‘জেদ্দা হাউজিং’-এর নামে কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ
Published: 29th, June 2025 GMT
গাজীপুরে ‘জেদ্দা হাউজিং কোম্পানি লিমিটেড’ নামক একটি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আবাসন ব্যবসার মোড়কে চলা এই প্রতারণা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সম্প্রতি স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের পক্ষে অভিযোগকারী আব্দুস সাত্তার মোল্লা জানান, প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ১০-১৫ শতাংশ জমির মালিকানা পাওয়ার মাধ্যমে এলাকায় ৯০০ বিঘা জমির বিশাল হাউজিং প্রকল্পের বিজ্ঞাপন চালিয়ে আসছে। প্রকল্প এলাকায় বড় বড় সাইনবোর্ড টানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ইউটিউব এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিলবোর্ডের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেদ্দা হাউজিং কোম্পানি ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আর কোনো অনুমোদন নেয়নি। পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন কিংবা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে কোনো ছাড়পত্রও নেই প্রতিষ্ঠানটির।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কৃষিজমির উপর সামান্য কিছু অংশ বায়না করে কিংবা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে লে-আউট তৈরি করে প্লট বিক্রির কার্যক্রম চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। জমির প্রকৃত মালিকানা না থাকলেও ৩, ৫ এবং ১০ কাঠা আকারের প্লট বুকিং দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
হাউজিং কোম্পানিটির বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, “মাত্র ২০ হাজার টাকায় ৩ কাঠার প্লট, প্রতি কাঠা ৬ লাখ টাকা, ৫০% ডাউন পেমেন্টে সাফ কাবলা রেজিস্ট্রেশন ও ৬০ কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ”। এ ধরনের অফার দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রলোভিত করছে তারা।
এ বিষয়ে প্লট দেখতে আসা এক সম্ভাব্য ক্রেতা মোতাহার মিয়া বলেন, “আমাদের দেখানো হয়েছে পুরো জমি হাউজিং কোম্পানির মালিকানায় রয়েছে। বলা হয়েছে ৯০০ বিঘা জমি রয়েছে এবং চাহিদা অনুযায়ী আরও জমি কেনা হবে।”
তবে প্রকৃত জমির পরিমাণ সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজার।
অভিযোগকারীসহ স্থানীয়রা দ্রুত এই প্রতারণার বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাদের দাবি, কৃষিজমির অপব্যবহার এবং সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা বন্ধে জেদ্দা হাউজিং কোম্পানির বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে প্রোফাইলে হাফেজ আশরাফুল ইসলামের নাম থাকলেও তিনি নিজেকে এমডি দাবি করে জানান, প্রকল্পে তার কোনো বিনিয়োগ নেই, কেবল দায়িত্ব পালন করছেন। পরিচালকের পদে রয়েছেন তার ছোট বোন আসমা আক্তার।
কাগজপত্র ঘেঁটেও প্রকল্পের প্রকৃত মালিক কিংবা নিয়োগকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আরেফিন বাদল বলেন, “আমাদের কাছে এই কোম্পানি কোনো আবেদনই করেনি। পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া কোনো আবাসন প্রকল্প পরিচালনার সুযোগ নেই।”
অন্যদিকে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ কায়সার খসরু বলেন, “অনুমোদন ছাড়া আবাসন প্রকল্প পরিচালনা আইনগতভাবে অপরাধ। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিটিভিতে আবার শোনা যাবে, ‘আমরা নতুন, আমরা কুঁড়ি...’
প্রায় দুই দশকের দীর্ঘ বিরতির পর আবারও ফিরছে নতুন কুঁড়ি। গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজস্ব পেজে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এই খবর শুনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়েছেন—কারও মনে পড়েছে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার স্মৃতি, কারও মনে ভেসে উঠেছে শৈশবের প্রিয় অনুষ্ঠানটির দৃশ্য। ফেসবুকে অনেকে ছবিও শেয়ার করেছেন।
১৯৬৬ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনে প্রথম প্রচারিত হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। অনুষ্ঠানের নাম রাখা হয়েছিল কবি গোলাম মোস্তফার ‘কিশোর’ কবিতা থেকে। যার প্রথম ১৫ লাইন অনুষ্ঠানের সূচনাসংগীত হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে মোস্তফা মনোয়ারের প্রযোজনায় আবার শুরু হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। সে সময় বিটিভির অন্যতম আলোচিত এই অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে শিশু-কিশোরদের স্বপ্নের মঞ্চ। নানা প্রান্ত থেকে উঠে আসা তরুণেরা গান, নাচ, অভিনয়, আবৃত্তি, গল্পবলা, কৌতুকসহ বিভিন্ন শাখায় নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ পান। ২০০৫ সাল পর্যন্ত চলে এ অনুষ্ঠান। পরে নানা কারণে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয় বিটিভি। ২০২০ সালে অনুষ্ঠানটি আবার শুরু করার খবর শোনা গিয়েছিল। কিন্তু পরে বলা হয়, কোভিড মহামারির কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি।
তিন দশকে নতুন অনেক তারকার জন্ম দিয়েছে নতুন কুঁড়ি। অনেকে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, নাট্যাঙ্গন ও সংগীতজগতে নিজস্ব অবস্থান গড়ে তুলেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন তারানা হালিম, রুমানা রশিদ ঈশিতা, তারিন জাহান, মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ইমরোজ তিশাসহ আরও অনেকে। এ তালিকায় আছেন সামিনা চৌধুরীসহ অনেক জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীও।