গাজীপুরে ‘জেদ্দা হাউজিং কোম্পানি লিমিটেড’ নামক একটি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আবাসন ব্যবসার মোড়কে চলা এই প্রতারণা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সম্প্রতি স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের পক্ষে অভিযোগকারী আব্দুস সাত্তার মোল্লা জানান, প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ১০-১৫ শতাংশ জমির মালিকানা পাওয়ার মাধ্যমে এলাকায় ৯০০ বিঘা জমির বিশাল হাউজিং প্রকল্পের বিজ্ঞাপন চালিয়ে আসছে। প্রকল্প এলাকায় বড় বড় সাইনবোর্ড টানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ইউটিউব এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিলবোর্ডের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেদ্দা হাউজিং কোম্পানি ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আর কোনো অনুমোদন নেয়নি। পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন কিংবা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে কোনো ছাড়পত্রও নেই প্রতিষ্ঠানটির।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কৃষিজমির উপর সামান্য কিছু অংশ বায়না করে কিংবা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে লে-আউট তৈরি করে প্লট বিক্রির কার্যক্রম চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। জমির প্রকৃত মালিকানা না থাকলেও ৩, ৫ এবং ১০ কাঠা আকারের প্লট বুকিং দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।

হাউজিং কোম্পানিটির বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, “মাত্র ২০ হাজার টাকায় ৩ কাঠার প্লট, প্রতি কাঠা ৬ লাখ টাকা, ৫০% ডাউন পেমেন্টে সাফ কাবলা রেজিস্ট্রেশন ও ৬০ কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ”। এ ধরনের অফার দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রলোভিত করছে তারা।

এ বিষয়ে প্লট দেখতে আসা এক সম্ভাব্য ক্রেতা মোতাহার মিয়া বলেন, “আমাদের দেখানো হয়েছে পুরো জমি হাউজিং কোম্পানির মালিকানায় রয়েছে। বলা হয়েছে ৯০০ বিঘা জমি রয়েছে এবং চাহিদা অনুযায়ী আরও জমি কেনা হবে।” 

তবে প্রকৃত জমির পরিমাণ সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজার।

অভিযোগকারীসহ স্থানীয়রা দ্রুত এই প্রতারণার বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাদের দাবি, কৃষিজমির অপব্যবহার এবং সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা বন্ধে জেদ্দা হাউজিং কোম্পানির বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রোফাইলে হাফেজ আশরাফুল ইসলামের নাম থাকলেও তিনি নিজেকে এমডি দাবি করে জানান, প্রকল্পে তার কোনো বিনিয়োগ নেই, কেবল দায়িত্ব পালন করছেন। পরিচালকের পদে রয়েছেন তার ছোট বোন আসমা আক্তার। 

কাগজপত্র ঘেঁটেও প্রকল্পের প্রকৃত মালিক কিংবা নিয়োগকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আরেফিন বাদল বলেন, “আমাদের কাছে এই কোম্পানি কোনো আবেদনই করেনি। পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোনো আবাসন প্রকল্প পরিচালনার সুযোগ নেই।”

অন্যদিকে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ কায়সার খসরু বলেন, “অনুমোদন ছাড়া আবাসন প্রকল্প পরিচালনা আইনগতভাবে অপরাধ। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। 

নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়।  পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ