সরকার প্রথমবারের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকল্প প্রণয়ন, অনুমোদন ও বাস্তবায়নের গতি বাড়াতে ৩১৫ কোটি টাকার একটি সংস্কার প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। একই সঙ্গে রাজস্ব ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় বাড়াতে ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে। এ দুটিসহ প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার মোট ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। 

গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলোতে সরকারি অর্থায়ন রয়েছে ৩ হাজার ১৮০ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন রয়েছে ২৩০ কোটি টাকার বেশি। আগামী অর্থবছরের বাজেট পাস হওয়ার দুই দিনের মাথায় গতকাল চলতি অর্থবছরের শেষ বৈঠকে বসে একনেক।
সভায় অনুমোদন হওয়া প্রকল্পগুলো নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ৩১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ইমপ্রুভমেন্ট অব পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইপিআইএমএস) শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা বিভাগের কার্যক্রম বিভাগে একটি নতুন ডিজিটাল ডেটাবেজ সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত। 

বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নেওয়া এ উদ্যোগের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে– প্রকল্প বাস্তবায়নের বিলম্ব কমানো এবং অর্থায়নের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানো। প্রকল্পের আওতায় একটি একক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, তদারকি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় এআই প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হবে।
এছাড়া দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন ও অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় বাড়াতে ১ হাজার ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং বাকিটুকু অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক। ‘অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ শক্তিশালীকরণ প্রকল্প (এসডিআরএমপি)’ শীর্ষক এ প্রকল্পটির মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সক্ষমতা বাড়ানো হবে। ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০৩০ সালের জুন পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এবং এনবিআর।

এ ছাড়া আরও যেসব প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে– উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় সংশোধিত), বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয় জনসমাজের সমন্বিত সেবা ও জীবন-জীবিকা উন্নয়ন, সাতটি বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ, নবনির্মিত ৪টি মেরিন একাডেমিতে সিমুলেটর ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থাপনের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি, এক্সেস টু জাস্টিস ফর উইমেন: স্ট্রেনদেনিং কমিউনিটি ডিসপিউট রেজলিউশন অ্যান্ড ইমপ্রুভিং কেইস ম্যানেজমেন্ট, তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত), সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত), কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন (প্রথম সংশোধিত), নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ, কার্যক্রম বিভাগে একটি নতুন ডিজিটাল ডেটাবেজ সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি শক্তিশালীকরণ (তৃতীয় সংশোধিত), প্রকিউরমেন্ট মডারনাইজেশন টু ইমপ্রুভ পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি (পিএমপিএসডি) প্রকল্প ইত্যাদি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভবিষ্যতে কি–বোর্ড ও মাউস ছাড়াই চলবে কম্পিউটার, জানাল মাইক্রোসফট

কি–বোর্ড বা মাউস নয়, ভবিষ্যতে কণ্ঠস্বর, হাতের ইশারা বা চোখের মণি নড়াচড়া করেই উইন্ডোজ কম্পিউটার চালানো যাবে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশিত ‘মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০৩০ ভিশন’ শীর্ষক ভিডিওতে আগামী পাঁচ বছরে উইন্ডোজ ব্যবহারের অভিজ্ঞতা কীভাবে বদলে যাবে, সে ধারণা তুলে ধরেছে প্রতিষ্ঠানটি।

ভিডিওতে মাইক্রোসফটের এন্টারপ্রাইজ ও অপারেটিং সিস্টেম সুরক্ষা বিভাগের করপোরেট ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভিড ওয়েস্টন বলেন, আজকের প্রজন্মের কাছে ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম যেমন অপরিচিত, তেমনি আগামী দিনে মাউস চালানো বা কি–বোর্ডে টাইপ করা ঠিক ততটাই অচেনা মনে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে মানুষ কম্পিউটারের সঙ্গে চোখ দিয়ে কম কাজ করবে। বেশি কাজ করবে কথা বলে। ব্যবহারকারী ও যন্ত্রের মধ্যে কথোপকথনের মাধ্যমেই যোগাযোগ তৈরি হবে। ভবিষ্যতের উইন্ডোজ হবে বহুমাত্রিক, যার সঙ্গে ব্যবহারকারী কণ্ঠস্বর, হাতের ইশারা বা চোখের দৃষ্টিতে কথা বলার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন। এই ভবিষ্যৎ চিত্র অনেকের কাছেই এখন কল্পবিজ্ঞানের মতো মনে হতে পারে, তবে প্রযুক্তি খাতে মাইক্রোসফটের চলমান বিনিয়োগ এই ধারণাকে বাস্তবের পথে এগিয়ে নিচ্ছে।

গত কয়েক বছরে মাইক্রোসফট তার বিভিন্ন পণ্যে এআই ফিচার ‘কোপাইলট’ যুক্ত করেছে। এটি এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে উইন্ডোজ ও অফিস সফটওয়্যারে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন কাজ সহজ করে দিচ্ছে। সম্প্রতি চালু হওয়া ‘হে কোপাইলট’ ফিচারের মাধ্যমে কণ্ঠস্বরে নির্দেশ দিয়েই ব্যবহারকারী উইন্ডোজের বিভিন্ন সেটিংস পরিবর্তন করতে পারেন কিংবা ইন্টারনেট থেকে তথ্য খুঁজে নিতে পারেন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির উন্নতির কারণে কম্পিউটার ও ল্যাপটপের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে ওয়েস্টন জানান, এআই প্রযুক্তি রুটিন ধরনের কাজ যেমন হিসেব তৈরি, ব্যয়ের রিপোর্ট বা স্প্রেডশিট বানানো এসবের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেবে। এতে ব্যবহারকারীরা সময় বাঁচাতে পারবেন এবং বেশি মনোযোগ দিতে পারবেন সৃজনশীল ও তাৎপর্যপূর্ণ কাজে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০৩০ নিয়ে চ্যাটজিপিটির কারিগর স্যাম অল্টম্যানের ভবিষ্যদ্বাণী, শুনলে নড়েচড়ে বসবেন
  • ভবিষ্যতে কি–বোর্ড ও মাউস ছাড়াই চলবে কম্পিউটার, জানাল মাইক্রোসফট