নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র আইভীকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো আরও দুই মামলায়
Published: 17th, May 2025 GMT
কারাবন্দী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাসহ আরও দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলাম চৌধুরীর আদালতে শুনানি শেষে তাঁকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এর আগে আদালতে শুনানির জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানিতে গাজীপুর কাশিমপুর কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন সেলিনা হায়াৎ। এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে করা মোট পাঁচটি মামলার মধ্যে তিনটিতে গ্রেপ্তার দেখানো হলো।
আদালত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদিন এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সেলিনা হায়াৎকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হত্যাসহ দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানানো হলে শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।
সেলিনা হায়াতের আইনজীবী এস এম সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ‘আইভী দলমত-নির্বিশেষে সবার জনপ্রিয় সাবেক মেয়র। তিনি আন্দোলনে কখনো মাঠে নামেননি। তাঁকে সব কটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। এতে আমাদের আইনিপ্রক্রিয়া চালাতে সহজ হবে।’
একটি মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। শামীম ওসমান আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছুড়লে বাদীর স্বামী রিকশাচালক তুহিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তুহিনের স্ত্রী আলেয়া আক্তার বাদী হয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০ জনকে আসামি করে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলাটি করেন।
অন্য মামলার এজাহারে বলা হয়, একই দিন (২০ জুলাই) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। শামীম ওসমান আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হকার নাদিমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে তিনি বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই পা হাঁটু থেকে কেটে ফেলতে হয়। এ ঘটনায় নাদিমের বাবা দুলাল হোসেন বাদী হয়ে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর শামীম ওসমান ও তাঁর ভাতিজা আজমেরী ওসমান, সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ ৬৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০০ জনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ম ম ওসম ন স দ ধ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারালেন তরুণ, গ্রেপ্তার ২
নারায়ণগঞ্জ শহরের জিমখানা এলাকায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে শাহাদাত (২৪) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। গত বুধবার রাতে নগরীর সিটি পার্ক গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তিনি নতুন জিমখানা এলাকার গিয়াসউদ্দিন মিয়ার ছেলে এবং স্থানীয় স্বপনের বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে শাহাদাতের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে তাঁকে তিন-চারজন ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত তরুণের বড় বোন হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত শাহাদাতের বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ আটটি মামলা রয়েছে। তিনি চিহ্নিত মাদক কারবারি। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ নাসির আহমেদ বলেন, পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, লোহা চুরি করে বিক্রির টাকার ভাগাভাগি নিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর সঙ্গে জড়িত তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।