গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির উদ্যোগে কাজ করছে মিশর
Published: 30th, June 2025 GMT
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে কাজ করছে মিশর। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলআত্তি জানিয়েছেন, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং অবরুদ্ধ গাজায় দ্রুত ত্রাণ সরবরাহের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এই চুক্তিতে। খবর আনাদোলুর।
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্থানীয় সময় রবিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় অনটিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা একটি স্থায়ী সমাধান এবং টেকসই যুদ্ধবিরতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি জানান, এই প্রস্তাবটি মিশর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ উদ্যোগের ফল এবং এটিকে একটি ‘প্রথম পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রূপ নিতে পারে।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা ৫৬,৫০০ ছুঁয়েছে
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরো ৮১ ফিলিস্তিনি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে আলোচনার টেবিলে যা রয়েছে তা হলো- ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, যার বিনিময়ে কিছু সংখ্যক ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং চিকিৎসা সরঞ্জামসহ গাজায় দ্রুত মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।”
তিনি আরো বলেন, “এই পদক্ষেপটি একটি টেকসই যুদ্ধবিরতির দিকে অগ্রসর হওয়ার গতি তৈরি করবে এবং শেষ পর্যন্ত ১৯ জানুয়ারি চুক্তির বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।”
আবদেলআত্তি বলেন, “যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য আসন্ন যেকোনো চুক্তিতে গ্যারান্টি অন্তর্ভুক্ত করার গুরুত্ব সম্পর্কে একটি আমেরিকান দৃষ্টিভঙ্গি ও বোধগম্যতা রয়েছে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, “(ইসরায়েলি) আগ্রাসন পুনরায় শুরু হলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি তৈরি হবে।”
এর আগে, গত ১৯ জানুয়ারি মিশর, কাতার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে তিন-ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যামূলক যুদ্ধের অবসান ঘটানো।
তবে ১৮ মার্চ ইসরায়েল গাজায় পুনরায় হামলা শুরু করার পর চুক্তিটি ভেঙে যায়।
যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজার বিরুদ্ধে নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৫৬,৫০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট রমন ত র ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণে এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে সরকারের চুক্তি
লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এই চুক্তি করা হয়েছে।
আজ সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই পক্ষ এ চুক্তিতে সই করে। এতে ডেনমার্ক, বাংলাদেশ সরকার ও বন্দর সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা অংশ নেন।
চুক্তিতে সই করেন এপিএম টার্মিনালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টেইন ভ্যান ডোঙ্গেন ও চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
ডেনমার্কের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইবিএস এপিএম টার্মিনালসের হেড অব ইনভেস্টমেন্ট ভাস্কর সেনগুপ্ত, ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্ডলোসে হ্যানসেন ও বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) ও নৌপরিবহন সচিব নুরুন্নাহার চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনবলেন, ‘এই চুক্তি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতির জন্য বড় অবদান। যাঁদের মধ্যে এ নিয়ে সন্দেহ ছিল, আশা করি, আজ তা দূর হবে।’ তাঁর আরও আশা, এই ধারাবাহিকতায় মোংলা সমুদ্রবন্দর পরিচালনায়ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী বলেন, ‘লালদিয়া দেখিয়ে দিয়েছে—পিপিপি শুধু তত্ত্বে নয়, বাস্তবেও কার্যকর। ভবিষ্যতেও আমরা বাস্তবায়ন-কেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নেই মনোযোগ দেব।’ তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক বছরে চারটি নতুন সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে আছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ও একটি নির্ধারিত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত পাঁচ দশকে দুই দেশের উন্নয়ন সহযোগিতার সফলতা দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্ক সহায়তা থেকে ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। মাথাপিছু হিসাবে ডেনমার্ক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্য পূরণে লালদিয়া প্রকল্প নতুন মাইলফলক।’
পরিবহন কোম্পানি মেয়ার্স্কের চেয়ারম্যান রবার্ট মেয়ার্স্ক উগলা বলেন, লালদিয়া হবে অত্যাধুনিক গ্রিনফিল্ড টার্মিনাল; সেখানে নিরাপত্তা, অটোমেশন ও স্থায়িত্বের সর্বোচ্চ মান থাকবে। এতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে লজিস্টিকস খাতের অগ্রযাত্রায় এটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে থাকবে।