খুলনায় পুলিশ হেফাজত থেকে ছেড়ে দেওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাসকে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পুলিশ কমিশনারের অপসারণের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবারও খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা আজও প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। সড়কে টায়ারে আগুন দিয়েছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার খুলনার খানজাহান আলী থানা এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা সুকান্ত দাসকে আটকে মারধর করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়। এর প্রতিবাদে কেএমপি কমিশনারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।

পুলিশ জানায়, এসআই সুকান্ত চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানায় কর্মরত ছিলেন। আজ তাঁকে আলমডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করেছে খুলনা মহানগর পুলিশ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একটি যৌথ দল। তাঁকে খুলনায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেএমপি কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার। তিনি আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, খুলনা সদর থানায় বিএনপি নেতা শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুরের মামলায় সুকান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারে নির্ধারিত বিধিবিধান অনুসরণ করতে হয়। এটা না হলে পরে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়। তাই কিছুটা সময় লেগেছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, এসআই সুকান্তর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর খুলনা সদর থানায় একটি মামলা হয়, যেখানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে। এ ছাড়া বিএনপির খুলনা মহানগর সভাপতি শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুরসহ আরও দুটি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

এদিকে আজ বিকেল থেকে কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা পুলিশ কমিশনারের অপসারণের এক দফা দাবিতে নানা স্লোগান দিচ্ছেন।

বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা বলছেন, সুকান্তকে প্রথমে আটক করার পরও আইনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদেই তাঁরা আন্দোলন করছেন।

গতকাল বুধবারও সুকান্ত দাসকে গ্রেপ্তার ও পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে কেএমপি সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়েছিল। বিক্ষোভের প্রথম দিন গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করেন। পরে রাত সাড়ে নয়টায় কেএমপির সদর দপ্তরের তালা খুলে পুলিশের কর্মকর্তারা বেরিয়ে আসেন এবং সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মো. আবদুল্লাহ (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিনকে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

খাগড়াছড়ি ও গুইমারার পরিস্থিতি থমথমে, নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর

ঠাকুরগাঁওয়ে মা-মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার 

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান আব্দুল্লাহ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন করা হয় আবদুল্লাহকে।

মারা যাওয়া আবদুল্লাহ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে। 

সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়াইল গ্রামে একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়রা আব্দুল্লাহকে আটক করে মারধর করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে সোপর্দ করার পর পুলিশ তার ওপর আরো নির্যাতন চালায়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে আবদুল্লাকে চারদিন আটকে রাখা হয়। ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিন এ ঘটনা নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কিংবা থানার ওসিকে অবগত করেনি।

আব্দুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় তার ছোট ভাই সাকিল মিয়া বাদী হয়ে সোমবার নবীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিম উদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা তবি মিয়া, আলামিন, আয়নাল হককে আসামি করা হয়। ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত এসআই মহিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাগড়াছড়িতে হত্যা ও হামলার ঘটনায় ৩ মামলা
  • পাথরঘাটায় ৪০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ
  • পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গ্রেপ্তার