নিজের সেলফি সামাজিক মাধ্যমে আপলোড থেকেও ঘটতে পারে বড় ধরনের বিপত্তি। নতুন করে কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমন কথা বলেছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
অনেকে কারণ ছাড়াই যেখানে-সেখানে সেলফি তুলতে পছন্দ করেন। কিন্তু হুটহাট তা নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার আগে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা উপেক্ষা করলে সেলফি হয়ে উঠতে পারে প্রতারণার হাতিয়ার।
বিদেশে বা দেশে পরিবার নিয়ে ঘুরতে গেছেন, আনন্দ উপভোগ করছেন। কাছে থাকা সর্বগুণের স্মার্টফোনে তোলা সেলফি হবে বিপদের কারণ। ছবির (সেলফি) ক্যাপশন দিয়ে মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে দিলেন সোশ্যাল মিডিয়াতে।
আনন্দঘন মুহূর্তের ছবি সবার কাছে পৌঁছে দিতে সাধারণত আপত্তি করেন না অনেকে। বিপত্তির শুরু সেখান থেকেই। সারাবিশ্বের কোটি কোটি সেলফিপ্রেমী এমন চর্চায় মত্ত। অনেক ছবি আবার সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
কিন্তু বর্তমানে সেলফি থেকেও বিপদে পড়ার ঘটনা ও শঙ্কা নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। কারণ, পরিবার নিয়ে দেশে-বিদেশে ঘুরতে গিয়ে তোলা ছবি থেকে সেলফি প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করছে অপরাধী চক্র। স্বাভাবিক নিয়মে প্রশ্ন সামনে আসে– কীভাবে সেলফি থেকে প্রতারণার পথ তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশে বা স্বদেশের যে কোনো প্রান্তে সপরিবারে বেড়াতে গিয়ে ছবি পোস্ট করলে প্রযুক্তির সহায়তায় ওই ছবির স্থানীয় অবস্থান শনাক্ত করা এখন খুবই সহজ। সাইবার জগতে বিচরণ করে এমন যে কেউ ওই ঘুরতে যাওয়া পরিবারের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে কয়েকটি পদ্ধতিতে প্রতারণার পরিকল্পনা করতে পারে। ঘটনার বিশ্লেষণে বলা হয়, পরিবার নিয়ে সফরে অনেকের বাড়ি অরক্ষিত থেকে যায়। প্রতারক চক্র সেখানে জেনেবুঝে চুরির পরিকল্পনা করতে পারে। শুধু তাই নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় পরিচিত কারও গলা ক্লোন করে ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করে বিপদের খবর পৌঁছে দিয়ে চাওয়া হতে পারে তাৎক্ষণিক টাকা। বিশ্বের কয়েকটি দেশের রাজধানীতে এমন কিছু ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা এমনও ঘটেছে, সেলফি থেকে ভুক্তভোগীর ছবি খণ্ডাংশ ক্রপ করে তা দুর্ঘটনার ছবি জুড়ে দিয়ে অর্থ আদায়ে কৌশল নেওয়া হয়।
গবেষকরা বলছেন, পরিবার ও নিজের জীবনাচরণ সহজেই সবার উন্মুক্ত করা অনুচিত। এমনকি ভ্রমণ করছেন, তাৎক্ষণিক আপডেট না দিয়ে বরং পরে তা শেয়ার করতে পারেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণে এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে সরকারের চুক্তি
লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এই চুক্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই পক্ষ এ চুক্তিতে সই করে। এতে ডেনমার্ক, বাংলাদেশ সরকার ও বন্দর সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা অংশ নেন।
চুক্তিতে সই করেন এপিএম টার্মিনালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টেইন ভ্যান ডোঙ্গেন ও চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
ডেনমার্কের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইবিএস এপিএম টার্মিনালসের হেড অব ইনভেস্টমেন্ট ভাস্কর সেনগুপ্ত, ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্ডলোসে হ্যানসেন ও বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) ও নৌপরিবহন সচিব নুরুন্নাহার চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনবলেন, ‘এই চুক্তি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতির জন্য বড় অবদান। যাঁদের মধ্যে এ নিয়ে সন্দেহ ছিল, আশা করি, আজ তা দূর হবে।’ তাঁর আরও আশা, এই ধারাবাহিকতায় মোংলা সমুদ্রবন্দর পরিচালনায়ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী বলেন, ‘লালদিয়া দেখিয়ে দিয়েছে—পিপিপি শুধু তত্ত্বে নয়, বাস্তবেও কার্যকর। ভবিষ্যতেও আমরা বাস্তবায়ন-কেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নেই মনোযোগ দেব।’ তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক বছরে চারটি নতুন সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে আছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ও একটি নির্ধারিত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত পাঁচ দশকে দুই দেশের উন্নয়ন সহযোগিতার সফলতা দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্ক সহায়তা থেকে ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। মাথাপিছু হিসাবে ডেনমার্ক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্য পূরণে লালদিয়া প্রকল্প নতুন মাইলফলক।’
পরিবহন কোম্পানি মেয়ার্স্কের চেয়ারম্যান রবার্ট মেয়ার্স্ক উগলা বলেন, লালদিয়া হবে অত্যাধুনিক গ্রিনফিল্ড টার্মিনাল; সেখানে নিরাপত্তা, অটোমেশন ও স্থায়িত্বের সর্বোচ্চ মান থাকবে। এতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে লজিস্টিকস খাতের অগ্রযাত্রায় এটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে থাকবে।