আলোচিত কয়েকটি মাস্টার্স প্রোগ্রামের খোঁজখবর
Published: 29th, June 2025 GMT
এমবিএ ও এক্সিকিউটিভ এমবিএ
দেশে–বিদেশে এমবিএ ডিগ্রির চাহিদা তৈরি হয়েছে আরও বেশ কয়েক বছর আগেই। তাই ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ কিংবা ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধীনে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এমবিএ ও এক্সিকিউটিভ এমবিএর সুযোগ পাওয়া যায়। করপোরেট চাকরিজীবী থেকে শুরু করে প্রকৌশলীরাও এমবিএ ডিগ্রি নেন। কেননা, এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা, বিপণন, নেতৃত্ব ও নানা ক্ষেত্রে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার সুযোগ থাকে। চাকরিদাতারা কেন এমবিএ ডিগ্রিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন? ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের সহকারী অধ্যাপক হানিফ মাহতাব বলেন, ‘ব্যাচেলরে সাধারণত সার্বিকভাবে পড়ানো হয়, কোনো একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে অ্যাডভান্সড নলেজটা হয় না। দেখা যায়, যাঁরা এমবিএ বা ইএমবিএ করতে আসেন, তাঁদের কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা থাকে। তখন তাঁদের পড়াতেও সুবিধা হয়। তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলিয়ে আরও গভীরে গিয়ে বিষয়গুলো বুঝতে পারেন। সে জন্যই চাকরিদাতারা অনেক সময় এমবিএ ডিগ্রিকে গুরুত্ব দেন। এ ছাড়া চাকরিতে একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছানোর পর পদোন্নতির জন্যও এই ডিগ্রির প্রয়োজন হতে পারে।’ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেছেন আফরিনা খান। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি সিটি কলেজ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইংরেজিতে স্নাতক করেছি। এরপরে প্রযুক্তি খাতে চাকরি শুরু করেছিলাম। ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় জানতে পরে এক্সিকিউটিভ এমবিএ ডিগ্রি নিই। এর ফলে আমার দক্ষতা অনেকটা বেড়েছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছি।’
প্রকৌশল ও প্রযুক্তির নানা দিকএকসময় শুধু তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল কিংবা কম্পিউটার প্রকৌশলের মতো বিষয়গুলোয় স্নাতকোত্তরের চল ছিল। এখন নানা বিশেষায়িত বিষয়েও শিক্ষার্থীরা মাস্টার্স ডিগ্রি নিচ্ছেন। তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি), ইনফরমেশন সিস্টেম সিকিউরিটি, সাইবার সিকিউরিটি, ডেটা সায়েন্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিংসহ নানা বিষয়ে শিক্ষার্থীরা পড়ছেন। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় চাকরিজীবীদের জন্য এক্সিকিউটিভ মাস্টার্সের সুযোগও রেখেছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও বিভাগের অধীনেও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বিভিন্ন ডিগ্রি নেওয়া যায়। বুয়েটের বিভিন্ন মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য সাধারণত দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগে।
আরও পড়ুন‘মাস্টার্সের আগে কমপক্ষে দুই বছর চাকরি করে আসতে পারলে ভালো’১০ ঘণ্টা আগেজনস্বাস্থ্য নিয়ে পড়াশোনাবর্তমানে জনস্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের সুযোগ বেড়েছে। যাঁরা জনস্বাস্থ্য, মহামারিবিদ্যা ও স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে কাজ করছেন বা করতে চান, তাঁরা মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ (এমপিএইচ) প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারেন। চিকিৎসক, এনজিওর কর্মী ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পেশাজীবীরা আজকাল এই ডিগ্রি বেছে নিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে এমপিএইচ প্রোগ্রামে ভর্তির খরচ পড়তে পারে দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, মহামারি প্রতিরোধ ও শিশুস্বাস্থ্যের মতো বিভিন্ন বিশেষায়িত বিষয়ে পড়ানো হয় এমপিএইচে। গবেষণাসংশ্লিষ্ট কাজও করতে হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশাজীবীদের জন্যও রাখা হয়েছে আলাদা সুযোগ। একটি আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিজ্ঞানী শাহরিয়ার আহমেদ বলেন, ‘আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করি। জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে কাজের আগ্রহ ছিল বলেই মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। চিকিৎসাবিজ্ঞানের বাইরে দেশীয় স্বাস্থ্য খাত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয় জানার সুযোগ হয়েছে স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে মাস্টার্স করার সময়।’
উন্নয়ন অধ্যয়নে আগ্রহ অনেকেরউন্নয়ন অধ্যয়নের পরিধি এখন অনেক বড়। যাঁরা এনজিও, গবেষণা, জলবায়ু, জেন্ডার, পরিবেশ ইত্যাদি নিয়ে কাজ করেন বা করতে চান, তাঁরাই উন্নয়ন অধ্যয়নে আগ্রহী। মাস্টার অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এমডিএস) প্রোগ্রামটি যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়, প্রায় সব ক্ষেত্রেই এর পাঠ্যক্রমের সঙ্গে মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম ও গবেষণা যুক্ত। তাই হাতে–কলমে কাজের অভিজ্ঞতা হয় শিক্ষার্থীদের। এই খাতে নেটওয়ার্কিংয়েরও বড় সুযোগ মেলে এমডিএস ডিগ্রির মাধ্যমে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পরিচালিত একটি কার্যক্রমে ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বিবিএ শেষ করে আমি উন্নয়ন অধ্যয়নে মাস্টার্স ডিগ্রি নিই। উন্নয়ন খাতসংশ্লিষ্ট কাজের সুযোগ এখন অনেক বেশি। গবেষণাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ক্লাসে শিখেছি। উন্নয়ন সংস্থার কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হয়, কীভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করে, গবেষণা কীভাবে এসব কার্যক্রমে ভূমিকা রাখে, অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে।’
যোগাযোগ ও গণমাধ্যমএই খাতেও মাস্টার্সের সুযোগ এখন অনেক বিস্তৃত। মাস্টার্স ইন জার্নালিজম অ্যান্ড ম্যাস কমিউনিকেশন, এমএ ইন গ্রাফিক ডিজাইন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া, মাস্টার্স ইন মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন, এমন নানা প্রোগ্রাম দেশে চালু আছে। শুধু সাংবাদিকতা বা জনসংযোগ-সংক্রান্ত পেশাজীবীদের জন্যই নয়, করপোরেট খাতেও যোগাযোগসংক্রান্ত ডিগ্রির গুরুত্ব বেড়েছে। ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন থেকে শুরু করে ডিজিটাল মিডিয়া কিংবা গ্রাফিক ডিজাইন, কমিউনিকেশন স্ট্র্যাটেজিসহ নানা বিষয়ে বিশেষায়িত জ্ঞানার্জন করা যায় যোগাযোগ–সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মাস্টার্স প্রোগ্রামে।
আরও পড়ুনব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামগুলো আলাদা কেন৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এমব এ ড গ র জনস ব স থ য ক জ কর পর য য় অন ক ব র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
কানাডার টিকিট না পাওয়ায় ৯ জনের নাম দিয়ে ৩ জন পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ
১৭ থেকে ২৪ আগস্ট কানাডার উইনিপেগে অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড আর্চারি ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে দেশ ছেড়েছেন বাংলাদেশের ৩ আর্চার। যদিও ৯ খেলোয়াড়ের নাম নিবন্ধন করেছিল আর্চারি ফেডারেশন। সঙ্গে দুই কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ ও নূরে আলম।
শেষ পর্যন্ত তিনজনের রিকার্ভ পুরুষ দল আজ রাত ৯টা ২০ মিনিটে কানাডার বিমান ধরেছে। দলে আছেন আবদুর রহমান আলিফ, সাগর ইসলাম ও রাকিব মিয়া। সঙ্গে কোচ ফ্রেডরিখ।
কানাডার টিকিট না পাওয়ায় অন্যদের পাঠানো যায়নি, সে জন্যই নয়জনের দল তিনে নামিয়ে আনা হয়েছে। আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে এমনটাই বলেছেন, ‘হ্যাঁ, দল ছোট করেছি, অনেক ব্যয়বহুলও। তার চেয়ে বড় কথা, কানাডার টিকিটের অনেক ক্রাইসিস ছিল। অনেক কষ্টে চারটা জোগাড় করেছি।’
এবারের দলে থাকা তিন আর্চারের মধ্যে আলিফ ও সাগর দুজনের কেউই আগে ওয়ার্ল্ড আর্চারি ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেননি। আর সে কারণেই ওয়ার্ল্ড আর্চারি ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপটাকে বিশেষ কিছুই মনে হচ্ছে সাগর-আলিফের কাছে।
আরও পড়ুনকরতেন পাখি শিকার, এখন তিনি ‘এশিয়া সেরা’ তিরন্দাজ২৩ জুন ২০২৫প্যারিস অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা সাগর বলেন, ‘এটা আমার প্রথম আসর বলে একটু অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে। চেষ্টা থাকবে ভালো কিছু করার। যদিও এটা কঠিন টুর্নামেন্ট। তারপরও অনুশীলনে আগের চেয়ে স্কোরে উন্নতি হওয়ায় আমি আশাবাদী।’
এশিয়া কাপ আর্চারির দ্বিতীয় লেগে পুরুষদের রিকার্ভ ব্যক্তিগত ইভেন্টে গত জুনে সোনা জিতেছেন আলিফ। সেই উচ্ছ্বাস নিয়েই ১৯ বছর বয়সী আর্চার বলেন, ‘কদিন আগে সোনা জিতলাম। আসলে সব টুর্নামেন্টেই সোনা জেতার লক্ষ্য থাকে।’
২০২১ সালে পোল্যান্ডে এবং ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডে হওয়া এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেননি বাংলাদেশের কোনো আর্চার। তার আগে ২০১৯ সালে স্পেনের মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত আসরে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছিলেন ৮ জন আর্চার—হাকিম আহমেদ, ইতি খাতুন, সাকিব মোল্লা, তামিমুল ইসলাম, দিয়া সিদ্দিকী, প্রদীপ্ত চাকমা, মেহনাজ আক্তার ও ঐশ্বর্য রহমান।
আরও পড়ুনরোমান-দিয়ারা কেন দেশ ছেড়ে যান০৪ জানুয়ারি ২০২৫