ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে চলছে টানা অবস্থান কর্মসূচি। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’ এবং ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে কর্মচারীদের একটি অংশ নগর ভবন দখল করে রেখেছেন। ফলে, ১৫ মে থেকে বন্ধ আছে সব ধরনের নাগরিক সেবা কার্যক্রম। নগর ভবনের মূল ফটকসহ সব বিভাগীয় ফটকে ঝুলছে তালা, থমকে আছে সিটি কর্পোরেশনের দৈনন্দিন কার্যক্রম।
প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত স্লোগান, মিছিল আর বক্তৃতায় মুখর নগর ভবন চত্বর। ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে টালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’ এরকম নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠছে নগর ভবন এলাকা।
নগর ভবনের গেটের তালা ভাঙার সাহস কারো নেই। প্রতিদিনই বহু মানুষ নাগরিক সেবা পেতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। জন্মসনদ, ওয়ারিশ সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স জমা দেওয়া কিংবা হাট ইজারা ও বিলবোর্ড-সংক্রান্ত কাজ করতে এসে ফিরতে হচ্ছে অসংখ্য নাগরিককে।
বুধবার (২৮ মে) নগর ভবনের মূল ফটকের সামনে দাঁড়ানো নুরজাহান বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে এ প্রতিবেদককে বলেছেন, “জন্মসনদের জন্য তিন দিন ধরে আসছি। প্রতিবারই ফিরে যেতে হচ্ছে। ঘরের ভেতরে কাজ হচ্ছে না, আর বাইরে গেটে তালা। এটা কি কোনো নগর সেবা?”
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ডিএসসিসির কর্মচারী খোরশেদ আলম বলেছেন, “দুই দফায় কোর্ট রায় দেওয়ার পরও ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা তাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চাই। সে দাবিতেই আন্দোলন করছি। দাবি না মানা পর্যন্ত নগর ভবন খোলা হবে না।”
একই দাবিতে আন্দোলনকারী আরেক কর্মচারী জাহিদুর রহমান বলেন, “ঢাকাবাসী যেমন ইশরাক ভাইকে চায়, আমরাও তাকেই মেয়র হিসেবে চাই। ১৫ মে থেকে অবস্থান করছি। আমাদের মেয়র, জনগণের মেয়র ইশরাক ভাই দায়িত্ব নিলে তবেই আমরা কাজে ফিরব।”
আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের ভেতরের ফটকগুলোতেও তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। কেবল কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী আর আন্দোলনকারী প্রবেশ করতে পারছেন। খাদ্য ও পানি নিয়ে কেউ কেউ আন্দোলনকারীদের সহায়তা করছেন। ভবনের বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ সচল থাকলেও প্রশাসনিক কার্যক্রম পুরোপুরি অচল।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস বিজয়ী হন। বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০২০ সালের ৩ মার্চ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল সেই নির্বাচনের ফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র ঘোষণা করেন। কিন্তু, এখন পর্যন্ত তাকে শপথ নিতে দেওয়া হয়নি।
আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি, দাবি মানা না হলে আন্দোলন আরো তীব্র করা হবে। নগর ভবনের বাইরে থেকেও বিভাগীয় অফিসগুলোতে তালা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
আন্দোলনকারী বশির হোসেন বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আছি। কিন্তু, দাবি মানা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব।”
ঢাকা/এএএম/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইশর ক হ স ন নগর ভবন র ইশর ক ভ ই
এছাড়াও পড়ুন:
ফারুক আহমেদকে সরাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করলো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তাতে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বিসিবি সভাপতি পদের দায়িত্ব হারালেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত ১১টায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে রয়েছে, ``বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এর গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ: ১৩.২ (খ) ৪) মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ-এর ১৯/০৮/২০২৪ তারিখের, ৩৪.০৩.০০০০.০০৪.০৩.০২৯-৩০৭৮ সংখ্যক স্মারক মূল্যে ইতঃপূর্বে মনোনীত পরিচালক জনাব ফারুক আহমেদ এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ০৮ জন পরিচালক (বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠ) অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করায় এবং বিপিএল সংক্রান্তে গঠিত সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার প্রয়োজনে জনাব ফারুক আহমেদ এর অনুকূলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ইতঃপূর্বের মনোনয়ন বাতিল করা হলো।’’
আরো পড়ুন:
যে প্রক্রিয়ায় বিসিবির পরিচালক হবেন বুলবুল
ফারুকের বিরুদ্ধে যেসব অনিয়ম পেয়েছে তদন্ত কমিটি
মোঃ আমিনুল ইসলাম, এনডিসি সচিব (যুগ্মসচিব) এর স্বাক্ষরিত এই চিঠি পাঠানো হয়েছে ফারুক আহমেদসহ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী, যুব ও কীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের একান্ত সচিবকে।
বিস্তারিত আসছে …
ঢাকা/ইয়াসিন