নাটোরে একটি মামলা থেকে আমেরিকা প্রবাসীর নাম বাদ দেওয়ার জন্য ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে গুরুদাসপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাফর মৃধাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

বুধবার (৪ জুন) নাটোর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আমজাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আমেরিকা প্রবাসী রাসেল হোসাইন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.

রবিউল করিমের ছেলে।

সম্প্রতি গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় বাজারে ফরিদ মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লাকে মারধর করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় রুবেলের বাবা আমেরিকা প্রবাসী রাসেল হোসাইনকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা করেন। এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই জাফর মৃধা।

তদন্ত করতে চাঁচকৈড় বাজারে ওই প্রবাসীর দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান এসআই জাফর। কথা বলেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা গোলাম রাব্বির সঙ্গে। এ সময় মামলা থেকে প্রবাসী রাসেলের নাম প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন তিনি। পরে মুঠোফোনে রাসেলের নাম প্রত্যাহারের জন্য ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাপক সমালোচনা হয়। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ এসআই জাফর মৃধাকে সাময়িক বরখাস্ত করে নাটোর সদর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসমাউল হক বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাফর মৃধাকে নিজ কর্মস্থল থেকে সরিয়ে নাটোর সদরের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসেন বলেছেন, পুলিশ সদস্য হিসেবে ঘুষ নেওয়া খুবই গর্হিত কাজ। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্তে তিনি দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/আরিফুল/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ফর ম ধ প রব স ব যবস তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে এস এম তানভীর আরাফাতকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয়। এরপর দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজিরা করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। 

গত ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির আরেক কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন। 

আরো পড়ুন:

মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত

উপপুলিশ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বিতর্কিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকে নানা কর্মকান্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি, তখন এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় শাস্তিও পেতে হয়। 

নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কুদরত আলী বিএনপির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও কিছু সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য কুদরত আলীকে মিথ্যা মামলায় আটক ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার, এসআই রোকনুজ্জামান, এসআই মেহেদী হাসান, এসআই শাহজাহান, এএসআই আনিচুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আহমেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা কুদরত আলীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন পুলিশ কুদরত আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২৫ জুলাই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকের ডান দিকে ও বাম দিকে দুটি গুলির চিহ্ন, দুই হাতে, পিঠে, মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। 

বাদী মামলায় দাবি করেন, কুদরত আলীকে গুম করে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে চলে যায়।

দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন। 

২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে। 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালনে এসআইদের প্রতি ডিএমপি কমিশনারের আহ্বান
  • রাজশাহীতে যুবদল–ছাত্রদলের চাঁদাবাজির মামলার এজাহার ফাঁস, এসআইকে বদলি
  • রূপগঞ্জে দাফনের এক বছর পর যুবকের মরদেহ উত্তোলন
  • কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার