চাকরি হারানো উন্নয়ন কর্মীদের নতুন সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান
Published: 28th, May 2025 GMT
বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উন্নয়ন সহায়তা কাটছাঁটের ফলে বাংলাদেশে চাকরি হারানো উন্নয়নকর্মীদের জাতীয় অর্থনীতিতে পুনঃসংযোজনের দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় অ্যাসোসিয়েশন অব আনএমপ্লয়েড ডেভেলপমেন্ট প্রফেশনালস (অডিপ)। ইউএসএইডর প্রকল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে চাকরি হারানোদের এই সংগঠনে সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ছয় শতাধিক।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির সব প্রকল্পে ট্রাম্প প্রশাসনের জারি করা স্টপ-ওয়ার্ক-অর্ডারের ফলে বাংলাদেশেও ইউএসএআইডির ৫৯টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৫টি বন্ধ হয়ে যায় এবং দেশ প্রায় ৮৪ কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তা হারায়। অডিপের অনুসন্ধান অনুযায়ী, ইউএসএআইডি ও অন্যান্য দাতা সংস্থার অর্থায়নে পরিচালিত এনজিও ও আইএনজিওগুলোতে চাকরি হারান প্রায় ৫০ হাজারের বেশি উন্নয়নকর্মী।
তবে সরকারি জরিপ না থাকায় এই পরিসংখ্যান এখনও অনেকটা অনুমাননির্ভর বলে জানান তারা। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি। তারা বলেন, উন্নয়নকর্মীরা আয়কর প্রদান ও বাজার অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছেন। বর্তমানে উন্নয়ন কর্মীদের বড় অংশ বেকার হয়ে যাওয়ায় সরকারের ব্যক্তিগত আয়কর থেকে রাজস্ব আয় বাবদ ১৫ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হচ্ছে বলে তারা দাবি করেন।
সরকারের প্রতি ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন অডিপের আহ্বায়ক জিনাত আরা আফরোজ। দাবিগুলো হলো, উন্নয়ন সহায়তা সংকোচনের ফলে সৃষ্ট বেকারত্ব ও উন্নয়ন পেশাজীবীদের অবদানের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি, চাকরি হারানো উন্নয়নকর্মীদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণে সরকারের নেতৃত্বে জাতীয় জরিপ পরিচালনা এবং দ্রুততম সময়ে তার ফল প্রকাশ, এই সংকটের অর্থনৈতিক প্রভাব মূল্যায়ন, তাদের ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উৎসে কাটা আয়কর ফেরত ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অগ্রিম আয়কর মওকুফ, তাদের বেসরকারি, কর্পোরেট, ব্যবসায় ও বিনিয়োগ খাতে নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি এবং অডিপের সঙ্গে দ্রুত আলোচনায় বসে সমাধানের পথ খোঁজার দাবি জানানো হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড আরইউ কর ম দ র সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমতি ছাড়াই গাসিক কর্মকর্তা কিবরিয়ার বিদেশ যাত্রা
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি বিধি লঙ্ঘন, তথ্য গোপন, অনুমতি ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ ও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর গত ১৫ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক শাহেদ আলম নামে এক ব্যক্তি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গোলাম কিবরিয়া সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তথ্য গোপন করে বেসরকারি পাসপোর্ট (নং A০১২৬৬৬১২) সংগ্রহ করেছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন। ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি একাধিকবার কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।
অভিযোগকারী দাবি করেন, তিনি ২০২৪ ও ২০২৫ সালের বিভিন্ন সময়ে কানাডা সফর করেছেন, যার কোনো অনুমোদন তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নেননি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১৯ জুন কানাডা সফরের সময় তিনি প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, গোলাম কিবরিয়া নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে কানাডায় সেকেন্ড হোম এবং ব্যবসায়িক বিনিয়োগ করেছেন। তার নামে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা পাচারের দুর্নীতির মামলাও চলমান রয়েছে। এমন অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনো পদে বহাল থেকে প্রভাব খাটাচ্ছেন এবং যেকোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অভিযোগকারী বলেন, “তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার সরাসরি লঙ্ঘন এবং গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
সূত্র জানায়, গোলাম কিবরিয়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের একজন বিতর্কিত কর্মকর্তা। তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট। তিনি দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে কানাডায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন। গাজীপুরবাসীর স্বার্থে এমন বেপরোয়া ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মুহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, “লিখিত অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করা হয়েছে। প্রশাসক মহোদয় বিষয়টি নিয়ে অবগত আছেন। তথ্য গোপন করে বিদেশ যাত্রা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, প্রমাণ মিললে বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হবে।”
এ বিষয়ে জানতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে শোকজ করা হয়েছিল এবং তিনি জবাবও দিয়েছেন। শোকজের প্রতিবেদনটি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।”
এ বিষয়ে গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/রেজাউল/এস