ফুটবল মানেই নাটক, আর সেটি যদি হয় ব্রাজিলের দুই জায়ান্ট ক্লাবের মুখোমুখি লড়াই, তাহলে উত্তেজনা অনিবার্য। ক্লাব বিশ্বকাপে শনিবার রাতে ঠিক এমনই এক হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে বোতাফোগোকে অতিরিক্ত সময়ে ১-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে সাও পাওলোর ক্লাব পালমেইরাস।

দুই দলের মধ্যে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের বদলে ম্যাচটি ছিল ছন্দহীন ও প্রতিরোধমূলক। তাতে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৪৫ মিনিটেও গোলের দেখা পায় না কোনো দল। তাতে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেই গল্পের মোড় ঘুরে যায়। অতিরিক্ত সময়ের দশম মিনিটে বেঞ্চ থেকে উঠে আসা পাউলিনহো ডান প্রান্ত দিয়ে বল কাটিয়ে নিচু শটে বল জড়ান জালে। সেই মুহূর্তে বোতাফোগোর গোলরক্ষক জন ছিলেন কার্যত দর্শকের ভূমিকায়।

পালমেইরাস অধিনায়ক গুস্তাভো গোমেজ ১১৬ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। তাতে দশজনের দলে পরিণত হয় তারা। বোতাফোগো তখন মরিয়া হয়ে সমতায় ফিরতে চায়। কিন্তু ইগর জেসুস ও ভিতিনিওর প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পালমেইরাস।

আরো পড়ুন:

ক্লাব বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে কে কার প্রতিপক্ষ, দেখে নিন সময়সূচি

জুভেন্টাসকে উড়িয়ে শেষ ষোলোয় ম্যানসিটি

ম্যাচে মোট ১১টি হলুদ কার্ড ও একটি লাল কার্ড দেখান ফরাসি রেফারি ফ্রাঁসোয়া লেতেক্সিয়ে। যা ম্যাচটির উত্তেজনার প্রমাণ।

এই ম্যাচে পাউলিনহোর ফেরার গল্পটাও কম নয়। ইনজুরি থেকে ফিরে টানা দুটি ম্যাচে বদলি নেমে গোল করলেন তিনি। আগের ম্যাচে ইন্টার মায়ামির বিপক্ষে গোল করে দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন। এবার দিলেন কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট।

চমকপ্রদ পরিসংখ্যানও রয়েছে পালমেইরাসের নামে। এখন পর্যন্ত ক্লাব বিশ্বকাপে তাদের চার ম্যাচে তিনটি ক্লিন শিট! আর বদলি খেলোয়াড়দের করা গোল সংখ্যা চারটি! এই দুই ক্ষেত্রেই তারা সবার ওপরে।

এবার তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ইংলিশ ক্লাব চেলসি। কোয়ার্টার ফাইনালের এই লড়াই অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার (৪ জুলাই) ফিলাডেলফিয়ায়। অন্যদিকে বোতাফোগোর জন্য বিদায়ের সুর বাজল। তারা ফিরে যাচ্ছে ব্রাজিলে, ঘরোয়া মৌসুমের প্রস্তুতি নিতে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ক য় র ট র ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণে এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে সরকারের চুক্তি

লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এই চুক্তি করা হয়েছে।

আজ সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই পক্ষ এ চুক্তিতে সই করে। এতে ডেনমার্ক, বাংলাদেশ সরকার ও বন্দর সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা অংশ নেন।

চুক্তিতে সই করেন এপিএম টার্মিনালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টেইন ভ্যান ডোঙ্গেন ও চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

ডেনমার্কের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইবিএস এপিএম টার্মিনালসের হেড অব ইনভেস্টমেন্ট ভাস্কর সেনগুপ্ত, ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্ডলোসে হ্যানসেন ও বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) ও নৌপরিবহন সচিব নুরুন্নাহার চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনবলেন, ‘এই চুক্তি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতির জন্য বড় অবদান। যাঁদের মধ্যে এ নিয়ে সন্দেহ ছিল, আশা করি, আজ তা দূর হবে।’ তাঁর আরও আশা, এই ধারাবাহিকতায় মোংলা সমুদ্রবন্দর পরিচালনায়ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী বলেন, ‘লালদিয়া দেখিয়ে দিয়েছে—পিপিপি শুধু তত্ত্বে নয়, বাস্তবেও কার্যকর। ভবিষ্যতেও আমরা বাস্তবায়ন-কেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নেই মনোযোগ দেব।’ তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক বছরে চারটি নতুন সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে আছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ও একটি নির্ধারিত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল।

ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত পাঁচ দশকে দুই দেশের উন্নয়ন সহযোগিতার সফলতা দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্ক সহায়তা থেকে ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। মাথাপিছু হিসাবে ডেনমার্ক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্য পূরণে লালদিয়া প্রকল্প নতুন মাইলফলক।’

পরিবহন কোম্পানি মেয়ার্স্কের চেয়ারম্যান রবার্ট মেয়ার্স্ক উগলা বলেন, লালদিয়া হবে অত্যাধুনিক গ্রিনফিল্ড টার্মিনাল; সেখানে নিরাপত্তা, অটোমেশন ও স্থায়িত্বের সর্বোচ্চ মান থাকবে। এতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে লজিস্টিকস খাতের অগ্রযাত্রায় এটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ