ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে আজ বুধবার রাতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল হিলালের মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ম্যাচের আগেই দুশ্চিন্তায় পড়েছে দলটি। কারণ, দলের অন্যতম তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার অনুশীলনেই আসেননি। রিয়ালের পক্ষ থেকে ইএসপিএনকে জানানো হয়, হালকা জ্বরে ভুগছেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। ফলে আজকের ম্যাচে তার খেলা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।

রিয়ালের নতুন কোচ জাবি আলোনসো বলেন, ‘সকালে কিলিয়ান কিছুটা ভালো লাগছিল, কিন্তু মাঠে নামার মতো যথেষ্ট ফিট নয়। এখানকার আবহাওয়াও বেশ গরম। সকালে তার শারীরিক অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেব।’

গত মৌসুমে রিয়ালের জার্সিতে দারুণ ফর্মে ছিলেন এমবাপ্পে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেন ৪৩ গোল। তবে মৌসুম শেষে রিয়াল লা লিগায় দ্বিতীয় এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেয় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই। এমবাপ্পের পাশাপাশি আরও কয়েকজন তারকার অংশগ্রহণ নিয়েও রয়েছে সংশয়। রক্ষণভাগের আন্তোনিও রুডিগার, দানি কারভাহাল, এডার মিলিতাও এবং মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা এখনো পুরোপুরি ফিট নন।

আলোনসো জানান, ‘রুডিগার দারুণভাবে পুনর্বাসন করছে। দ্রুতই ফিরতে পারে। কামাভিঙ্গাও দ্রুত সেরে উঠছে। তবে কারভাহাল আর মিলিতাওর ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগবে।’

নতুন কোচ হিসেবে আলোনসোর জন্য এটি প্রথম বড় মঞ্চ। মৌসুমের শুরুতে দলকে শিরোপা এনে দিতে চান তিনি। তার অধীনে আরও শক্তিশালী দল গড়তে রিয়াল দলে ভিড়িয়েছে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড ও তরুণ ডিফেন্ডার ডিন হুইসেনকে।

সংবাদ সম্মেলনে হুইসেন বলেন, ‘আলোনসো একজন দারুণ কোচ। স্পষ্ট কৌশল আছে তার। খেলোয়াড় ও কোচ দুই ভূমিকাতেই সফল তিনি। তার অধীনে খেলতে আমরা সবাই রোমাঞ্চিত।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ল য় ন এমব প প এমব প প

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবিতে বিক্ষোভে মেয়েদের ভিডিও করার সময় কলেজছাত্র আটক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের ছবি প্রদর্শনের প্রতিবাদ চলাকালে মেয়েদের ভিডিও করার অভিযোগে এক কলেজছাত্রকে আটক করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে সোপর্দ করা হয়। কবি নজরুল সরকারি কলেজের ওই শিক্ষার্থীকে আটকের সময় ছাত্রশিবিরের কর্মীরা বাধা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। প্রক্টরের উপস্থিতিতে ওই কলেজছাত্রের মুঠোফোন ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি উসামা বিন লাদেনসহ কয়েকজন বিতর্কিত ব্যক্তির পোস্ট শেয়ার করেছেন। ফেসবুক মেসেঞ্জারে ‘ইসলামী ছাত্রশিবির, চৌমুহনী কচুয়া’ নামের একটি গ্রুপের সক্রিয় সদস্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রক্তবীজ অর্ক বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে টিএসসিতে হাঁটতে গিয়ে হঠাৎ দেখি এক লোক মেয়েদের দিকে মোবাইল তাক করে জুম করে ইনঅ্যাপ্রোপিয়েট (অশোভন) ভিডিও করছে। আশপাশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই লোকটি দৌড় দিয়ে সোজা টিএসসির ভেতরে ঢুকে পড়েন। আমরাও পেছনে যেতে চাই। কিন্তু পরে দেখি, সেখানে গুপ্ত সংগঠনের কিছু ছোট ছোট টিম আমাদের টিএসসির ভেতর ঢুকতে দিচ্ছে না।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অর্ক লিখেন, ‘প্রায় ৪ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি মোট ৬ বার নিজের নাম বদলায়, ৪টিরও বেশি ফেসবুক আইডি দেখায়।’

ছাত্রশিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে ওই কলেজছাত্রকে আড়াল করার অভিযোগ তুলে অর্ক তাঁর পোস্টে আরও লিখেন, ‘প্রক্টর স্যার ওই ব্যক্তির মেসেঞ্জারে দেখলেন, “ইসলামী ছাত্রশিবির- চৌমুহনী কচুয়া” গ্রুপে সে একেবারে অ্যাকটিভ সদস্য। ঘটনাস্থলে থাকা ছাত্রশিবিরের লোকজন তাকে আড়াল করতে গেল কেন?’

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিয়ান ফারুক ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘নারী নিপীড়কদের শেল্টার (আশ্রয়) দেয় কারা? টিএসসিতে যুদ্ধাপরাধীদের ছবি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়। এই প্রতিবাদের বিপরীতে টিএসসির গেইটের মুখে শিবিরেরাও স্লোগান দিতে থাকে। এমন এক মুহূর্তে শিবিরের এক কর্মী আমাদের প্রতিবাদের ভেতর চলে এসে নারীদের আপত্তিকর ভিডিও নিতে শুরু করে। ধরা পড়ার পর সে জোরপূর্বক পালিয়ে যায়। পালিয়ে শিবিরের মিছিলে ঢুকে পড়ে এবং টিএসসির ভেতর শেল্টার নেয়।’

ওই ব্যক্তিকে আটক করতে গেলে ছাত্রশিবিরের কর্মীরা বাধা দেন অভিযোগ করে নাহিয়ান ফারুক আরও লিখেন, ‘একজন অপরাধীকে তারা টিএসসিতে ঢুকতে দিলেও, আমাদেরকে টিএসসিতে ঢুকতে বারবার বাধা দেয়। আমরা জোরপূর্বক ভেতরে যাই এবং প্রক্টরসহ শিবিরের ফরহাদের (ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ) সাথে কথা হয়। ঐ ঘটনার পর সেই হ্যারাসার (নিপীড়ক) ধরা পড়ে।’

প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেটা কবি নজরুল কলেজে পড়ে, চাঁদপুরে বাড়ি। আমার কাছে একটু বেকুব টাইপের মনে হয়েছে। তবে ইসলামিক এটা বোঝা যায়। আমি তখন ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাদেরকেও বলেছি, আমার কাছে দুটো অপশন— হয় পুলিশে দেওয়া, না হয় অভিভাবকসহ মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া।’

প্রক্টর আরও জানান, ‘পরে ওর দুজন মামাতো ভাই ও একজন ছোটবেলার বন্ধু আসে। আমরা প্রাথমিকভাবে মুচলেকা নিয়েছি। ওর ছবি নিয়েছি আর ফোন রেখে দিয়েছি। ওর মুচলেকার কপি চাঁদপুর, শাহবাগ ও চকবাজারের (সে যেখানে থাকে) থানায় পাঠাব এবং জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করা হবে। পরে যদি এমন কোনো কিছু করে, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ সরাসরি ব্যবস্থা নেবে।’ তাঁর পরিবারের সদস্যরা এসে তাঁকে নিয়ে গেছেন বলেও জানান প্রক্টর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ