ছাত্রদলের কমিটি: পাঁচ পদে ছাত্রলীগ কর্মী, সমালোচনার মুখে স্থগিত
Published: 12th, June 2025 GMT
নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইল ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটিতে সদস্য সচিব ও যুগ্ম আহ্বায়কসহ পাঁচ পদে ছাত্রলীগ কর্মীদের পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠলে অভিযুক্ত নেতাদের পদ স্থগিত করা হয়েছে।
গত সোমবার রাতে জোনাইল ইউনিয়ন ছাত্রদলের ২১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়। উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহিদ হাসান বিপুল ও সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম খান কানন স্বাক্ষরিত কমিটির তালিকা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই নতুন কমিটির সদস্য সচিব ও যুগ্ম আহ্বায়কসহ কমপক্ষে পাঁচজনের ছাত্রলীগের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেন। তারা এসব পোস্টের সমর্থনে বিগত দিনে ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে তাদের প্রকাশ্যে অংশগ্রহণের ছবিও শেয়ার দেন।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নবগঠিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে জোনাইল বাজারে আনন্দ মিছিল হয়। এ সময় পথসভায় বক্তব্যকালে সদস্য সচিব সাব্বির হোসেন ‘আমরা ছাত্রলীগ কর্মী’ বলেন। পরে অন্যরা সেটা শুধরে দেন। ওই বক্তব্যের ভিডিও স্থানীয়ভাবে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। ব্যাপক সমালোচনার মুখে গতকাল বুধবার সদস্য সচিব সাব্বির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক রমজান আলী এবং সদস্য আব্দুল্লাহ, সাগর ও জাফর আলীর পদ স্থগিত করে উপজেলা ছাত্রদল। উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
তুষার হাসান নামে এক ছাত্রদল নেতা বলেন, ২১ সদস্যের কমিটিতে কমপক্ষে ১২ জনই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। তাদের এভাবে ছাত্রদলে অনুপ্রবেশের সুযোগ দেওয়া কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহিদ হাসান বিপুল জানান, পথসভায় একটি বেফাঁস বক্তব্য দেওয়া ও ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় পাঁচজনের পদ স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে তাদের ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র র কম ট ফ সব ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
যদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, নিয়ে আসছিলেন কেন: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বড় একটি ঘটনা হলো ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। যদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, তবে নিয়ে আসছিলেন কেন আপনি? আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় এই অস্ত্রকাহিনির কারণে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে।’
আজ রোববার দুপুরে এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পুরাতন কালেক্টরেট মাঠে আয়োজিত পথসভায় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এসব কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমি বাবর ভাইকে (সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর) সম্মান করি, তিনি কারা নির্যাতিত নেতা। কিন্তু আপনার ওই কাজ আমি সমর্থন করি না। আপনার এই কাজের কারণে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারেনি। হাসিনার মতো একজন খুনি-ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় এসেছিলেন। গত ১৫ বছর বিএনপির নেতা-কর্মীরা নির্যাতিত হয়েছেন, আমার ভাইদের ওপর হত্যা করা হয়েছিল, গুলি চালানো হয়েছিল, এই জন্য আপনিও ইতিহাসের কাঠগড়ায় আপনিও দায়ী থাকবেন। আমরা শান্তি চাই। আমরা অশান্তি চাই না বাংলাদেশে। আমরা মানুষের অধিকার চাই। মানবিক মর্যাদা চাই।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, ‘যার হাতে বিচারালয়ের ক্ষমতা, যার হাতে সংসদীয় ক্ষমতা, যার হাতে নির্বাহী ক্ষমতা—এ জন্য আমরা পাওয়ার ব্যালান্স চেক করার জন্য পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষে নির্বাচন চেয়েছি। কিন্তু যারা ফ্যাসিস্ট ক্ষমতার কাঠামোতে থাকতে চায়, তারা এ বিষয়ে জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করছে। রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধান, সংস্কার এবং শেখ হাসিনার বিচারের টিকিট নিয়েই ঘরে ফিরবেন ইনশা আল্লাহ।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড, বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতা-কর্মীর গুম-খুনের বিচার চাইছি। যারা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন করেছে, আলেমদের জঙ্গি হিসেবে তকমা দিয়েছে, পাহাড়িদের অত্যাচার করেছে, তাদের বিচার করতেই হবে।’
পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগ, কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম খান পাঠান প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম উপস্থিত থাকলেও বক্তব্য দেননি। পথসভা শেষে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা শেরপুরের উদ্দেশে রওনা হন।