২০১৬ সালে জাপানের ফুকুয়ামায় এক জোড়া আম (এক কেজি) বিক্রি হয় পাঁচ লাখ ইয়েনে। তখনকার বিনিময় হার হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা! ২০১৯ সালে এক জোড়া আমের দাম ওঠে ৪ লাখ টাকার বেশি। ২০২৩ সালে এক কেজি আম বিক্রি হয় সাড়ে চার লক্ষাধিক টাকায়। এই আম এখন ফলের জগতের ‘তারকা’, বলা হয়ে থাকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম। ইন্টারনেটের কল্যাণে মোটামুটি সবার কাছেই এটি পরিচিত। পোশাকি নাম ‘মিয়াজাকি’। আসল নাম ‘তাইয়ো নো তামাগো’, ইংরেজিতে ‘এগ অব দ্য সান’ অর্থাৎ সূর্যডিম। গায়ের রং সকালের সূর্যের মতো টকটকে লাল। আকৃতি ডিমের মতো। এ জন্যই এমন খেতাব। সবই না হয় বোঝা গেল, কিন্তু এর উচ্চমূল্যের কারণ কী? কী এমন আছে এই আমে?

কেন এত দাম

আদতে যতটা না আমে আছে, তার চেয়ে বেশি আছে নামে। সেই যে কোনোভাবে কোনো কিছুর একবার ‘নাম’ হয়ে গেলে, সেই নামের ভারেই বাড়বাড়ন্ত দাম থাকে তার! হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে ফল-দুনিয়ার ‘সেনসেশন’ হওয়ার ফলে নামের ভার আছে বটে; তবে উচ্চ মূল্য হওয়ার যোগ্যতাও কিন্তু এর কম কিছু নয়। মূলত বাজারদর নির্ধারণে কোনো জিনিস উচ্চমূল্য হওয়ার জন্য যেসব বিষয় বিবেচিত হয়, মিয়াজাকির ক্ষেত্রে তা বেশ ভালোভাবেই আছে।

কথায় আছে ‘আগে দর্শনদারি, পরে গুণবিচারী’। তাই প্রথমেই বলা যেতে পারে এর বাহ্যিক সৌন্দর্যের কথা। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, এই আম দেখতে উদীয়মান সূর্যের মতো উজ্জ্বল লাল। ডিমের মতো গোল। ফলে মিয়াজাকি দেখাও যেন ‘চোখের সুখ’। এরপর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে এর অতুলনীয় স্বাদের কথা। এই আমে ১৫ শতাংশ বা তার বেশি পরিমাণে সুগার থাকে। ফলে খেতে বেশ মিষ্টি ও রসালো। সেই সঙ্গে আঁশবিহীন বলে জিবে বা দাঁতের ফাঁকে আঁশ আটকায় না। আমের ভেতরের অংশ, অর্থাৎ পাল্প অত্যন্ত নরম ও মোলায়েম। মুখে দিলেই গলে যায়। চিবোতে কষ্ট হয় না। মিয়াজাকির গন্ধ? মিষ্টি ফুলের মতো। তবে মোটেই তীব্র নয়, হালকা। পাল্পে থাকে হালকা মধুর সুঘ্রাণ। আর প্রাকৃতিকভাবে পাকানো হয় বলে এর ঘ্রাণ হয় বিশুদ্ধ ও সতেজ।

মিয়াজাকি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের অপরিণামদর্শিতা ও অবহেলার কারণে সমস্যাগুলো ঘনীভূত হচ্ছে

অন্তর্বর্তী সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত, অবহেলা, ব্যর্থতা ও স্বজনপ্রীতির কারণে দেশের সমস্যাগুলো আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ফলে বছর পার হলেও দেশের নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনও হুমকির মুখে পড়বে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে আয়োজিত ‘অভ্যুত্থান–উত্তর বাংলাদেশ: সংস্কার প্রস্তাবনার এক বছর’ শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় এ কথা উঠে আসে। দলীয় কার্যালয়ে এই পর্যালোচনা সভার আয়োজন করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে চার দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সংবিধান সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ, সরকারের উপদেষ্টা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ, উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন ও ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করা এবং সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজন নেই এমন গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন শুরু করা।

বিভক্তি তৈরি করে অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান সংস্কারের সুযোগ নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকার অতীতের সরকারগুলোর স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচারের পথ বন্ধ করে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সংবিধান সংস্কারের পথে এগিয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে সরকার এই সুযোগ ব্যর্থ করার পথে হাঁটছে।’

সব সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়নি উল্লেখ করে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, এখনই উদ্যোগ নিলে অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনেকাংশ পূরণ করা সম্ভব। দেশের বর্তমান সমস্যাগুলোকে ভবিষ্যতে ভয়াবহ সংকটে পরিণত হওয়া থেকে ঠেকানো সম্ভব। সরকার এই উদ্যোগ নিলে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন সহায়তা করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন হাসনাত কাইয়ূম।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোরও উচিত ফ‍্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে নিজেদের এক বছরের দলীয় কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করা।

বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা সত্ত্বেও জনসমর্থন কেন বেশি এবং সংস্কার নীতিতে চলা অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোর জনসমর্থন কেন কম, সেটিও পর্যালোচনার আহ্বান জানান মজিবুর রহমান।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) সোহেল শিকদারের সঞ্চালনায় সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া।

সভায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সমন্বয়ক সাকিব আনোয়ার, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইদুল খন্দকার, জাতীয় সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান, শেখ নাসিরউদ্দীন, ফরিদুল ইসলাম এবং রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক লামিয়া ইসলাম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ