এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। এবার নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন।

এবার মোট পরীক্ষার্থী গতবারের চেয়ে ৮১ হাজারের বেশি কমেছে। তিন বছরের মধ্যে এবারই পরীক্ষার্থী সবচেয়ে কম। এ ছাড়া দুই বছর আগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির পর রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করেও সোয়া চার লাখের বেশি শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষা দিচ্ছেন না।

এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষার্থী ১০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি। গতবারের তুলনায় এ বছর এইচএসসিতে প্রায় ৭৩ হাজার পরীক্ষার্থী কমেছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন আলিমে পরীক্ষার্থী কমেছে প্রায় দুই হাজার। আলিমে এবার পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজারের বেশি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি। কমেছে সাত হাজারের মতো।

সারা দেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে এসব পরীক্ষা। এ পরীক্ষার কারণে আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আগামী বছরের পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচি

এদিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া উচ্চমাধ্যমিক স্তরের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম গত বছরের আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে। এসব শিক্ষার্থী ২০২৬ সালের মে-জুন মাসে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এসব পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সব বিষয়ে পূর্ণ সময়ে ও পূর্ণ নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুনএইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা দিচ্ছেন না সোয়া ৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ১৭ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ট পর ক ষ র থ র পর ক ষ ও সমম ন বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হলগুলোতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনো ধরনের রাজনীতি করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘোষণায় ছাত্রনেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ইতিমধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের নানা পর্যায়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি থাকা না–থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে।

গত শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলে রাজনীতি বন্ধের ওই ঘোষণা দেয়। তবে গতকাল শনিবার দিনভর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। এ বিষয়ে করণীয় ও রূপরেখা ঠিক করতে গতকাল দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠক করেছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আজ রোববার বিকেলে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন তাঁরা।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের জন্য সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এরপর ওই দিন মধ্যরাতে হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ ছাত্র–ছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসেন। রাত একটার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। তখন উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। পরে রাত তিনটার দিকে বিক্ষোভের মুখে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ হলগুলোতে ‘প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের আশ্বাসে উল্লাস প্রকাশ করে হলে ফিরে যান। প্রক্টরের ওই ঘোষণার আধঘণ্টা পর স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অফিস থেকে এক প্রজ্ঞাপন আসে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের কমিটিভুক্তরা পদত্যাগ ও মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে হলে অবস্থান করতে পারবেন। অন্যথায় তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পর ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে বিতাড়িত হয় ছাত্রলীগ। সে সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিটি হলের হল প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে—এমন বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর নেয়। মূলত সেই বিজ্ঞপ্তির আলোকে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করায় ক্ষোভ জানায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা হলের তালা ভেঙে বেরিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ