রাউজানে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে ন্যাড়া করে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ
Published: 17th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় মুহাম্মদ ফোরকান (৫২) নামের এক যুবলীগ লীগ নেতাকে ধরে মারধরের পর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন স্থানীয় একদল লোক। এরপর তাঁকে জুতার মালা পরিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার উত্তর গুজরা গ্রামের আয়েশাবিবির পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ফোরকান পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহসভাপতি। তিনি একটি ভাঙচুর মামলার আসামি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার পর ফোরকান স্থানীয় বাজারে এলে একদল লোক তাঁকে আটক করে মারধর করেন। এরপর তাঁর মাথা ন্যাড়া করে জুতার মালা পরিয়ে দেন। শেষে তাঁকে থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। অসুস্থ হওয়ায় পুলিশ তাঁকে চিকিৎসা দিয়ে থানা হেফাজতে রাখে।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, মুহাম্মদ ফোরকানকে আহত অবস্থায় পুলিশে দেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে রাতেই তাঁকে থানা হেফাজতে রাখা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তরিকতভিত্তিক আধ্যাত্মিক সংগঠন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির কার্যালয় ভাঙচুরের মামলা আছে। আজ শনিবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ রক ন
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জের সাবেক এমপি বিপ্লব ৭ দিনের রিমান্ডে
মুন্সীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সজল হত্যা মামলায় মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবের জামিন নামঞ্জুর করে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জের এক নম্বর আমলি আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান এই আদেশ দেন। এর আগে সদর থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
এদিকে মব এড়াতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় ফয়সাল বিপ্লবকে। আদালতে হাজির করা হয় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে। এরপর আসামির জামিন এবং রিমান্ড নামঞ্জুরের আবেদন নিয়ে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শাহিন মো. আমানুল্লাহ ও অ্যাডভোকেট হাসান মৃধা।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মুন্সীগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর ছাড়াও পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম ও এপিপি নুর হোসেন রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। প্রায় ২০ মিনিট রিমান্ড শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
এ সময় আদালতে পিনপতন নীরবতা লক্ষ্য করা গেছে। রিমান্ড শুনানি শেষে মুন্সীগঞ্জ এক নম্বর আমলি আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আদেশ দেন।
আদেশ ঘোষণার পর কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লবকে সরাসরি জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে আসামিকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পরপরই আদালত প্রাঙ্গণে ফয়সাল বিপ্লবের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেন অনেকেই। বিক্ষোভকারীরা বলেন, সাধারণত সকাল ১০টার আগে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় না। তাই এতো আগে তাকে আনা হবে, এটি তারা জানতেন না।
বিক্ষোভে থেকে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লবের বিরুদ্ধে 'আমার ভাই মরল কেন, খুনি বিপ্লব জবাব দে, খুনি বিপ্লবের ফাঁসি চাই, দিতে হবে দিতে হবে' এমন স্লোগানে আদালত প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সদর থানার ওসি সাইফুল আলম জানান, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রিয়াজুল ফরাজী (২৮), ডিপজল (১৯) ও মো. সজল নিহত ও গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। ওই ঘটনায়
সদর থানায় ৩টি হত্যা ও ৪টি হত্যাচেষ্টা মামলাসহ ৭টি মামলা রুজু করা হয়। প্রতিটিতে মামলায় সাবেক এমপি মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবকে আসামি করা হয়েছে।
সদর থানা পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লবসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকা মামলার আসামি ও সাবেক এমপি বিপ্লবকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২২ জুন রাজধানী ঢাকার মনিপুরীপাড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর তাকে পল্টন থানায় দায়ের করা বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করে ডিবি পুলিশ। এক সপ্তাহ পর মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় দায়ের করা মামলায় বিপ্লবকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।