রাজধানী ঢাকার নগর ভবনে আজ বৃহস্পতিবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা। ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে বৃষ্টির মধ্যে এ কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।

‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে বেলা সাড়ে ১১টায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচিতে ইশরাকের সমর্থকদের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের বড় একটি অংশ যুক্ত আছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা নগর ভবনের ভেতরের ফটকে অবস্থান নিয়ে মিছিল ও স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা, মানি না মানব না’, ‘দাবি মোদের একটাই, মেয়র ছাড়া অফিস নাই’ স্লোগান দিতে শোনা যায়।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক সাবেক সচিব মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ইশরাক হোসেন নগর ভবনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেবেন । তাঁর এ ঘোষণার পর সেখানে ভিড় বাড়তে থাকে।

মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা মেনে নেওয়া হবে না। জনতার মেয়র ইশরাক হোসেনকে জনতার দায়িত্ব নিতে দিতে হবে। এর বিকল্প হলে ঢাকাবাসী কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলবে।’

নগর ভবনে বিক্ষোভ শুরু হয় ১৪ মে। ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সংগঠিত হয়ে আন্দোলনে নামেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মচারী ও ইশরাকের সমর্থকেরা। মাঝে ৪৮ ঘণ্টার বিরতির পর আবার তাঁদের কর্মসূচি শুরু হয়। টানা ১৬ দিনের আন্দোলনে নগর ভবনের সব সেবা বন্ধ রয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

দুপুর ১২টার দিকে নগর ভবনের সামনে কথা হলো হেকমত আলীর সঙ্গে। তিনি বেচারাম দেউরি থেকে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে ঘুরছি। কাজ হচ্ছে না। কর্মচারীরা বলেছিল, আজকে ১২টার পর অফিস খুলবে। এ কারণে আজকে আবার এসেছি। কিন্তু দেখি তালা মারা।’

আরও পড়ুনইশরাককে মেয়র করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চলছে, নগর ভবন অচল২৮ মে ২০২৫

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। একই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন নগর ভবন র সমর

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় বাড়ছে গোমতী নদীর পানি

নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাতে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বাড়ছে। তবে তা এখনও বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি সমকালকে জানান, টানা বর্ষণ এবং ভারত থেমে আসা পানিতে গোমতীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রন কক্ষ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়,  শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১০৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৮১ মিটার। যদিও বিপৎসীমা নির্ধারিত আছে ১১ দশমিক ৩০ মিটার। নদীর পানির উচ্চতাসীমা এখনও বিপৎসীমার ৪.৪৯ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতে কুমিল্লা রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে নগরীর অধিকাংশ প্রধান পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। জলাবব্ধতার সৃষ্টি হয় নগরীর বেশ কিছু এলাকায়। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে জনজীবনে। পানি ঢুকে পড়েছে বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। শুক্রবার সকাল থেকে সরেজমিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লা সিটি কপোরেশনে সামনের সড়ক, রেইসকোর্স, বিসিক শিল্পনগরী, জিলা স্কুল সড়ক, নগরীর টমছম ব্রিজ থেকে কান্দিরপাড় সড়ক, ঠাকুরপাড়া, মুরাদপুর, ছাতিপট্টি, কান্দিরপাড়-রাণীর বাজার সড়ক, অশোকতলা, ধর্মপুর ছায়া বিতান ও শুভপুরসহ নগরীর নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। অনেকেই ড্রেনে পড়ে আহত হন।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি রোকেয়া বেগম শেফালী বলেন, নগরীতে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই জলাবব্ধতার সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতামুক্ত নগরীর জন্য নাগরিক ও নগর কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে। পানি প্রবাহের ড্রেন ও খাল গুলি এখনই খনন করতে হবে।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন সমকালকে বলেন, গত দুই দিনের হঠাৎ বৃষ্টিতে নগরীর বেশ কিছু সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। এতে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা পানি সরাতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, নগরীর পানি প্রবাহের প্রধান প্রধান বড় বড় ড্রেন ও খালের মাটি অপসারণে  ৯ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ঈদের পর কাজ শুরু হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ