প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। গতকাল সোমবার ইউনূস ও দুদক বরাবর পাঠানো এক উকিল নোটিশে তিনি বলেছেন, তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য।

সে সঙ্গে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা, বিশেষ করে তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকা, রাজনৈতিক দল এবং দেশসেবার কাজে বিঘ্ন ঘটাতে তারা এসব অভিযোগ তুলেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড এলএলপির মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন টিউলিপ, যেখানে আগের কোনো চিঠির জবাব না পাওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাও করা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করে দুদক। কোনো কোনো মামলায় তাঁর ভাগনি টিউলিপের নামও রয়েছে। এসব মামলার বিষয়ে দুদক ও টিউলিপের মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে। তবে টিউলিপের অভিযোগ, ড.

ইউনূস বা দুদক এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো চিঠির জবাব দেয়নি।

সবশেষ উকিল নোটিশে টিউলিপ বলেন, গত ১৮ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ৪ জুন একটি চিঠি পাঠানো হয় ড. ইউনূসকে।

গত ৯ জুন চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে যান প্রধান উপদেষ্টা। সেই সফরের আগে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ চেয়ে একটি চিঠি পাঠানোর কথা জানান টিউলিপ। চিঠিতে তিনি ড. ইউনূসকে হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ বা বিকেলের চা পানের আমন্ত্রণ জানান। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর সেই চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও টিউলিপকে সাক্ষাৎ দেননি ড. ইউনূস। গতকালের উকিল নোটিশে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করা হয়।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টিউলিপের সঙ্গে দেখা না করার যে কারণ ড. ইউনূস তুলে ধরেন, তার সমালোচনাও করা হয়েছে নোটিশে।

বলা হয়, বিবিসি রেডিওর সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূসের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে দুটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়। প্রথমত, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেয়ে তিনি হতাশ কিনা। দ্বিতীয়ত, টিউলিপের সঙ্গে তিনি কেন সাক্ষাৎ করেননি। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অবাক করার মতো অবস্থান নিয়েছিলেন। তিন সেদিন বলেছিলেন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া এবং তিনি তাতে হস্তক্ষেপ করতে চান না।

টিউলিপ মনে করেন, তাঁর সঙ্গে বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, টিউলিপের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টা যেসব অভিযোগ তুলেছেন, সেগুলো মিথ্যা। দ্বিতীয় কারণ তুলে ধরতে গিয়ে ড. ইউনূসের একাধিক সাক্ষাৎকারকে উদ্ধৃত করা হয়েছে, যেগুলোতে তিনি টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলেছিলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এ নোটিশের একটি অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টাকেও পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। নোটিশে টিউলিপ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের এসব মিথ্যা প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। দয়া করে এখন এটি নিশ্চিত করুন, দুদকের তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, যদি এই চিঠি এবং আমাদের আগের চিঠিগুলোর যথাযথ জবাব ৩০ জুনের মধ্যে না দেন, তবে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তিসংগতভাবেই বিষয়টির ইতি ঘটেছে বলে ধরে নেবেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট উল প স দ দ ক ব র ট শ র জন ত ড ইউন স য ক তর জ য ট উল প র ইউন স র র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টায় ড. ইউনূস ও দুদক

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। গতকাল সোমবার ইউনূস ও দুদক বরাবর পাঠানো এক উকিল নোটিশে তিনি বলেছেন, তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য।

সে সঙ্গে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা, বিশেষ করে তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকা, রাজনৈতিক দল এবং দেশসেবার কাজে বিঘ্ন ঘটাতে তারা এসব অভিযোগ তুলেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড এলএলপির মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন টিউলিপ, যেখানে আগের কোনো চিঠির জবাব না পাওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাও করা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করে দুদক। কোনো কোনো মামলায় তাঁর ভাগনি টিউলিপের নামও রয়েছে। এসব মামলার বিষয়ে দুদক ও টিউলিপের মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে। তবে টিউলিপের অভিযোগ, ড. ইউনূস বা দুদক এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো চিঠির জবাব দেয়নি।

সবশেষ উকিল নোটিশে টিউলিপ বলেন, গত ১৮ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ৪ জুন একটি চিঠি পাঠানো হয় ড. ইউনূসকে।

গত ৯ জুন চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে যান প্রধান উপদেষ্টা। সেই সফরের আগে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ চেয়ে একটি চিঠি পাঠানোর কথা জানান টিউলিপ। চিঠিতে তিনি ড. ইউনূসকে হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ বা বিকেলের চা পানের আমন্ত্রণ জানান। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর সেই চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও টিউলিপকে সাক্ষাৎ দেননি ড. ইউনূস। গতকালের উকিল নোটিশে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করা হয়।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টিউলিপের সঙ্গে দেখা না করার যে কারণ ড. ইউনূস তুলে ধরেন, তার সমালোচনাও করা হয়েছে নোটিশে।

বলা হয়, বিবিসি রেডিওর সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূসের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে দুটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়। প্রথমত, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেয়ে তিনি হতাশ কিনা। দ্বিতীয়ত, টিউলিপের সঙ্গে তিনি কেন সাক্ষাৎ করেননি। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অবাক করার মতো অবস্থান নিয়েছিলেন। তিন সেদিন বলেছিলেন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া এবং তিনি তাতে হস্তক্ষেপ করতে চান না।

টিউলিপ মনে করেন, তাঁর সঙ্গে বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার দুটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, টিউলিপের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টা যেসব অভিযোগ তুলেছেন, সেগুলো মিথ্যা। দ্বিতীয় কারণ তুলে ধরতে গিয়ে ড. ইউনূসের একাধিক সাক্ষাৎকারকে উদ্ধৃত করা হয়েছে, যেগুলোতে তিনি টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলেছিলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এ নোটিশের একটি অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টাকেও পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। নোটিশে টিউলিপ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের এসব মিথ্যা প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। দয়া করে এখন এটি নিশ্চিত করুন, দুদকের তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, যদি এই চিঠি এবং আমাদের আগের চিঠিগুলোর যথাযথ জবাব ৩০ জুনের মধ্যে না দেন, তবে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তিসংগতভাবেই বিষয়টির ইতি ঘটেছে বলে ধরে নেবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ