ব্যাগে গুলির ম্যাগাজিন, উপদেষ্টা আসিফ বললেন ভুলবশত
Published: 30th, June 2025 GMT
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্যানিংয়ের সময় ব্যাগে অস্ত্রের গুলি রাখার ম্যাগাজিন পাওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটি ম্যাগাজিন বাসায় রেখে এলেও ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগে থেকে যায়।’
‘ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে’ অংশ নিতে মরক্কোর মারাকেশে যাওয়ার সময়ে গতকাল রোববার সকালে বিমানবন্দরে স্ক্যানিংয়ের সময় উপদেষ্টার ব্যাগে ম্যাগাজিনের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এর ব্যাখ্যায় আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপরে যেভাবে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে কয়েক দফা, তাতে রাখাটাই স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।’
বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলেছেন, শনাক্ত হওয়ার পর উপদেষ্টা জানান, ভুলবশত এটি সেখানে রেখে দেওয়া হয়েছিল। উপদেষ্টা দুঃখ প্রকাশ করেন এবং পরে ম্যাগাজিনটি তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তার মাধ্যমে বিমানবন্দরের বাইরে পাঠিয়ে দেন।
আগ্নেয়াস্ত্রের নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ বছরের বেশি বয়সী এবং আগের তিন অর্থবছরে এক থেকে তিন লাখ আয়কর পরিশোধকারী ব্যক্তিই লাইসেন্স পেতে পারেন। এ নিয়মের ফলে ২৭ বছরের আসিফ কীভাবে লাইসেন্স পেয়েছেন– এ প্রশ্ন ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যদিও নীতিমালায় বলা হয়েছে, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সমমর্যাদার ব্যক্তির জন্য আয়করের শর্ত প্রযোজ্য নয়। ৩২(২) ধারা অনুযায়ী, মন্ত্রী পদমর্যাদার ব্যক্তিদের জন্য উপদেষ্টার পদ মন্ত্রী মর্যাদার হওয়ায় আসিফের লাইসেন্স পেতে বাধা নেই।
বিমানবন্দরে গুলি-অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ। তার পরও ব্যাগে ম্যাগাজিন ব্যাখায় আসিফ লিখেছেন, ‘বিষয়টি সম্পূর্ণ আনইন্টেনশনাল। শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কী করব ভাই? ইন্টেনশন থাকলে অবশ্যই অস্ত্র রেখে আসতাম না।’
আসিফ মাহমুদের ব্যাগের গুলি ম্যাগাজিন পাওয়ার খবর রোববার একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়। কিছুক্ষণ পর ব্যাখ্যা ছাড়াই এ খবর সরিয়ে নেওয়া হয়। চাপ দিয়ে সংবাদ সরানোর অভিযোগ নাকচ করেছে করেছেন উপদেষ্টা। তিনি লিখেছেন, ‘এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমেও দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখতে পাচ্ছি, যে এত কিছু ঘটেছে। নাগরিক হিসেবে আপনারও যদি নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে, যথাযথ নিয়ম ফলো করে আপনিও অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারেন।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট উপদ ষ ট মন ত র র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রী-ছেলেসহ দুদকের মামলায় আসামি রাজশাহীর আ.লীগ নেতা বেন্টু
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজশাহী মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু এবং তার স্ত্রী-ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রবিবার (২৯ জুন) সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি হয়। মামলার বাদী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার প্রধান আসামি আজিজুল আলম বেন্টু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ
আবু সাঈদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৮ পুলিশ স্বপদে, উত্তাল বেরোবি
বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তার স্ত্রী নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিন (২৯)। দুদকের মামলায় তাদেরও আসামি করা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, আজিজুল আলম বেন্টু, তার স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিল মূলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমি পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাদের মোট ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। অথচ সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেন। ফলে তার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়।
অপরদিকে, অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিনী হলেও তার নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। তার টিআইএন নম্বর- ৫৮৫৬৫৯৪৭৫১৯৬। নাসিমা আলমের ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকা। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে।
ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তার নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে। তার টিআইএন নম্বর-৫৯২৮১৫৩২০৬০৩। ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। অনুসন্ধানকালে তার আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তার স্ত্রী এবং ছেলেকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা দিয়েছেন।
দুদক বলছে, নাসিমা আলম তার স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তার বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তারাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় আজিজুল আলম বেন্টু ছাড়াও স্ত্রী ও ছেলেকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, মামলটি দায়েরর পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ