মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে একাত্ম হতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান রাখব, জনগণের মতামতকে বুঝে জনগণের প্রত্যাশার জায়গাকে বুঝে এবং বাংলাদেশে যাতে আর কখনো কোনোভাবেই কোনো স্বৈরাতান্ত্রিক শাসনকাঠামো প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে, সে জন্য মৌলিক সংস্কারের পক্ষে তারা যেন একাত্ম হন।’

আজ রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ আহ্বান জানান আখতার হোসেন। সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে এদিন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের সপ্তম দিনের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচ্যসূচির মধ্যে ছিল সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট, উচ্চকক্ষের নির্বাচনপ্রক্রিয়া এবং উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা।

বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের কারণে মৌলিক সংস্কার আটকে আছে বলে অভিযোগ করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের রক্তের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে, সেখানে নতুন করে কোনো একটি সরকার এসে নির্বাচন কমিশন, দুদক, পিএসসিসহ অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে যাচ্ছেতাইভাবে ব্যবহার করতে পারবে, এসব প্রতিষ্ঠানে মর্জিমতো দলান্ধ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেবে, ইচ্ছেমতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাবহার করবে, বিরোধী মতকে দমন করবে, সরকারের জবাবদিহির জায়গাকে নিশ্চিত হতে দেবে না—এমন পরিস্থিতি যারা তৈরি করতে চাচ্ছে, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের আপামর জনতার কোনো সংযোগ নেই, তাদের সঙ্গে আপামর জনতা কোনোভাবে একাত্ম হতে পারে না।’

সংস্কারের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি সবচেয়ে বেশি আন্তরিক বলে উল্লেখ করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘জনগণের বৃহত্তর অংশ এই রুমের বাইরে অপেক্ষা করছে। তারা দেখছে কোন দল মৌলিক সংস্কার চাচ্ছে অথবা চাচ্ছে না।’

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সংস্কার নিয়ে দর–কষাকষি হচ্ছে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘রোববারের আলোচনায়ও মৌলিক সংস্কারের বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে থাকতে হয়েছে। সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির আলোচনায় বিএনপি ও গুটিকয় দলের বাধার কারণে ঐকমত্য গঠন করা সম্ভবপর হচ্ছে না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন ঐকমত য আহ ব ন এক ত ম

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট ভবিষ্যতে সংকট তৈরি করবে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন অর্থাৎ নিরপেক্ষ সরকার। তারা অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়। তবে, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল একে আরো জটিল করে দিল পিআর পদ্ধতি, তারপরে গণভোট আগে বলে। এখন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, গণভোটের কোনো আইনি ভিত্তি নেই। সেটার যদি আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে কিন্তু এটা ভবিষ্যতে সংকট তৈরি করবে।” 

রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর পক্ষ থেকে পটুয়াখালী সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নে গনি জমাদ্দার ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগমকে আর্থিক সহায়তা হস্তান্তর শেষে বিঘাই হাই স্কুল সংলগ্ন মাঠে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

এবার দিনের ভোট রাতে হবে না: আমির হামজা

দুর্নীতিতে ৩ বার চ্যাম্পিয়ন দলকে জনগণ আর ভোট দেবে না: তাহের

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ইউনূস সাহেবের সরকার জুলাই অভ্যুত্থান, আন্দোলন ও বিপ্লবের সরকার। এই সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের। আমরা এখনো সমর্থন প্রত্যাহার করিনি বরং এখনো আস্থা রাখি। কিন্তু, আস্থার জায়গাটি দুর্বল করায় নিশ্চয়ই আস্থা নেই অন্তর্বর্তী সরকারের। 

তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন যে, বিদ্যুতের জন্য চুক্তি করেছিল শেখ হাসিনা ভারতের প্রাইভেট কোম্পানি আদানির সাথে। সেটা শেখ হাসিনা দেশের স্বার্থে করেনি, জনগণের স্বার্থে করেনি। সেটা করেছে ওই বিদ্যুৎ কোম্পানির স্বার্থে। কারণ, ভারতের একটি কোম্পানির সাথে যদি তিনি দেশের স্বার্থ নষ্ট করে চুক্তি করেন তাহলে ভারত শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখবে। পৃথিবীতে একমাত্র শেখ হাসিনা এই কাজটি করেছেন। নদীবন্দর সমুদ্রবন্দর যদি ক্রমান্বয়ে বিদেশিদের হাতে যেতে থাকে, তাহলেও তো একটা নিরাপত্তার প্রশ্ন, তাহলেও তো এটি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। ড. ইউনূসকে তো অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে, শেখ হাসিনা যা যা করেছেন তা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে করেছেন। যার কারণে মানুষ মনে করেছে, একটা সময় তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। বাংলাদেশের জনগণের যে টাকা আমানত রাখা হয়, সেই ব্যাংকগুলোকে হরিলুট করার জন্য তিনি কাজ করেছেন। সেটার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেটা ড. ইউনূস সাহেবকে দেখতে হবে। বিদেশিদের সাথে চুক্তির ক্ষেত্রে দেশের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে। 

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, জুলাই সনদ হয়েছে। এর ৮৪টি ধারা কয়জন মানুষ জানে। মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে জানতে চায় যে, আমার খাদ্য সরবরাহ ঠিক আছে কি না, চালের দাম কমল কি না, আলুর দাম কমল কি না। আলু ৮০ টাকা হয়ে যায়, এখন পঞ্চগড়ের দিকে আলু বিক্রিই করতে পারছে না। কৃষকের উৎপাদনে যে খরচ হয়েছে, সেই উৎপাদন খরচই তুলতে পারছে না। এজন্য সমন্বিত পলিসি থাকলে কৃষকরা এভাবে মাটির সাথে মিশে যেত না। সত্যিকারের জনবান্ধব সরকারের এটি একটি নীতি এবং নমুনা যে, তারা কৃষককে বাঁচাবে, শ্রমিককে বাঁচাবে, নিম্নআয়ের মানুষকে বাঁচাবে, ক্ষুধার্ত মানুষকে বাঁচাবে।  

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন— আমরা বিএনপি পরিবারে আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমান, যুগ্ম আহ্বায়ক পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার কুট্টি ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটনসহ বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

কয়েকদিন আগে একটি অনলাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয় যে, সাত দিন ধরে না খেয়ে আছেন মো. গনি জমাদ্দার (৭০) ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম (৫০)। বিষয়টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নজরে আসলে তিনি আমরা বিএনপি পরিবারের নেতাকর্মীদেকের ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন। বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে সহায়তা পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গনি ও মমতাজ।

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়েতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা
  • ইকুয়েডরে গণভোটে ‘না’ এগিয়ে, বিদেশি সামরিক ঘাঁটিতে সায় নেই মানুষের
  • সফল নির্বাচন হলে গণতান্ত্রিক উত্তরণের অর্ধেকপথ পার করা সম্ভব হবে: মান্না
  • ককটেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করলে গুলির নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের
  • ‘বিহারে ভোট কিনতে ব্যবহার হয়েছে বিশ্বব্যাংকের ১৪ হাজার কোটি রুপি’
  • গণভোট ভবিষ্যতে সংকট তৈরি করবে: রিজভী
  • কী হবে যদি গণভোটে ‘না’ জয়ী হয়
  • প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ জাতির সঙ্গে প্রতারণা: বাম জোট
  • ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি রুখতে বামপন্থি সরকার গড়তে হবে: সেলিম
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে কোন দলের দাবি কতটা রাখা হলো