খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

শনিবার (২৮ জুন) দুপুর ৩টার দিকে তারা কেএমপির সদর দপ্তরের সামনের সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ  করেন। ফলে বন্ধ হয়ে যায় খানজাহান আলী রোডে সব ধরনের যান চলাচল।

আরো পড়ুন: আলোচিত এসআই সুকান্ত অবশেষে গ্রেপ্তার

আরো পড়ুন:

পাবনা-ঢাকা বাস চলাচল বন্ধ 

এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ায় কেএমপি ঘেরাও, প্রধান ফটকে তালা

আন্দোলনকারীরা জানান, গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) খুলনার খানজাহান আলী থানা এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন ও বিএনপির নেতাকর্মীরা এসআই সুকান্ত দাসকে আটকে মারধর করেন। পরে তারা তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশ এসআই সুকান্ত দাসকে ছেড়ে দেয়।

ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে গত ১২ ডিসেম্বর এসআই সুকান্ত দাসের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় মামলা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিএনপির নগর সভাপতি শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুরসহ অন্য অভিযোগে দুটি মামলা আছে। এসআই সুকান্ত দাস বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানায় কর্মরত ছিলেন।

এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে কেএমপি কমিশনারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে ছাত্র-জনতা। পরবর্তীতে পুলিশ সুকান্ত দাসকে গ্রেপ্তার করলেও কমিশনারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন আন্দোলনকারীরা।

আরো পড়ুন: এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ায় কেএমপি ঘেরাও, প্রধান ফটকে তালা

আন্দোলনকারীদের পক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি জানান, খুলনায় দিন দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতি হচ্ছে। প্রায়ই হত্যাকাণ্ড ঘটছে। চোরাচালান, চাঁদাবাজি, মাদকের সিন্ডিকেট কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। সব অপরাধের দায় নিয়ে পুলিশ কমিশনারকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি যতক্ষণ পর্যন্ত পদত্যাগ না করছেন আন্দোলন চলবে বলেও জানান তিনি।

আরো পড়ুন: খুলনায় এসআইকে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ 

গত বৃহস্পতিবার পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ এসআই স ক ন ত দ স র র পদত য গ ক এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

জামিনে মুক্ত ৩ পুলিশ সদস্য, পালিয়ে যাওয়ার শঙ্কা নিহতের মায়ের

সিলেটে পুলিশ হেফাজতে নিহত রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলার আসামিদের একে একে জামিন হওয়ায় ক্ষোভ ও আতঙ্ক প্রকাশ করেছে পরিবার। রায়হানের মা সালমা বেগমের দাবি, এতে করে আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

মামলাটি থেকে সর্বশেষ গত রোববার প্রধান আসামি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আকবরের জামিনের পর একই মামলায় আরও দুই পুলিশ সদস্য জামিনে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। তাঁরা হলেন কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস (৩৮) ও হারুন অর রশিদ (৩২)। ২০ ফেব্রুয়ারি টিটু এবং ১৭ এপ্রিল হারুন অর রশিদ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

আরও পড়ুনসিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই আকবরের জামিন১১ আগস্ট ২০২৫

এর আগে ২০২২ সালের ১২ জুন জামিন পেয়ে পলাতক আছেন এসআই হাসান উদ্দিন (৩২)। এ ছাড়া মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের আগেই দেশের বাইরে পালিয়ে যান আবদুল্লাহ আল নোমান নামের আরেক আসামি। তিনি সম্পর্কে আকবরের আত্মীয়।
সালমা বেগম গতকাল সোমবার বিকলে প্রথম আলোকে বলেন, মামলার অভিযুক্তরা একে একে জামিনে বের হয়ে যাচ্ছেন। গত রোববার আকবর হোসেন জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছেন। বিষয়টি তিনি গতকাল আদালতে গিয়ে জানতে পেরেছেন। এর আগে জামিন পাওয়া দুজন মামলার তারিখে আদালতে হাজির হচ্ছেন না। আসামিরা উল্টো বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আবুল ফজল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ৬৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বর্তমানে মামলাটি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর্যায়ে আছে। সর্বশেষ গত ১৫ জুলাই সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে আংশিক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত আগামী ৩ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পরবর্তী তারিখ ঘোষণা করেছেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন।

আরও পড়ুনএসআই আকবরের হুমকি—বুকে গুলি করব, পিঠ দিয়ে বের হবে২৪ অক্টোবর ২০২০

এই আইনজীবী বলেন, মামলায় অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী (৪৩)।

এ বিষয়ে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২–এর জ্যেষ্ঠ জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, উচ্চ আদালত থেকে আকবর হোসেনের জামিন মঞ্জুরের পর নিম্ন আদালত থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। পরে এ–সংক্রান্ত তথ্যের নথি কারাগারে পাঠানো হলে গত রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল একই কারাগার থেকে হারুনুর রশীদ জামিনে বের হয়েছেন। গত ২৫ মার্চ থেকে তাঁরা সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন।

আরও পড়ুন‘আমার রায়হানই যেন পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুর শেষ নাম হয়’২৩ অক্টোবর ২০২০

অভিযোগ আছে, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। পরে ১১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর অভিযোগের সত্যতা পায় সিলেট মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ওই বছরেই ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রধান অভিযুক্ত আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস, ফাঁড়ির ‘টু-আইসি’ পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিন ও আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।

আরও পড়ুন‘টাকা নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে আসো, আমাকে বাঁচাও’১২ অক্টোবর ২০২০আরও পড়ুনপুলিশের দাবি করা গণপিটুনির চিত্র মেলেনি সিসি ক্যামেরায় ১২ অক্টোবর ২০২০আরও পড়ুনইনচার্জসহ বরখাস্ত ৪, প্রত্যাহার ৩ পুলিশ১২ অক্টোবর ২০২০আরও পড়ুনপুলিশ ফাঁড়িতে যুবকের মৃত্যু: আসামি উল্লেখ না করে মামলা১২ অক্টোবর ২০২০

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে ২ নারীসহ ৫ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
  • জামিনে মুক্ত ৩ পুলিশ সদস্য, পালিয়ে যাওয়ার শঙ্কা নিহতের মায়ের
  • চট্টগ্রামে এসআইকে কুপিয়ে আহত, আটক ১৮
  • চট্টগ্রামে এসআইকে ছুরিকাঘাত করে পালাল আসামি, আটক ১৬
  • সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই আকবরের জামিন
  • গোপালগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ১৫
  • সারাদিন মোটরসাইকেলে ঘুরিয়ে রাতে ছেলেকে পুকুরে ফেলে দিলেন বাবা