মধ্যপ্রাচ্য সফরে ট্রাম্প, নেতানিয়াহু এবারও নিছকই দর্শক
Published: 14th, May 2025 GMT
ডোনাল্ড ট্রাম্প সবার আগে নেমেছিলেন রিয়াদে। ২০১৭ সালে তাঁর নয়া প্রশাসনের কয়েক মাস না পেরোতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট সৌদি বাদশাহর সঙ্গে বৈঠক করেন। আরব বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নচেষ্টার অংশ ছিল সেটা। তবে সে সফরসূচিতে ইসরায়েলে যাওয়ার কথা না থাকাটা প্রকটভাবে চোখে পড়ে।
আর এখন যখন ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে মধ্যপ্রাচ্য সফরে, একই সমস্যা প্রকট হয়েই রয়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ট্রাম্প। সৌদি আরব ছাড়াও তিনি কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতও সফর করবেন।
হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের এই সফরকে ‘মধ্যপ্রাচ্যে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন’ আখ্যা দিয়েছে। পাশপাশি ‘স্থিতিশীলতা, সুযোগ ও পারস্পরিক সম্মানের একটি যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে ট্রাম্পের এবারের মধ্যপ্রাচ্যের সফরসূচিতেও ইসরায়েলের নাম নেই।
এর আগে ইরানের সঙ্গে আলোচনার ঘোষণা, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে চুক্তি এবং হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার মতো বিষয়ে ইসরায়েলকে একাধিকবার অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এবারের মধ্যপ্রাচ্য সফরেও হয়তো নতুন কোনো চমক আসতে পারে, এমনটা ভেবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন।
‘ফলাফল শূন্য হলে তিনি আসবেন না’বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একটি সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই সফরের সময় ট্রাম্প জেরুজালেম কিংবা তেল আবিবে নামবেন কি না, তা জানতে চেয়েছিলেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। কিন্তু গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট নিজেই সেই ক্ষীণ আশাটুকুও নস্যাৎ করে দেন, যখন তিনি বলেন, ইসরায়েলে থামার কোনো পরিকল্পনা নেই তাঁর।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা অন্য কোনো সময় সেটা করব, কিন্তু এই সফরে সেটা হবে না।’
নেতানিয়াহুর কাছে এমন কিছু নেই, যা ট্রাম্প চান, তাঁর প্রয়োজন কিংবা যা নেতানিয়াহু তাঁকে দিতে পারেন। সৌদি আরব, কাতার বা আরব আমিরাতের কাছে তেমনটা আছে।অ্যালন পিনকাস, ইসরায়েলের সাবেক কূটনীতিকট্রাম্পকে হয়তো ইসরায়েল সফরে রাজি করানো যেত, যদি তিনি এর সুবাদে কিছু একটা বিজয় দেখাতে পারতেন। সেটা গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি, কোনো মানবিক সহায়তার পরিকল্পনা কিংবা যা–ই হোক না কেন।
কিন্তু ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ সম্প্রসারণের জন্য দিন গুনছে। সুতরাং এমন কোনো কিছু প্রাপ্তির সম্ভাবনা নেই। সোমবার হামাসের হাতে জিম্মি এডান আলেক্সান্ডারের মুক্তির সম্ভাবনা সত্ত্বেও একটি সামগ্রিক যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা এখনো অনেক দূরে বলেই মনে হচ্ছে।
ওই সূত্র বলেছে ‘ফলাফল শূন্য হলে তিনি (ইসরায়েলে) আসবেন না।’
সৌদি আরবের রিয়াদে গতকাল মঙ্গলবার দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণে এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে সরকারের চুক্তি
লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এই চুক্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই পক্ষ এ চুক্তিতে সই করে। এতে ডেনমার্ক, বাংলাদেশ সরকার ও বন্দর সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা অংশ নেন।
চুক্তিতে সই করেন এপিএম টার্মিনালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টেইন ভ্যান ডোঙ্গেন ও চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
ডেনমার্কের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইবিএস এপিএম টার্মিনালসের হেড অব ইনভেস্টমেন্ট ভাস্কর সেনগুপ্ত, ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্ডলোসে হ্যানসেন ও বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) ও নৌপরিবহন সচিব নুরুন্নাহার চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনবলেন, ‘এই চুক্তি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতির জন্য বড় অবদান। যাঁদের মধ্যে এ নিয়ে সন্দেহ ছিল, আশা করি, আজ তা দূর হবে।’ তাঁর আরও আশা, এই ধারাবাহিকতায় মোংলা সমুদ্রবন্দর পরিচালনায়ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী বলেন, ‘লালদিয়া দেখিয়ে দিয়েছে—পিপিপি শুধু তত্ত্বে নয়, বাস্তবেও কার্যকর। ভবিষ্যতেও আমরা বাস্তবায়ন-কেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নেই মনোযোগ দেব।’ তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক বছরে চারটি নতুন সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে আছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ও একটি নির্ধারিত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত পাঁচ দশকে দুই দেশের উন্নয়ন সহযোগিতার সফলতা দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্ক সহায়তা থেকে ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। মাথাপিছু হিসাবে ডেনমার্ক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্য পূরণে লালদিয়া প্রকল্প নতুন মাইলফলক।’
পরিবহন কোম্পানি মেয়ার্স্কের চেয়ারম্যান রবার্ট মেয়ার্স্ক উগলা বলেন, লালদিয়া হবে অত্যাধুনিক গ্রিনফিল্ড টার্মিনাল; সেখানে নিরাপত্তা, অটোমেশন ও স্থায়িত্বের সর্বোচ্চ মান থাকবে। এতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে লজিস্টিকস খাতের অগ্রযাত্রায় এটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে থাকবে।