাইলে আতঙ্কটা ছড়াতে পারে; আবার যারা এই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত, তাদের নিন্দা করে সহিংসতার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পারে।
গতকাল রোববার রাতে রিজওয়ানা হাসানের বাসায় ককটেল বিস্ফোরণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন ‘আপনার বাসায় ককটেল মারবে আর আপনি নিশ্চিন্ত থাকবেন, তা তো হতে পারে না। তবে আতঙ্কিত হওয়া এক জিনিস, আর নিশ্চিন্ত না থাকা আরেক জিনিস। এবং সতর্ক হওয়া আরেক ব্যাপার। কথা হচ্ছে যে এ রকম একটা শান্ত পরিবেশে যে এ রকম অস্থিতিশীলতা গড়ে তোলা হচ্ছে, এটার ব্যাপারে জনমত গড়ে তুলতে হবে। আপনারা এগিয়ে আসুন। সরকারের যা করার সরকার তা করবে।’
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘যাতে সহিংসতা বৃদ্ধি না পায়, সে জন্য গণমাধ্যম এগিয়ে আসুক। যাতে সহিংসতা বৃদ্ধি না পায় সে বার্তাটা যেন গণমাধ্যম প্রচার করে।’
গতকাল রাত ৯টার দিকে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোড এলাকায় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।