হামজাকে দেখেই তাঁদের বাংলাদেশি হওয়ার স্বপ্ন জাগে
Published: 27th, June 2025 GMT
শুক্রবার ছুটির দিনে জাতীয় স্টেডিয়ামে বসল যেন প্রবাসীদের মিলনমেলা! কেউ এসেছেন ইংল্যান্ড থেকে, কেউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে, কেউ আবার সুইডেন থেকে
আগামীকাল থেকে তিন দিন এই ভেন্যুতে হবে প্রবাসী ফুটবলারদের ট্রায়াল। তার আগে পরিবার–পরিজন নিয়ে সবাই হাসি–আনন্দে কাটিয়েছেন আজকের বিকেলটা। মূলত আনুষ্ঠানিক ট্রায়ালের আগে আজ বাফুফের ওরিয়েন্টশন সেশনে যোগ দিতে আসেন এসব প্রবাসী ফুটবলার।
তাঁদেরই একজন তোফায়েল তানিম। বর্তমানে খেলছেন ইংল্যান্ডের ক্লাব সাউথএন্ড ম্যানর এফসিতে। ২৩ বছর বয়সী এই সেন্টার ব্যাকের স্বপ্ন বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলা।
তাঁর এই স্বপ্নের শুরুটা হয়েছিল হামজা চৌধুরীকে দেখেই, ‘যেদিন দেখলাম হামজা বাংলাদেশের হয়ে খেলছেন, সেদিনই বাবাকে বলে দিই আমিও খেলতে চাই। তাঁকে দেখেই তো এখানে এসেছি।’
তানিমের মতো সুইডেনপ্রবাসী আশিক রহমানও বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চান। সুইডেনের ফুটবল একাডেমি অরেঞ্জ এফকেতে খেলা এই লেফট উইঙ্গার বললেন, ‘খুব ভালো লাগছে এখানে এসে। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি আমি একজন বাংলাদেশি। বাংলাদেশকে আমি খুব ভালোবাসি। দেশের হয়ে খেলতে চাই।’
ট্রায়াল দিতে আসা প্রবাসী ফুটবলারদের বাবা–মায়েরাও খুব রোমাঞ্চিত। ইংল্যান্ডের পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের ব্র্যাডফোর্ড থেকে এসেছেন আশরাফ আবু। তাঁর খুব ইচ্ছা ছেলে মুসা আল-ঘানি একদিন বাংলাদেশের জার্সিতে খেলবেন।
১৭ বছর বয়সী মুসা বর্তমানে খেলছেন ইংল্যান্ডের ইউএফসিএ লিডস নামের একাডেমিতে। মিডফিল্ডে খেলা এই তরুণের চোখেমুখেও রঙিন স্বপ্ন। বাবা আশরাফ বললেন ছেলেক নিয়ে প্রত্যাশার কথা, ‘আমার ছেলে খুবই রোমঞ্চিত। সে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চায়। আসলে হামজা আসার পর ছেলেদের মধ্যে আগ্রহটা বেড়েছে। দেখা যাক কী হয়।’
২৮ থেকে ৩০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে ৫২ জন ফুটবলারের ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও সেটা কমে হয়েছে ৪৮। আজ বিকেলে ওরিয়েন্টশন ও রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের সময় ৪৩ জন উপস্থিত ছিলেন। বাকি পাঁচজন তখনো দেশে ফেরার পথে।
বাফুফের এই ট্রায়াল প্রক্রিয়ায় সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন ডেনমার্কপ্রবাসী সাকিব মাহমুদ। ফুটবলারের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ নিয়ে তিনি বলছেন, ‘সম্প্রতি দুজন ফুটবলার চোটে পড়েছেন। আর মধ্যপ্রাচ্যে ফ্লাইট সংকটের জন্য একজনের আসার সূচি বদলেছে।’ অন্য একজন বুধবার না আসার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।
দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।
আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।
স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে