এমবিএ ও এক্সিকিউটিভ এমবিএ

দেশে–বিদেশে এমবিএ ডিগ্রির চাহিদা তৈরি হয়েছে আরও বেশ কয়েক বছর আগেই। তাই ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ কিংবা ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধীনে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এমবিএ ও এক্সিকিউটিভ এমবিএর সুযোগ পাওয়া যায়। করপোরেট চাকরিজীবী থেকে শুরু করে প্রকৌশলীরাও এমবিএ ডিগ্রি নেন। কেননা, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা, বিপণন, নেতৃত্ব ও নানা ক্ষেত্রে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার সুযোগ থাকে। চাকরিদাতারা কেন এমবিএ ডিগ্রিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন? ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের সহকারী অধ্যাপক হানিফ মাহতাব বলেন, ‘ব্যাচেলরে সাধারণত সার্বিকভাবে পড়ানো হয়, কোনো একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে অ্যাডভান্সড নলেজটা হয় না। দেখা যায়, যাঁরা এমবিএ বা ইএমবিএ করতে আসেন, তাঁদের কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা থাকে। তখন তাঁদের পড়াতেও সুবিধা হয়। তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলিয়ে আরও গভীরে গিয়ে বিষয়গুলো বুঝতে পারেন। সে জন্যই চাকরিদাতারা অনেক সময় এমবিএ ডিগ্রিকে গুরুত্ব দেন। এ ছাড়া চাকরিতে একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছানোর পর পদোন্নতির জন্যও এই ডিগ্রির প্রয়োজন হতে পারে।’ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেছেন আফরিনা খান। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি সিটি কলেজ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইংরেজিতে স্নাতক করেছি। এরপরে প্রযুক্তি খাতে চাকরি শুরু করেছিলাম। ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় জানতে পরে এক্সিকিউটিভ এমবিএ ডিগ্রি নিই। এর ফলে আমার দক্ষতা অনেকটা বেড়েছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছি।’

প্রকৌশল ও প্রযুক্তির নানা দিক

একসময় শুধু তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল কিংবা কম্পিউটার প্রকৌশলের মতো বিষয়গুলোয় স্নাতকোত্তরের চল ছিল। এখন নানা বিশেষায়িত বিষয়েও শিক্ষার্থীরা মাস্টার্স ডিগ্রি নিচ্ছেন। তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি), ইনফরমেশন সিস্টেম সিকিউরিটি, সাইবার সিকিউরিটি, ডেটা সায়েন্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিংসহ নানা বিষয়ে শিক্ষার্থীরা পড়ছেন। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় চাকরিজীবীদের জন্য এক্সিকিউটিভ মাস্টার্সের সুযোগও রেখেছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও বিভাগের অধীনেও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বিভিন্ন ডিগ্রি নেওয়া যায়। বুয়েটের বিভিন্ন মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য সাধারণত দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগে।

আরও পড়ুন‘মাস্টার্সের আগে কমপক্ষে দুই বছর চাকরি করে আসতে পারলে ভালো’১০ ঘণ্টা আগেজনস্বাস্থ্য নিয়ে পড়াশোনা

বর্তমানে জনস্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের সুযোগ বেড়েছে। যাঁরা জনস্বাস্থ্য, মহামারিবিদ্যা ও স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে কাজ করছেন বা করতে চান, তাঁরা মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ (এমপিএইচ) প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারেন। চিকিৎসক, এনজিওর কর্মী ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পেশাজীবীরা আজকাল এই ডিগ্রি বেছে নিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে এমপিএইচ প্রোগ্রামে ভর্তির খরচ পড়তে পারে দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, মহামারি প্রতিরোধ ও শিশুস্বাস্থ্যের মতো বিভিন্ন বিশেষায়িত বিষয়ে পড়ানো হয় এমপিএইচে। গবেষণাসংশ্লিষ্ট কাজও করতে হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশাজীবীদের জন্যও রাখা হয়েছে আলাদা সুযোগ। একটি আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিজ্ঞানী শাহরিয়ার আহমেদ বলেন, ‘আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করি। জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে কাজের আগ্রহ ছিল বলেই মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। চিকিৎসাবিজ্ঞানের বাইরে দেশীয় স্বাস্থ্য খাত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয় জানার সুযোগ হয়েছে স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে মাস্টার্স করার সময়।’

উন্নয়ন অধ্যয়নে আগ্রহ অনেকের

উন্নয়ন অধ্যয়নের পরিধি এখন অনেক বড়। যাঁরা এনজিও, গবেষণা, জলবায়ু, জেন্ডার, পরিবেশ ইত্যাদি নিয়ে কাজ করেন বা করতে চান, তাঁরাই উন্নয়ন অধ্যয়নে আগ্রহী। মাস্টার অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এমডিএস) প্রোগ্রামটি যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়, প্রায় সব ক্ষেত্রেই এর পাঠ্যক্রমের সঙ্গে মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম ও গবেষণা যুক্ত। তাই হাতে–কলমে কাজের অভিজ্ঞতা হয় শিক্ষার্থীদের। এই খাতে নেটওয়ার্কিংয়েরও বড় সুযোগ মেলে এমডিএস ডিগ্রির মাধ্যমে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পরিচালিত একটি কার্যক্রমে ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বিবিএ শেষ করে আমি উন্নয়ন অধ্যয়নে মাস্টার্স ডিগ্রি নিই। উন্নয়ন খাতসংশ্লিষ্ট কাজের সুযোগ এখন অনেক বেশি। গবেষণাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ক্লাসে শিখেছি। উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হয়, কীভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করে, গবেষণা কীভাবে এসব কার্যক্রমে ভূমিকা রাখে, অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে।’

যোগাযোগ ও গণমাধ্যম

এই খাতেও মাস্টার্সের সুযোগ এখন অনেক বিস্তৃত। মাস্টার্স ইন জার্নালিজম অ্যান্ড ম্যাস কমিউনিকেশন, এমএ ইন গ্রাফিক ডিজাইন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া, মাস্টার্স ইন মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন, এমন নানা প্রোগ্রাম দেশে চালু আছে। শুধু সাংবাদিকতা বা জনসংযোগ-সংক্রান্ত পেশাজীবীদের জন্যই নয়, করপোরেট খাতেও যোগাযোগসংক্রান্ত ডিগ্রির গুরুত্ব বেড়েছে। ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন থেকে শুরু করে ডিজিটাল মিডিয়া কিংবা গ্রাফিক ডিজাইন, কমিউনিকেশন স্ট্র্যাটেজিসহ নানা বিষয়ে বিশেষায়িত জ্ঞানার্জন করা যায় যোগাযোগ–সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মাস্টার্স প্রোগ্রামে।

আরও পড়ুনব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামগুলো আলাদা কেন৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এমব এ ড গ র জনস ব স থ য ক জ কর পর য য় অন ক ব র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

অসুস্থ রাজিবের খোঁজখবর নিলেন বিএনপির দুই এমপি প্রার্থী মাসুদুজ্জামান ও মান্নান

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত অসুস্থ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা মাশুকুল ইসলাম রাজিবের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান। 

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের মিশনপাড়াস্থ বিএনপি নেতা মাশুকুল ইসলাম রাজিবের বাসভবনে গিয়ে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন তারা। এবং সুস্থতার জন্য দোয়া করেন। 

এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন,  নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন,মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুব উল্লাহ তপন, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম আপন, হাবিবুর রহমান মাসুদসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অসুস্থ রাজিবের খোঁজখবর নিলেন বিএনপির দুই এমপি প্রার্থী মাসুদুজ্জামান ও মান্নান