কুমিল্লায় পুলিশ হেফাজতে বিএনপি কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ
Published: 20th, June 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় পুলিশ হেফাজতে শেখ জুয়েল (৪৫) নামে এক বিএনপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, তাকে আটক করে পুলিশ নির্যাতন করে হত্যা করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে পরিবারের অভিযোগ ।
নিহত জুয়েল বাঙ্গরা গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয়ভাবে ওয়াই-ফাই ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি শেখ বাড়ির মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে।
নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, ‘‘সকাল থেকে আমার স্বামী বিল কালেকশন করতে বের হয়েছিলেন। দুপুরের পর শুনি পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। থানায় গিয়ে দেখা করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে অনেক অনুরোধে দেখা করতে দিলে জুয়েল বলেন, ‘আমি কিছু করিনি। আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করো।’ সন্ধ্যার পর জানানো হয়, তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গিয়ে দেখি, তিনি আর বেঁচে নেই।’’
জুয়েলের ছেলে শেখ সিহাব বলেন, ‘‘আমার বাবাকে বিনা অপরাধে ধরে নিয়ে পুলিশ মেরে ফেলেছে। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার বিষয়েও কিছু জানায়নি।’’
নিহতের চাচাতো ভাই ও উপজেলা বিএনপির সাবেক নেতা শেখ সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই আল আমিন তাকে আটক করেন। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ফোন দিলে এসআই বলেন, হাসপাতালে যেতে। সেখানে গিয়ে দেখি, জুয়েল মারা গেছেন।’’
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘‘রাত ৮টা ৫০ মিনিটে পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরীক্ষা করে তাকে মৃত পাওয়া যায়।’’
এ বিষয়ে জানতে বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশের কোনো কর্মকর্তা কিংবা পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/রুবেল/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মো. আবদুল্লাহ (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিনকে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়ি ও গুইমারার পরিস্থিতি থমথমে, নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর
ঠাকুরগাঁওয়ে মা-মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান আব্দুল্লাহ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন করা হয় আবদুল্লাহকে।
মারা যাওয়া আবদুল্লাহ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে।
সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়াইল গ্রামে একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়রা আব্দুল্লাহকে আটক করে মারধর করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে সোপর্দ করার পর পুলিশ তার ওপর আরো নির্যাতন চালায়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে আবদুল্লাকে চারদিন আটকে রাখা হয়। ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিন এ ঘটনা নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কিংবা থানার ওসিকে অবগত করেনি।
আব্দুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় তার ছোট ভাই সাকিল মিয়া বাদী হয়ে সোমবার নবীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিম উদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা তবি মিয়া, আলামিন, আয়নাল হককে আসামি করা হয়। ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত এসআই মহিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ