ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলীর বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া উপাচার্যের কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার অভিযোগ উঠেছে। তবে উপাচার্যের অনুমতি ছাড়াই এ কাজ করায় ক্যামেরা খুলতে বাধ্য হন কর্মচারীরা।

জানা যায়, কয়েকদিন আগে উপ-উপাচার্যের কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা মেরামতের জন্য আইসিটি সেলে নোট পাঠান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.

এম এয়াকুব আলী। কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় আইসিটি সেলের ইলিয়াস জোয়ার্দারের মাধ্যমে কুষ্টিয়ার ইউনিক কম্পিউটার নামক প্রতিষ্ঠানকে এ কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।

গত মঙ্গলবার (১৩ মে) সিসি ক্যামেরা লাগানো হলেও বৃহস্পতিবার (১৫ মে) উপাচার্য আপত্তি করায় তা খুলে ফেলা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

সাম্য হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ইবি ছাত্রদলের

ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

এ ব্যাপারে ইউনিক কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানের দোকানদার পারভেজ বলেন, “আমাদের ছেলেরা উপ-উপাচার্য স্যারের কথা অনুযায়ী সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ করেছিল। পরে কি সমস্যার কারণে খুলে রাখছে জানি না। সিসি ক্যামেরা কোথায় কোনটা সংযোগ করেছে, তাও আমি পরিষ্কারভাবে বলতে পারব না। যারা কাজ করেছে, তারা ভালো বলতে পারবে।”

সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজে নিয়জিত ইবি কর্মচারী তুষার বলেন, “উপ-উপাচার্য স্যার আমাকে বলেছিলো যে, ‘উপাচার্য স্যারের ওই জায়গায় অনেক ঝামেলা হয়। আমি অফিস থেকে যেতে দেরি হয়। এজন্য মাঝে মাঝে রাগারাগি করে। তুমি ওই জায়গায় একটা ক্যামেরা দিয়ে দাও।’ পরে আমি ক্যামেরা লাগিয়ে উপ-উপাচার্যের স্যারের অফিসে ক্যামেরাগুলোর কানেকশন করে চলে আসি।” 

ক্যামেরা খোলার বিষয়ে তিনি বলেন, “আজ সকালে বিল সাবমিট করতে গেলে উপাচার্য স্যার ডেকে নিয়ে রাগারাগি করে ক্যামেরা খুলে ফেলতে বলেন। পরে স্যারের কার্যালয়ের সামনের ক্যামেরা খুলে ফেলেছি।”

এ বিষয়ে উপাচার্যের পিএস গোলাম মাহফুজ মঞ্জু বলেন, “আমি ঢাকায় আছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। প্রক্টর স্যার ভালো বলতে পারবেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক মো: শাহজাহান আলী বলেন, “উপ-উপাচার্য স্যার অনেকদিন আগে আমাদের ফাইল পাঠিয়েছিল। ওই ফাইল এখনো চলমান আছে। তারপর উপাচার্য স্যার সিসি ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে আর একটা বিষয় আমি শুনেছি, উপ-উপাচার্য স্যারও ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। সে বিষয়ে আমিও নিশ্চিত না।”

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো: শাহীনুজ্জামান বলেন, “উপ-উপাচার্য স্যার তার কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে উপাচার্য স্যারের কার্যালয়ের সামনে একটা ক্যামেরা লাগানো হয়। উপাচার্য স্যার বিষয়টি জানতে পারলে তা খুলে ফেলার নির্দেশ দেন।”

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এম. এয়াকুব আলী বলেন, “যারা কাজ করেছে, তারা বুঝতে ভুল করেছে। আমি তাদের বলেছি তিন তলার সিঁড়িতে একটা লাগাতে, যার সংযোগ থাকবে আমার রুমে। আর উপাচার্য স্যারের রুমের সামনের ক্যামেরার সংযোগ থাকবে উপাচার্য স্যারের রুমে।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ এ নিয়ে অবশ্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ উপ চ র য স য র উপ চ র য স য র র উপ চ র য র ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দগ্ধ শিক্ষক মাহফুজা খাতুনও চলে গেলেন

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় দগ্ধ শিক্ষক মাহফুজা খাতুন (৪৫) মারা গেছেন। রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ২৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মাহফুজার শরীরের ২৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তাঁর শ্বাসনালি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, মাহফুজার বাবার নাম মো. মহসিন আলী। তাঁর স্বামীর নাম ওমর আলী। আয়েশা সিদ্দীকা নামে তাঁর একটি মেয়ে রয়েছে। তিনি তুরাগের বাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা।

মারা যাওয়ার দুদিন আগে মাহফুজা খাতুনের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেন বড় বোন লুৎফুন নাহার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাহফুজা বলেছিল, “আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। আমি আর বাঁচব না।”’

গতকাল মাগরিবের নামাজের পর দিয়াবাড়ি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে মাহফুজা খাতুনের জানাজা হয়। পরে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয় বলে জানান স্কুলের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল।

গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৫–এ। দগ্ধ অনেকে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৯ জন। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় ফিরেছেন ১৪ জন। দগ্ধ ২১ জনের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের মধ্যে একজন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সূত্র জানায়, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থী–শিক্ষকসহ প্রতিষ্ঠানটির ৩৪ জন মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে ২৭ জন শিক্ষার্থী, ৩ জন শিক্ষক, ৩ জন অভিভাবক, ১ জন আয়া রয়েছেন। বিমানের পাইলটসহ এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৫।

সম্পর্কিত নিবন্ধ