বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ২৭ জন। 

কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০টায় তারা কারাগার থেকে বের হতে থাকেন। এ সময় কারা ফটকে তাদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সোমবার ৪০ আসামির জামিন মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। 

জামিন পাওয়া সাবেক বিডিআর সদস্যদের মধ্যে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১২ জন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে পাঁচ জন এবং কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ থেকে ১০ জন বের হয়েছেন।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের (প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) বিচারক ইব্রাহীম মিয়া বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় ৪০ জনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এ মামলায় জামিন পাওয়া ৪০ জনের মধ্যে বুধবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে ৫ জন, পার্ট-২ থেকে ১০ জন ও হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১১ জন মুক্তি পান। মঙ্গলবার এক বিডিআর সদস্য জামিনে মুক্তি পান। এর আগে হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ১৭৮ জন বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জামিন পেয়েছিলেন। এ নিয়ে মোট ২১৮ জন‌ জামিন পেলেন। জামিনে মুক্তি পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সাবেক বিডিআর সদস্য ও তাদের স্বজনরা।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার মোহাম্মদ আল মামুন বলেছেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ২৭ সাবেক বিডিআর সদস্যের জামিনের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছায়। সেগুলো যাচাই করে বুধবার সকালে তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ব ড আর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

মোবাইল আসক্তি থেকে সন্তানদের রক্ষা করা জরুরি: নিহত আবিরের বাবা

নাটোরের বড়াইগ্রামে শিশুর লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদ্ঘাটনের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে মিনহাজ হোসেন আবির (১০) নামে ওই শিশুটির লাশ উদ্ধার হয়। উপজেলার মহিষভাঙ্গা ইউনিয়নের বনপাড়া পাটোয়ারী ফিলিং স্টেশনের কাছে নির্মাণাধীন মসলা মিলের ফাঁকা মাঠে পড়ে ছিল তার লাশ। 

শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ জানিয়েছে, মোবাইল ফোনে ফ্রি ফায়ার গেম নিয়ে দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে শিশুটিকে মাথায় আঘাত করে তারই বন্ধু। এতেই মারা যায় সে।
 
নিহত মিনহাজ হোসেন আবির মহিষভাঙ্গার কাতার প্রবাসী মিলন হোসেনের একমাত্র সন্তান। সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো বনপাড়া আদিব ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। অভিযুক্ত শিশুটিও (১২) একই গ্রামের বাসিন্দা। সে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

আবিরের স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে আবির তার বাবার স্মার্টফোন ও বাইসাইকেল নিয়ে বের হয়। সন্ধ্যার পরও সে না ফেরায় বড়াইগ্রাম থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি  করেন তার বাবা মিলন হোসেন। পরে রাতেই স্বজনরা বনপাড়া পাটোয়ারী ফিলিং স্টেশনের কাছে নির্মাণাধীন মসলা মিলের মাঠে রক্তমাখা সাইকেল ও স্যান্ডেল দেখতে পান। পরে তল্লাশি চালিয়ে গাছের শুকনো পাতা দিয়ে লুকিয়ে রাখা মরদেহ পাওয়া যায়।

নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শোভন চন্দ্র হোড় শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে আবির তার ওই বন্ধুর (১২) সঙ্গে বসে মোবাইল ফোনে ফ্রি ফায়ার গেম খেলছিল। খেলাকে কেন্দ্র করে দু’জনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ওই শিশুটি রেগে উঠে পাশে থাকা ইট দিয়ে আবিরের মাথায় বারবার আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আবির। এ সময় পাশেই থাকা শুকনা গাছের পালার নিচে মরদেহ লুকিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় ওই শিশু। শুক্রবার সকালে পুলিশ তাকে আটক করে। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে সে আবিরকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত শিশুটিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আবিরের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বনপাড়া পৌরসভার মহিষভাঙ্গা কবরস্থানে আবিরের দাফন সম্পন্ন হয়। তার বাবা মিলন হোসেন ঈদের ছুটিতে দেশে ফিরেছিলেন। এভাবে একমাত্র সন্তান হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন তিনি। মিলন বলেন, ‘বছরখানেক পর ছেলেকে জড়িয়ে সময় কাটানোর জন্য দেশে ফিরেছিলাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে সে আমার মোবাইল ফোন আর সাইকেল নিয়ে বের হয়েছিল। ভাবিনি, এটাই হবে আমাদের শেষ দেখা।’

মিলন বলেন, ‘আমার আবির কোনো অন্যায় করেনি– শুধু মোবাইল ফোনে একটা গেম খেলত। একটা গেম, সামান্য রাগ, আর এক মুহূর্তের ভুল–আমার বুক থেকে ওকে চিরতরে কেড়ে নিল। আমি কিছুই চাই না আর, শুধু চাই– আর কোনো বাবার বুক যেন খালি না হয়। মোবাইলের আসক্তি থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করা এখনই সবচেয়ে জরুরি। সন্তানকে সময় দিন, ভালোবাসুন। কারণ সুযোগ হারালে কিছুই আর ফিরে আসে না।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মোবাইল আসক্তি থেকে সন্তানদের রক্ষা করা জরুরি: নিহত আবিরের বাবা