এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ায় কেএমপি ঘেরাও, প্রধান ফটকে তালা
Published: 25th, June 2025 GMT
উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাসকে পুলিশি হেফাজত থেকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছেন এলাকাবাসী। তারা কেএমপির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। সদর দপ্তরের সামনের প্রধান সড়ক অবরোধ থাকায় রূপসা থেকে শহরে প্রবেশ পথে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে এলাকাবাসী কেএমপি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। সন্ধ্যায় শেখ খবর পাওয়া পর্যন্ত সড়কে বিক্ষোভ করছিলেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগের এক দফা দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
আরো পড়ুন: খুলনায় এসআইকে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ
আরো পড়ুন:
সড়ক অবরোধ করে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
বকেয়া বেতনের দাবিতে নারায়ণগঞ্জের সড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
কেএমপি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে খানজাহান আলী থানা এলাকা থেকে স্থানীয়রা মারধর করে এসআই সুকান্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তিনি বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানায় কর্মরত আছেন। আদালতে একটি মামলায় সাক্ষী দিতে খুলনায় এসেছিলেন তিনি। তার নামে খুলনা সদর থানায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় গত ১২ ডিসেম্বর মামলা হয়। মামলাটি বর্তমানে ডিবিতে তদন্তাধীন। এছাড়াও বিএনপির নগর সভাপতি শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুরসহ দুইটি মামলা চলমান।
খানজাহান আলী থানার ওসি কবীর হোসেন বলেন, “গতকাল মঙ্গলবার এসআই সুকান্ত আদালতে সাক্ষী দিয়ে বাইকযোগে কর্মস্থলে ফিরছিলেন। শিরোমণি এলাকায় পৌঁছালে একদল লোক তাকে মারধর করেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি চলে যান। তার বিরুদ্ধে খানজাহান আলী থানায় কোনো অভিযোগ নেই।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জয়পুরহাটে রিমান্ডে নিয়ে আসামিকে নির্যাতন, এসআইকে থানা থেকে প্রত্যাহার
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পুলিশি হেফাজতে (রিমান্ড) নির্যাতনের ঘটনায় চিকিৎসক দিয়ে আসামির শরীর পরীক্ষা করে আঘাতসংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং সিভিল সার্জনকে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ আদেশ দেন।
আক্কেলপুর থানার উপপরির্দশক (এসআই) গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে পুলিশি হেফাজতে থাকা ওই আসামিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আদালতের আদেশের পর গোলাম রব্বানীকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আক্কেলপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গত মার্চে ইসলামী ব্যাংকের আক্কেলপুর এজেন্ট শাখায় গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় থানা ও আদালতে পৃথক আটটি মামলা করা হয়। এসব মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়। তাঁরা হলেন এজেন্ট শাখার মালিক জাহিদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক রিজওয়ানা ফারজানা ও ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা। তিন আসামি কারাগারে ছিলেন। ৪ আগস্ট তিন আসামিকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামি সোহেল রানা পুলিশি হেফাজতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম রব্বানী গতকাল আদালতে মাসুদ রানাকে হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রের্কডের আবেদন করেন এবং আরও পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতের নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। তবে আদালত ওই আবেদন নামঞ্জুর করে একটি আদেশ দেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, আসামি জাহিদুল ইসলাম ও রিজওয়ানা ফারজানাকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁরা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন বলে দোষ স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানান। অপর আসামি মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানান, ৪ আগস্ট তাঁকে পুলিশি হেফাজতে এনে এসআই গোলাম রব্বানী জানালার সঙ্গে হাতকড়া লটকায়ে বেধড়ক মারপিট করেছেন। তাঁর শরীরের ক্ষতচিহ্ন আদালতের পরীলক্ষিত হয়। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক নন। এ ছাড়া পুলিশি হেফাজতে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করায় তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আইনগত সুযোগ নেই।
আদালত একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক দিয়ে মাসুদ রানার দেহ পরীক্ষা করে শরীরের আঘাতসংক্রান্ত প্রতিবেদন জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে আগামী ১০ আগস্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, আসামি মাসুদ রানার জবানবন্দি পর্যালোচনায় দেখা যায়, আক্কেলপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসামির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ না করেই পুলিশের কথা শুনে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। এটি দায়িত্বের চরম অবহেলা। ঘটনাটি তদন্ত করে ১৭ আগস্ট সিভিল সার্জনকে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এসআই গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তিনজন আসামির কাউকেই পুলিশি হোফাজতে নির্যাতন করিনি। আসামি মাসুদ রানা টাকা আত্মসাতের কথা গ্রাহকদের সামনে স্বীকার করেছেন। এখন মামলাগুলো অভিযোগপত্র প্রস্তুতের পর্যায়ে রয়েছে। মাসুদ রানা মামলা থেকে বাঁচতে কৌশল খুঁজছেন।’
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, এসআই গোলাম রব্বানী পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির সঙ্গে অপেশাদার আচরণ করেছেন। এ কারণে তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।